তারেক জিয়া'র বৃটিশী বুদ্ধি এবং আওয়ামীলীগের বাইজি নাচ
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:০৩:৪৯ রাত
ছোটকালে পাড়া প্রতিবেশী বয়স্কদের মুখে একটি কথা প্রায়ই শুনতাম,কেও যখন একটু বুদ্ধির কোন কাজ করতো তখন বয়স্করা বলতেন ছেলেটা বৃটিশী বুদ্ধি পেয়েছে। বুদ্ধিটা কিন্তু আবার ভালো বুদ্ধি না,কু-বুদ্ধি। গ্রামের যে মানুষটি নানা রকম ফন্দি ফিকিরের মাধ্যমে অন্যকে পঠাতে পারতো, একটা না একটা সমস্যা গ্রামে লাগিয়ে রাখতো, আবার সমাধানের জন্য তার দৌড়ঝাপ শুরু হত, একেক জনকে একেক শয়তানি বুদ্ধি দিত,তাকে সবাই বৃটিশ বলে ডাকতো।
কেন বৃটিশ বলে ডাকা হত একটু জেনে নেই। বৃটিশরা সত্যিকার অর্থেই খুবই বুদ্ধিমান জাতি। বুদ্ধি বলি আর কু-বুদ্ধি বলি তারা তাদের সেই বুদ্ধি দিয়ে দুনিয়ার অন্য জাতিদের শাসন করতো,পরাধীন করে রাখতো। পরাধীন করার ক্ষেত্রে তাদের বুদ্ধি ছিলো খুবই যুৎসই। যেমনি করেছে আমাদের ভারতবর্ষে।বাণিজ্যের নামে ভারতে ঢুকে ভারতবর্ষকে করেছে তাদের অধীন, শাসন করেছে দু'শ বছর। দাংগা হাংগামা লাগিয়ে রেখেছে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে। কোথাও দিয়েছে হিন্দুদের আশ্রয়, আবার কোথাও দিয়েছে মুসলমানদের। যখন যেখানে যেভাবে যাদের কাজে লাগানো দরকার লাগিয়েছে।
আজকের বাংলাদেশ বলা যায় তাদের কু-বুদ্ধির ফসল। তারা ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় যদি আজকের বাংলাদেশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিশ পাকিস্তানের সাথে জুড়ে না দিত তাহলে আমাদের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লিখা হত। দুইটা দেশ করলো , একটা হিন্দুস্তান আর আরেকটা পাকিস্তান। পাকিস্তানের ভূ-খন্ডকে করে দিলো দ্বি-খন্ডিত। একটা দেশের উপর দিয়ে যাওয়া আসা করে এক অঞ্চল অপর অঞ্চলকে শাসন করবে তা কি করে সম্ভব। শেষ পর্যন্ত যা হবার তাই হলো। দু ভূ-খন্ডের মুসলমানরা একে অপরের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লো। অনেক রক্তের বিনিময়ে একটা দেশ স্বাধীন হলো। যার কারনে আমাদের বাপ দাদারা বৃটিশদের বুদ্ধিকে ভালো চোঁখে দেখেন না। বৃটিশ বুদ্ধি মানেই কু-বুদ্ধি।
তারেক জিয়া সেই কু-বুদ্ধি চালছেন কি না জানিনা। তবে তারেক জিয়া বর্তমান সময়ে খুব বুদ্ধির পরিচয় দিচ্ছেন এটা বলতে পারি।যেভাবে আওয়ামীলীগ সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে টানাহেছড়া করছে,তার লাগাম ঠেনে ধরা দরকার ছিলো। আর সেই কাজটি দেরীতে হলেও তারেক জিয়া শুরু করেছেন। স্বভাবতই আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছে, তারেক জিয়া কি বৃটিশে থেকে এই বুদ্ধি অর্জন করছেন ? হতে পারে।
তারেক জিয়া কে এই পথ ধরে এগুতে হবে আরো অনেকটা পথ। আরো অনেক অজানা কাহিনী তুলে ধরতে হবে জাতির সামনে। যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আওয়ামীলীগ ব্যবসা করে সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামীলীগের কোন নেতা কোথায় কি করেছেন তা নাম ধরে ধরে জাতির সামনে পরিস্কার করতে হবে। ভারতের কোন কোন হোটেলে থেকে বেশ্যাদের টানাটানিতে কাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো সেই ইতিহাস মানুষদের জানাতে হবে।মদ,গাজা আর নারীদের নিয়ে কারা ভারতে রংগমঞ্চ বানিয়েছিলো তার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। কিভাবে হিন্দুদের বাড়িঘর দখল করেছে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা তারও পরিসংখ্যান সরজমিন ভিডিও ফুটেজ দিয়ে জাতিকে জানানো দরকার বৈকি।ভারতের কাছ থেকে কোন নেতা কিভাবে কত টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশীদের সাথে বেইমানি করেছেন,করেছেন ভারতের দালালী তাদের নাম ও হিসাব জাতিকে বলা দরকার।
এই কাজ গুলো তারেক জিয়াকে করতে হবে। আর বি এন পি ও তার অংগ সংগঠনের প্রতিটি নেতা কর্মী ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি কানে এই বার্তা পৌছিয়ে দিতে হবে যে আসল সত্য কোনটি।
তাহলেই বন্ধ করা যাবে আওয়ামীলীগের ৭১ এর চেতনা ব্যবসা।বন্ধ হবে জিয়াকে পাকিস্তানের চর বলা।বন্ধ হবে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অসভ্য কথা বলার হিড়িক,বন্ধ হবে তার শাড়ি ব্লাউজ নিয়ে টানাটানি।লোহা পেটাতে হাতুড়ির প্রয়োজন তা কালে কালে পরীক্ষিত। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট এই একটি কথাতেই আওয়ামীলীগ বলতে বাধ্য হয়েছে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক না হয় মেনে নেয়া গেলো কিন্তু প্রেসিডেন্ট নয়। আওয়ামীলীগের পরবর্তী বাইজি নাচতো আমরা সবাই দেখতেছি। সম্প্রতি লন্ডনের ওয়েস্ট মিন্সটারের সেন্ট্রাল হলে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথম 'অবৈধ প্রধানমন্ত্রী' বলে উল্লেখ করেন তারেক জিয়া। ওই অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন তার কথার সত্যতা। আর তারপরই শুরু হয়েছে এই বাইজি নাচ। বাইজি নাচ এই জন্য বলছি, ওয়েস্ট মিন্সটারের সেন্ট্রাল হলের ঐ বক্তব্যের পর আমরা আশা করেছিলাম,সারা বাংলাদেশের মানুষ হয়তো আশা করেছিলো আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে কোন যৌক্তিক জবাব আসবে।যার মাধ্যমে আমরা নতুন সৃষ্টি হওয়া ইতিহাসের সত্যতা জানতে পারবো। কিন্তু আমরা হতাশ হয়েছি, আওয়ামীলীগ হয়েছে ব্যর্থ।
ঐ বক্তব্যের পর আওয়ামীলীগের নেতারা তাদের অতীত চরিত্রের মত অযথা গালাগালি আর ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। কে কাকে স্যার বলে ডেকে ডেকে মুখের লালা ফেলেছে,তারেক জিয়ার বয়স কত, তারেক জিয়া অশিক্ষিত-মুর্খ ইত্যাদির মাধ্যেমে চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী নোংরা কথাবার্তা বলেই চলেছেন। কেও কেও আবার হামলা-মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। আবার অনেক ফেসবুকে স্টেটাস দিয়ে তারেকের চৌদ্ধ গোষ্টি উদ্ধার করছেন। কারো বক্তব্যে বা লেখায় তারেকের কথার কোন জবাব নেই। কিন্তু কেন ? তাহলে আমরা কি ধরে নেব তারেকের কথাই সঠিক। আওয়ামীলীগের কাছে কি কোন যৌক্তিক জবাব নেই?
বিষয়: রাজনীতি
২৭৭৩ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লাগাম মনে হয় দিতে পেরেছেন তারেক আওয়ামীলীগের মুখে লাগামের একটা অন্যতম মাধ্যম হতে পারে তার সাম্প্রতিক এই বক্তব্য।
বাহ এইতো লাইনে আইছে.
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমরা ভালো করেই বুঝতে পারছি
'মুজিব মানে স্বাধীনতা' এই কথা সম্পুর্ন ভুল।
"যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আওয়ামীলীগ ব্যবসা করে সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামীলীগের কোন নেতা কোথায় কি করেছেন তা নাম ধরে ধরে জাতির সামনে পরিস্কার করতে হবে। ভারতের কোন কোন হোটেলে থেকে বেশ্যাদের টানাটানিতে কাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো সেই ইতিহাস মানুষদের জানাতে হবে।মদ,গাজা আর নারীদের নিয়ে কারা ভারতে রংগমঞ্চ বানিয়েছিলো তার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।"
আপনার উপরোক্ত বক্তব্য স্পষ্ট করার অনুরোধ করছি। এ বিষয়গুলো আমার কাছে একদম নতুন। আশা করি তথ্য প্রমান দিয়ে বিষয়টি খোলাসা করবেন।
আওয়ামীলীগ এর এখন ছেঁড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
যুক্তি, ইতিহাস, রেফারেন্স এর বিপরীতে অশ্লীল খিস্তিখেউড়ই তাদের ভরসা।
লেখকের রাজনৈতিক পরিচয় জানি ভালো, এই পরিচয়ের অনেক উর্দ্ধে উঠে তিনি আমার বন্ধু, কেমন বন্ধু একটি উদাহরণ দেই। কলেজ সময়ে দুই ধারার ছাত্র রাজনীতির সাথে দুই জন জড়িত ছিলাম। স্বাভাবিক ভাবেই দুরত্ব থাকার কথা, কারণ আমাদের কলেজে সংশ্লিষ্ট দল গুলোর মধ্যে কাটাকাটি মারামারি লেগেই থাকতো। একবার তুমুল যুদ্ধ হয়ে গেলো দুই দলে, সেদিন আমি কলেজে ছিলামনা। উনাদের দলের ছাত্ররাই আক্রান্ত হয়েছিলেন বেশী। পরদিন আমি কলেজে গেলে উনি আমাকে আড়ালে ডেকে বলেছিলেন 'সতর্ক থেকো'।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামীলীগকে অস্বীকার করার কোন উপায় কি আদৌ আছে? তারেক রহমান কতোটা কুটবুদ্ধি সম্পন্ন তা আমাদের জানার বাকি নেই। যেখানে অনায়াসে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার প্রবাদ পুরুষ হওয়ার কথা ছিলো তাঁর সেখানে কেবল তাঁর অযোগ্যত আর অদুরদর্শীতার কারণে তিনি আজ চুরির মামলার পলাতক আসামী। বি এন পি বা আওয়ামীলীগ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি আজ এতো দুর্বল এর মূলে একমাত্র কারণ জনাব তারেকই। তিনি জোট ও দলের নেতাদের সাথে এমন আচরণ করে এসেছেন যা অশোভনই ছিলো না শুধু ছিলো রীতিমত অপমানকর। আজ তিনি তাঁর বাবাকে ছোট থেকে ছোট করার মিশনে নেমেছেন। আওয়ামীলীগ বা সেই ঘরানার লোক গুলো কে কি বলবে আমি জানিনা, কিন্তু নিজের বাবাকে এমন হাস্যকর করে তুলে ধরার চেষ্টা করে জেড ফোর্স এর প্রধান ২৭ মার্চ ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সাহসিকতার সাথে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রের মহান পাঠক অতি সামান্য সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে পৃথীবিময় বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশকে পরিচিত করা রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এর অযোগ্য পুত্র হিসাবেই নিজেকে প্রতিষ্টিত করেছেন তিনি। উনার যুক্তির বিপরীতে যুক্তি দেয়া আর পাগলের প্রলাপের বিপরীতে প্রলাপ বকা কি এক নয়?
আমরা যে কেউ যেকোন রাজনৈতিক আদর্শের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারি, কিন্তু আমরা বাংলাদেশের নাগরিক এটা অনস্বীকার্য্য আর এও অনস্বীকার্য্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আওয়ামীলীগ নামক রাজনৈতিক দলটির নেতৃত্বে। হতে পারে আওয়ামীলীগ আজ তাদের সেই আদর্শের জায়গায় নেই, হতে পারে তাদের আজকের অনেক কার্যক্রম দেশ রাষ্ট্রের স্বার্থ পরিপন্থি। আসুন পরিচ্ছন্ন ভাষায় পর্যাপ্ত কৌশলে আমরা তাদের সমালোচনা করি। কিন্তু স্বাধীনতাকালীন সময়ে তাদের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করলে আপনারা নিজেরাই নিজেক আরো প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবেন। সাধারণ মানুষ যারা ৫ জানয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগকে প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করেছিলো অন্তর থেকে তারেক সাহেবের পাগলামো কিন্তু তাদেরকে আবার আওয়ামীলীগ মুখো করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ও তার গণতন্ত্রের জন্য এটা ভালো লক্ষণ ন........।
মন্তব্য করতে লগইন করুন