আব্দুল কাদের মোল্লা তুমি আছ এক অনন্য উচ্চতায়
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:১৯:২৫ সন্ধ্যা
আব্দুল কাদের মোল্লা তুমি আছ এক অনন্য উচ্চতায়। তোমাকে আপনি না বলে তুমি বলেছি,রাগ করোনিতো। না,আমি জানি তুমি রাগ করতে পারনা। মানুষ প্রিয়জনদের অতি আপনজনদের তুমি বলেই সম্ভোধন করে। তুমিতো আমাদের আপনের চেয়েও আপন। এতটা আপন তুমি আগে ছিলেনা, যতটা তুমি মরে হয়েছো।
জানো, তোমাকে হত্যার পর আমরা অনেক কেদেছি,সারা দুনিয়ার লক্ষ কোটি জনতা কেদেছে। আমাদের কান্নায় আরশের মালিকের তখত কেপে উঠেছে কিনা জানিনা। তবে তিনি হয়তো অনেক হেসেছেন আমাদের নির্বুদ্ধিতায়। কত সৌভাগ্য আর মর্যাদা দিয়ে মালিক তার গোলামকে তার কাছে তুলে নিলেন, আর আমরা অযথাই কেদে কেদে হয়রান হচ্ছি। ক'জনার হয় এমন সৌভাগ্য। তোমার মাথা উচু ছিলো, এখন আরো এতটা উচ্চতায় পৌছেছে যা থেকে আমরা আজীবন অনুপ্রেরনা নিতে পারি, ইসলামী আন্দোলনের জন্য তুমি অনুপ্রেরনা হয়েই থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত।
ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস বলতে গিয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দরা সারা দুনিয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন, এখন আর তা করতে হবেনা। এখন আর সাইয়েদ কুতুব কিংবা হাসান আল বান্নার কথা বলতে হবেনা। এখন তুমি আছ, যুগ যুগ ধরে তোমার কথাই শুনবো, শুনবে অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্ম।তোমার সাহস, তোমার ত্যাগ, তোমার মহানুভবতা, ফাঁসীর কাস্টে দাড়িয়ে তোমার অবিচলতা প্রেরনা যোগাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
জানো, তোমাকে হত্যা করে হায়েনার দল ভেবেছিলো এই বুঝি সব শেষ। কিন্তু না, ওরা পারেনি, কাপুরুষের দল সম্পূর্ন ব্যার্থ। তারা তোমাকে হত্যা করেছে, তোমার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তোমাকে এই ক্ষনস্হায়ী দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছে, কিন্তু লক্ষ কোটি তৌহিদি জনতার অন্তর থেকে কিভাবে বিদায় করবে? গতকাল ছিলো জুমা বার। সারা দুনিয়ায় জুমার নামাজের পর কান্নার রুল শুরু হয়েছিলো, শুধু তোমাকে নিয়ে। কতটা গায়েবানা জানাজা হয়েছে তার পরিসংখ্যান কেও দিতে পারবেনা, তাও শুধু তোমার জন্য। অথচ এই তুমি যদি এমনি এমনি চলে যেতে তাহলে কতজন কাদতো, কতটি গায়েবানা জানাজা হত, কতদিন আর তোমাকে নিয়ে আলোচনা হত ?
তুমি কাদের মোল্লাকে কসাই কাদের বানিয়ে ওরা হত্যা করলো তোমাকে। তুমি কতটা নিরোপরাধ তা তুমি জানো, জানেন তোমার মালিক আর জানেন সারা দুনিয়াবাসী। তোমাকে যারা হত্যা করেছে তারাও জানে। তবুও তোমাকে হত্যা করেছে শুধুমাত্র তোমার আদর্শকে মুছে দেয়ার জন্য। ওরে বেকুবেরা, তা কি তোমরা পেরেছো ? ঐ বেকুবেরা পারেনি, আর কষ্মিনকালেও পারবেনা। তোমাকে হত্যার পর কিছু বেকুবের দল শাহবাগে আনন্দ স্ফুর্তি করেছে। অথচ এই বেকুবের দল জানেনা তাদের বাপের মৃত্যুর পর সারা বাংলার মানুষই আনন্দ করেছে, কেও ইন্নালিল্লাহিও পড়েনি। হাতে গোনা ক'জন দিয়ে তাদের বাপের জানাজা হয়েছে। আর ভবিষ্যতই বলে দেবে তাদের অবস্হান কি হবে।
সারা জীবন যে মৃত্যুর জন্য লালায়িত ছিলে সে মৃত্যুকে তুমি জয় করেছো।ফাঁসীর কাষ্টে যাওয়ার সময় তুমি কি জান্নাত দেখতে পেয়েছিলে ? আমারতো মনে হয় তাই। তা নাহলে কিভাবে এতটা নির্লিপ্ত ও অবিচল থাকতে পেরেছো। তুমি এখন কি করছো ? তুমি কি জান্নাতের পাখি হয়ে উড়ে বেড়াচ্ছ ? শহীদ আব্দুল মালেকের সাথে কি তোমার দেখা হয়েছে ? তাকে কি বলেছো, বাংলাদেশে এখনো তার আদর্শের আন্দোলন চলছে এবং এখনো তার আদর্শ বুকে ধারন করে কিশোর যুবকরা অকাতরে জীবন দিচ্ছে, দিচ্ছে বয়োবৃদ্ধরা।
হামজা (রাঃ ) কে সায়্যিদুস শোহাদা বা শহীদদের নেতা বলেছেন (রাসুল সাঃ)। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনে অনেকেই শহীদ হয়েছেন। তাদের জন্যতো একজন নেতা দরকার। হামজা (রাঃ ) হবেন সকল শহীদের নেতা, আর তুমি হবে তার অধিনে বাংলাদেশী শহীদদের নেতা। কেননা তোমার পূর্বে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই মানের কোন দায়িত্বশীল শহীদ হননি। জানিনা তুমি এই দায়িত্ব কতদিন পালন করবে । কেননা তোমার সিনিয়র দায়িত্বশীলরাও যে এই পথে দাড়িয়ে আছে।জানিনা কাপুরুষের দল তাদেরকে নিয়ে কি প্লান করছে।কি, তোমাকে পেয়ে বাংলাদেশের সকল শহীদেরা খুশিতো?
তোমার জন্য কি কোন দোয়ার দরকার আছে ? আমারতো মনে হয় কোন দরকার নেই। তোমার দোয়াইতো আল্লাহ কবুল করেছেন। শহীদ হওয়ার জন্য কতনা বলেছিলে তোমার মালিককে। আমাদের সকলকে স্বাক্ষি করেও তো বলেছিলে শহীদ হতে চাও। আল্লাহ তোমার দোয়া কবুল করেছেন। আমাদের জন্য তাই তুমি একটু দোয়া কর। তোমাদের সকল শহীদের রক্তের বিনিময়ে আল্লাহ যেন বাংলাদেশকে ইসলামের জন্য, ইসলামী আন্দোলনের জন্য কবুল করেন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
২৭১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন