গোলাম আরিফ টিপুর একমাত্র ছেলের মৃত্যু ও একজন মজলুমের কান্না।
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৫ জুন, ২০১৩, ০৫:০২:১৭ বিকাল
কোন মৃত্যুই কাম্য না। সবাইকে মরতে হবে এই অমুঘ সত্যটি জানার পরও আমরা মৃত্যু থেকে পালিয়ে থাকতে চাই।কিন্তু কেও ই মৃত্যুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবোনা।
প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবেএটা কুরআনের বানী।তবে কার কখন কিভাবে মৃত্যু হবে আমরা কেও জানিনা।সাধারনত পরিমানে বয়স্করা বেশি মারা যান বলে আমরা মনে করি বা আশা করি যে বয়স হওয়ার পর মারা যাব ।
সব মৃত্যুই বেদনার। একটি মৃত্যু সকলের বেদনার কারন হয়না।কিন্তু একটি পরিবারের,কিছু মানুষের, একটি জনগোষ্টির বেদনার কারন হতে পারে। কিন্তু এটা মানুষের কর্মের উপর নির্ভর করে।তাইতো আমরা দেখি কেও মারা গেলে সারা দেশের মানুষ কাঁদে, আর কেও মারা গেলে মানুষ ইন্নালিল্লাহিও পড়েনা।
স্বভাবতই আমরা মনে করি যে আমার পূর্বে আমার বাবা মারা যাবেন, আর আমি আমার বাবার দাফন কাপনের ব্যবস্তা করবো। আর সব বাবারাও সন্তানদের বড় করেন এই আশায় যে তার সন্তান মরনের সময় তার কাছে থাকবে। কিন্তু এর যখন ব্যতিক্রম হয় তখন কষ্টের আর সীমা থাকেনা।অনেক কষ্ট বয়োজৈষ্ট বাবার হাতে যখন যুবক সন্তান মারা যায়।
সমাজে একটা কথা আছে,
"পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বোঝা হচ্ছে পিতার কাধে সন্তানের লাশ।"এই কথাটার সত্য জানেন তারাই যারা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন, সন্তানের লাশ কাধে নিয়েছেন।
গতকাল এই বিডিটুডের বদৌলতে জানতে পারলাম তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক(?) অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপুর একমাত্র ছেলে আহমেদ আরিফ ইফতেখার আশীষ মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজিউন)।
তার মৃত্যুতে আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সকলের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি শুধু মাত্র জনাব টিপু ছাড়া। এই মানুষটা ২০১০ সালের ২৫ মার্চ থেকে সরকারের পক্ষে একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। সময়ের সবচেয়ে ভালো মানুষগুলিকে মিথ্যা দিয়ে ফাঁসীতে ঝুলানোর অন্যতম নায়ক এই গোলাম আরিফ টিপু। সর্বকালের সেরা মিথ্যার সয়লাব করে যাচ্ছে ওরা বাংলাদেশে নিরোপরাধ মানুষগুলির বিরুদ্ধে।নিজ পিতার বিরুদ্ধে জগতের যতসব মিথ্যা শুনতে শুনতে নিজের কাছে পরাজিত হয়ে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে মারা যান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বড় ছেলে প্রখ্যাত মুফাচ্ছিরে কুরআন মাওলানা রাফীক বিন সাঈদী ।
এই সেই জুন মাসের ১৩ তারিখে (২০১২) বুধবার দুপুরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের মামলায় আটক তার পিতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে রাফীক বিন সাঈদী উপস্থিত ছিলেন। শুনানির আগে তিনি তার পিতার সাথে বেশ কিছু সময় কথাও বলেছেন। শুনানির বিরতিকালে তিনি ট্রাইব্যুনালে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে বাইরে গাড়িতে বসানো হয়। গাড়িতে বসা অবস্থাতেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে দ্রুত তাকে বারডেম হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি। বিকেল পৌনে তিনটার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার জানাযায় তার বাবা মাওলানা সাঈদী অনেক কেঁদেছেন, কেঁদেছে জানাযায় অংশগ্রহনকারী লাখো জনতা,কেঁদেছে সারা বাংলাদেশের, সারা দুনিয়ার লক্ষ-কোটি ইসলামপ্রিয় জনতা।
জনাব টিপু আজ আপনিও কাঁদছেন, আপনার সাথে কাঁদছে আপনার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু এর বাইরে কতজন কেঁদেছেন আপনার সাথে। আপনারা যাদেরকে জগতের নিকৃষ্ট মানুষ হিসাবে ফাঁসী দিতে যাচ্ছেন, দুনিয়াবাসীর কাছে যাদেরকে মানবতাবিরুধী অপরাধের দায়ে অপরাধী হিসাবে প্রমান করতে যাচ্ছেন তাদের সন্তানের মৃত্যতে কত মানুষ কাঁদে আপনি দেখেছেন।দেখেছি আমরাও।তাদের জানাযায় কত মানুষের ঢল নামে, আর আপনার সন্তানের জানাযায় কত মানুষের ঢল নামে একটু হিসাব করে নিন জনাব টিপু সাহেব। আপনারাতো বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো মানুষ(?) আর ওরা সবচেয়ে খারাপ(!)।
বিষয়: বিবিধ
৩৬৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন