জামায়াতের প্রকৃত বন্ধু ..........।

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৯ জুন, ২০১৩, ১২:৪৯:৫৪ রাত



গত ৪ জুন বাংলাদেশ সময় সকাল ৫ টা ৫৭ মিনিটে ব্লগে "জামাত শিবিরের মানসিক ও রাজনৈতিক শক্তির নেপথ্যে......।" শিরোনামে একটা লেখা পোষ্ট করেছিলাম। অনেকে পড়েছেন এবং নানারকম মন্তব্য করেছেন।যারা পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন তাদের সবাইকে শুভেচ্ছা।

আমার প্রিয় ব্লগার "অপ্রিয় সত্য কথা" মন্তব্য করেছেন এভাবে-" একজন কট্রর জামাতি।একদম মার্কা মারা।তার পরেও বলে কি দেখুন এই মিথ্যুকে।"



তাকে শুভেচ্ছা। তবে আমি আশা করবো তিনি আমাকে আক্রমন না করে আমার লেখার উপর মন্তব্য করবেন।

তিনি একটা ছবি সহ মন্তব্য করেছেন, সেটা আমার লেখার সাথে প্রাসংগিক। তার দেয়া ছবিটা উপরে দিয়েছি, আর মন্তব্যটা হচ্ছে-" দুনিয়া ও আখেরাতের একদম খাটি বন্ধু।" তাকে বলেছিলাম এমন্তব্যের জবাব আলাদা পোষ্টে দিব। তাই আজকের এই লেখা। তবে পাঠকের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলে রাখি, আমি কোনো লেখক না যে এই বিষয়ে খুব একটা গুছাইয়া একটা লেখা আপনাদের উপহার দিতে পারবো। শুধুমাত্র আমি যা বুঝি তা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো।

পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি তার এ মন্তব্যের কারন। আমি আমার ঐ লেখার মধ্যে বলেছিলাম যে,

"জামাত শিবির তাদের বন্ধু হিসাবে দুনিয়ার কোনো পরাশক্তিকে নয়, বরঞ্চ দুনিয়া ও আখেরাতের মহা পরাক্রমশালী বাদশা মহান আল্লাহসুবহানাহু তায়ালাকে তাদের বন্ধু হিসাবে গ্রহন করেছে।"

আর ব্লগার "অপ্রিয় সত্য কথা" জামাত শিবিরের প্রকৃত বন্ধু হিসাবে এই ছবি ও মন্তব্য করেছেন।

হা, সম্মানিত ব্লগার আপনি একটি চরম সত্য তুলে ধরেছেন। আপনি ছবিতে বুঝাতে চাচ্ছেন জামাত কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো বি এন পি কে তাদের বন্ধু হিসাবে গ্রহন করেছে।

আমাদের দেশ বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়ে চরম একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে। যেমন আজও করছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই অনিশ্চয়তা, অস্তিরতা, বিশৃংখলতা, রাজনৈতিক অস্তিরতা যেন আমাদের ললাটে আস্টেপৃস্টে লেগে আছে। শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা, জিয়াউর রহমানকে হত্যা, এরশাদের ৯ বছরের স্বৈরশাসন, খালেদা জিয়ার ক্ষমতার মোহ এবং তত্বাবধায়ক আন্দোলন, সর্বোপরি শেখ হাসিনার হিটলারি শাসন, এসবের মধ্য দিয়ে আমরা সব সময়ই অশান্তির মধ্যে সময় অতিক্রম করেছি এবং করছি।

আর সব ক্ষেত্রেই দেশের মানুষ এই অশান্তির সময়, রাজনৈতিক অস্তিরতা থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য নিয়েছে নানা উদ্যোগ, বের করেছে নানা ধরনের পথ। আর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই এই পথের পথিক হয়েছেন। তখন ভিন্ন ভিন্ন মতাবলম্বিদের এক পথ দিয়ে হাটতে দেখা গেছে।

জামায়াতে ইসলামী একটি উদার গনতান্ত্রিক ইসলামীক দল। যারা সব সময়ই দেশের মানুষের জন্যে কাজ করে আসছে। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলন করেছে।খালেদা জিয়ার সময়ে জামায়াত তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্তা ফর্মূলা দিয়ে জাতিকে নির্বাচন কালীন রাজনৈতিক অস্তিরতা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। সেই পথে অনেকে শামিল হয়েছিলেন, হয়েছে আওয়ামীলীগও। আর এই ব্যবস্তা প্রতিষ্টিত করতে গিয়ে তাদেরকে কখনো কখনো একই প্লাটফর্মে আসতে হয়েছে।

আবার শেখ হাসিনার মত হিটলারী শাসন ব্যবস্তা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্তির লক্ষে গড়ে তুলতে হয়েছে মরনপণ আন্দোলন। যেখানে জামায়াতকে বসতে হয়েছে বি এন পি সহ অপরাপর রাজনৈতিক দলের সাথে। যেটা আজও করছে সরকার বিরুধী সকল রাজনৈতিক শক্তি।

এই ছবিই কথাগুলোর সত্যতা প্রমান করে।আর এই জন্য জামায়াত স্বাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। এটা কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে বন্ধু বা প্রভু হিসাবে মেনে নেয়া নয়।

একটু ভেবে দেখুন জামায়াত কার জন্যে, কি উদ্যেশ্যে ,কখনো আওয়ামীলীগ আবার কখনো বি এন পির সাথে আন্দোলন করেছে? কখনোতো জামায়াত কারো সা্থে কোনো গোপন আতাত করেনি। যেটা অনেক ইসলামীক দল পর্যন্ত করে থাকে।যা এখনো অনেকেই করছেন।

জামায়াত কি চাইলে গোপন আতাত করতে পারতোনা? যখন যে দল ক্ষমতায় আসবে সে দলের সাথে গোপন আতাতের মাধ্যমে জামায়াত কি সরকারের সুযোগ সুবিধা নিতে পারতোনা? শুধুমাত্র চারদলীয় জোটে থাকবেনা এরকম একটা গোপন চুক্তিতে একমত হলে আজ জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসীর জন্য অপেক্ষা করতে হতনা।শুধুমাত্র নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশ নিবে এরকম একটা আতাতে একমত হলে জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীকে আজ রিমান্ডের নামে নির্যাতন ভোগ করতে হতনা।

তাহলে কিসের মোহে, কি সেই আকর্ষনে জামায়াত আজ এই জুলুম নির্যাতন সয়ে যাচ্ছে? জামায়াত কি শুধু বি এন পির মত বন্ধু(!)কে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষে হাসিমুখে ফাঁসীর কাষ্টে যেতে রাজি হয়েছে? এত জুলুম- নির্যাতন সহ্য করা ও অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয়া এটা কি নিছক কোনো প্রাপ্তির লক্ষে ?

না বন্ধু না। সম্মানিত ব্লগার "অপ্রিয় সত্য কথা" এটা নিছক কোনো প্রাপ্তির লক্ষে নয়। দুনিয়ার কোনো বন্ধুর জন্যে মানুষ এত সহজে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারেনা। হাসিমুখে সয়ে যেতে পারেনা নির্যাতনের স্টিমরোলার।

তা পারা যায় যখন মানুষের উদ্যেশ্য হয় শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। মানুষ যখন আল্লাহকেই বন্ধু হিসাবে গ্রহন করে তখন তার মালিকের সন্তুষ্টির জন্য হাসিমুখে সব বরন করে নিতে পারে। যা নবী রাসুলদের যুগ থেকে এখনো অব্যাহত আছে।

বিষয়: রাজনীতি

৩৯৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File