শেখ হাসিনা খুবই সংযমী(!) এবং আওয়ামীলীগের ক্রেডিট
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৯ মে, ২০১৩, ০৫:৫৩:২১ বিকাল
আমাকে যারা চিনেন, জানেন, যাদের সাথে আমি হরহামেশা উঠাবসা করি,হর হামেশা দেখাসাক্ষাৎ হয়, হাই হ্যালো বলে কুশলাদি জেনে নেই বা তারা জেনে নেন কিন্তু তারা আমার পরিবারের অন্য কাওকে চিনেন না, জানেন না বা দেখেন নি, তাদের কে গিয়ে যদি আমি বলি, আমি আমার পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও সবচেয়ে ভালো মানুষ।তাহলে এর অর্থ কি দাঁড়ালো ?
তার মানে হচ্ছে এই যে, আমার চেহারা সুরতের উপর নির্ভর করছে আমার পরিবারের অন্য সবার চেহারা সুরত। আমি কতটা ভালো মানুষ তার উপর নির্ভর করছে আমার পরিবারের অন্যরা কতটা ভালো মানুষ। যেহেতু আমিই বলে দিয়েছি আমি সেরা, সেহেতু আমার পরিবারে সবাই আমার থেকে পিছে। এখন আমার চেহারা সুরত ও ভালো মানুষের দিক থেকে আমার মার্ক যদি হয় শতে ৩৩,তাহলে আমার পরিবারের বাকিদের মার্ক নিশ্চয় ৩৩ এর কম।
আর আমি যদি বলি পরিবারে আমিই সবচেয়ে কম সুন্দর ও কম ভালো মানুষ তাহলে সবাই ভাববে সে যদি এরকম না জানি তার পরিবারের সবাই কতটা সুন্দর ও ভালো মানুষ।এখানে সবার মার্ক থাকবে আমার উপরে।
আমাদের মুসলমান রীতিতে আছে যে নামের একটা প্রভাব পড়ে ব্যাক্তির উপরে।তাই আকিকা করে একটি ভালো অর্থবহ নাম রাখার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আবার অনেকের বিভিন্ন উপাধিও ব্যাক্তির উপর প্রভাব পড়ে। তাইতো রাসুল(সঃ) অনেক সাহাবীকে অনেক ধরনের উপাধি দিয়েছিলেন।সাহাবীরা কিন্তু তাকে দেয়া উপাধির হক আদায় করেছেন।
অন্যদের বেলায় তার ব্যতিক্রমও ঘটছে। যেমন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, তার নামের অর্থ হচ্ছে ইসলামের সৈনিক। কিন্তু তিনি কার সৈনিক সেটা আমরা সকলেই জানি।
আবার মতিয়া চৌধুরীর উপাধি হচ্ছে অগ্নিকন্যা। এখানে আবার যথাযত ভাবে মিলে যাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা এই মানুষটার অন্তর যেন আগুন দিয়েই বানিয়েছেন।
এবার আসি আমার মূল কথায়। গত ২/১দিন আগে আমাদের এই অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনা খুবই সংযমী। যদি শেখ হাসিনা সংযমী না হতেন তাহলে বিরুধীদল কোন রাজনীতিই করতে পারতনা।তার কথায় হাসবো না কাঁদবো বিঝতে পারছিনা।আওয়ামীলীগের নেতা নেতৃরা মাঝে মধ্যে এমন ধরনের কথা বলেন যা শুনে মানুষ হাসবে না কাঁদবে ভাবনায় পড়ে যান।তারা বলতেও পারেন। ক'দিন আগে এই নেত্রীই বলেছিলেন আওয়ামীলীগের সাথে যারা জড়িত তারা নবীজির সেরা উম্মত!
শেখ হাসিনা খুবই সংযমী! এখন আমরা যারা শেখ হাসিনাকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চিনি, জানি, এভাবে সারা বিশ্বও চিনে, জানে। এই ৪ বছরে আমাদের প্রধান মন্ত্রী যা করেছেন, এবং এখনো তিনি যা করছেন এই অবস্তায়ও তিনি যদি সংযমী হন তাহলে আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতা নেত্রী, কর্মী সমর্থকের সংযমটা কোন পর্যায়ের ভাবলে গা শিওরে উঠে।এমন অবস্তা দেশের তৈরী করার পরও যদি তিনি সংযমী হন, এটা যদি হয় সংযম তাহলে তিনি আর কি করতে পারেন,তা চিন্তা করলে গায়ের পশম খাঁড়া হয়ে যায়।
শেখ হাসিনা কতটা সংযমী তা মরহুম মতিউর রহমান রেন্টুর লিখিত বই "আমার ফাঁসী চাই" পড়লেই সকলেই জানতে পারবেন।সে বই থেকে শুধু একটি কথাই বলি, তিনি লিখেছেন,"কোথাও কোন লাশ পড়লে সেদিন শেখ হাসিনা খুব ভালো মত ভুরিভোজন করেন।"
একটি লাশের বদলে দশটি লাশ পড়বে এরকম ঘোষনা শুনলে বুঝা যায় তিনি কতটা সংযমী!
লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে ঢাকার রাজপথ দখলের ঘোষনা আসলে বুঝা যায় তিনি কতটা সংযমী!
পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যাযজ্ঞের কথা মনে হলে বুঝা যায় তিনি কতটা সংযমী!
২৮শে ফেব্রুয়ারির হত্যাযজ্ঞের কথা মনে হলে বুঝা যায় তিনি কতটা সংযমী!
সর্বোপরি রাতের আধারে ঘুমন্ত হেফাজত কর্মীদের উপর ঘঠে যাওয়া লোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞের কথা চোঁখের সামনে ভেসে উঠলে সহজেই অনুমেয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী কতটা সংযমী!
আওয়ামীলীগের ক্রেডিট: এখানে আওয়ামীলীগের ক্রেডিট।শত শত নেক্কার জনক ঘটনার জন্ম দিয়েও তারা বলতে পারে তারাই সংযমী।নিজেরা ঘটনা ঘঠিয়ে অন্যের উপর দুষ চাপানোতে আওয়ামীলীগের কোন বিকল্প নেই।এই সরকারের সময়ে বি এন পির কেন্দ্রীয় কোন নেতা বা এমপি সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম ভাবে মারা যান নি।কেননা খালেদা জিয়া রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য নিজদলের নেতা কর্মীকে হত্যা করতে পারেন না।যা করে আওয়ামীলীগ সারা দুনিয়া বাসীকে দেখিয়েছিলো। ইলিয়াস আলীকে খুন করা হয়নি, গুম করা হয়েছে তাই আমরা নিরব। সারা দেশে একযুগে বোমা হামলা করে মৌলবাদের ধোয়া তুলতে পারেননি খালেদা জিয়া। সারা দেশে ধর্মপ্রান মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যার পরও যারা হেলিয়ে দুলিয়ে কথা বলে তারা। রাতের অন্ধকারে মানুষ হত্যা করে লাশ পর্যন্ত গুম করে একমাত্র আওয়ামীলীগই বলতে পারে কোন হত্যাকান্ড হয়নি।সেনা অফিসারদের হত্যা করে যারা বহাল তবিয়তে ক্ষমতায় থাকতে পারে ক্রেডিটতো শুধু তাদেরই দেয়া উচিৎ আপনারা কি বলেন।
উপরে ও নীচে দু'টি ছবি দিলাম সংযম কাহাকে বলে দেখার জন্য।
বিষয়: রাজনীতি
২১৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন