১৯৭১ নং রাজাকার ট্যাবলেট ও রাজার পাগল বানানোর কাহিনী।।
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৩ মে, ২০১৩, ১২:৫৮:৫৬ রাত
রাজার পাগল বানানোর কাহিনী দিয়েই শুরু করি।
এক দেশে ছিল এক রাজা।রাজাটা খুব বদ রাগি ও হারামি টাইপের ।রাজার ভয়ে প্রজারা সবসময় তটস্ত থাকতো।কিন্তু সব প্রজাই রাজার অমংগল কামনা করতো।এই খবরটাও রাজা মহোদয় জানতেন।
রাজা মনে মনে ভাবতে লাগলেন এই অবস্তা থেকে কিভাবে উত্তরন পাওয়া যায়।তিনি তার মন্ত্রী পরিষদ নিয়ে বসলেন।সবাইকে জিগ্গেস করলেন, এমন কি করা যায় যে প্রজারা আমার বিরুদ্ধে কোন বাদ প্রতিবাদ করবেনা, আমার কাছে তাদের কোন অভাব অভিযোগ করবেনা।
রাজার এ বক্তব্য শোনার পর মন্ত্রীরা অনেক ধরনের বুদ্ধি পরামর্শ দিলেন, কিন্তু রাজার কাছে কোনটিই পছন্দ হলোনা।রাজার প্রধান উজির সে ছিলো বড়ই বেরসিক। সে পরামর্শ দিলো যে,পানির সাথে পাগলের ঔষোধ মিশিয়ে দেবে যা পান করে রাজ্যের সকল মানুষ পাগল হয়ে যাবে।এতে করে রাজা ও মন্ত্রী পরিষদের সবাই থাকবে সুস্হ্য আর রাজ্যের বাকি সবাই থাকবে পাগল। আর পাগলরা কি করতে পারে।
প্রধান উজিরের এই পরামর্শটি রাজার মনোপূত হলো। সে অনুযায়ি পানির সাথে পাগল হওয়ার ঔষোধ মিশিয়ে দেয়া হলো আর পানি পান করে রাজ্যের সবাই পাগল হয়ে গেলো শুধু রাজা আর তার মন্ত্রী পরিষদ ছাড়া।
কিন্তু বিপত্তি ঘটলো অন্য যায়গায়। এখন দেখা যায় রাজ্যের সবাই এক ধরনের আচরন করছে আর রাজা ও তার মন্ত্রী পরিষদের মুষ্টিমেয় কয়জন অন্য রকম আচরন করছে। একসময় রাজ্যের সকল প্রজারা মিলে রাজা ও তার মন্ত্রী পরিষদের সবাইকে পাগল হিসাবে ঘোষনা করলো।
আমি আমার দেশের প্রধান মন্ত্রী ও তার মন্ত্রী পরিষদকে পাগল বলার দৃষ্টতা দেখাবনা।যদিও ইতিমধ্যে অনেকে সংখা উল্লেখ করে বলেছেন সরকারে কতজন পাগল আর কতজন নাস্তিক রয়েছেন।
এবার আসি আমার ১৯৭১ নং রাজাকার ট্যাবলেটে।
আমাদের বর্তমান ডিজিটাল সরকার ক্ষমতায় আসার পর হয়তো ঐ রাজার মত চিন্তা করলেন যে এমন কি করা যায় যার মাধ্যমে দেশের আপমর জনসাধারনকে একটা অন্যরকম অবস্তার মধ্যে রেখে উনারা ৫ বছর নির্বিঘ্নে রাজ্য চালাবেন।
তখনই দাদার বাড়ি থেকে আমদানি করা হলো ১৯৭১ নং রাজাকার ট্যাবলেট।ট্যাবলেট টি গেলানো হলো সারা দেশের জন সাধারনকে। গ্রেফতার করা হলো জামায়াতের সকল গুরুত্বপূর্ন নেতাদের।ট্যাবলেটের বদৌলতে অনেক বাঘা বাঘা মুক্তিযোদ্ধার গায়ে তুলে দেয়া হলো রাজাকারের তকমা।
আজ সরকারের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে, সরকারের নানাবিধ দূর্নীতির সমালোচলা করলে,সরকারের অগনতান্ত্রিক আচরনের বিপক্ষে কিছু করলেই আপনাকে ১৯৭১ নং রাজাকার ট্যাবলেট খাইয়ে দেবে সরকার।
কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ বিধি যেন উল্টা হাঠতে শুরু করেছে। আজ হয়তো ট্যাবলেট কাজে আসতেছেনা,নয়তো ট্যাবলেটের কারনে দেশের সব মানুষ এক ধরনের আচরন করছে আর সরকার ও তার মন্ত্রী পরিষদ এক ধরনের আচরন করছেন।
আজ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা এমন আচরন ও কথা বার্তা বলতেছেন যা বাংলাদেশের আপামর মানুষের কথা ও কাজের সাথে মিলছেনা।সাভার ট্রাজেডি নিয়ে সরকার প্রধান ও তার মন্ত্রীরা এমন কথা বলেছেন যা নিয়ে সারা দেশে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।শুধু দেশেই নয় সারা দুনিয়া জুড়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।এম পি রনির কথা অনুযায়ি বিদেশিরাও মজা করতেছে আমাদের মন্ত্রীদের কথা শুনে। একজন তো বলেই ফেলেছে"যদি মন্ত্রী এমন হয় তাহলে প্রতিবন্ধি কে ?"
আজ সরকারের মন্ত্রীদের নিয়ে ফেসবুক,ইউতুব,টুইটার ও ব্লগে নানা রকম চটকদার পোষ্ট দেখা যায়। অবস্তাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আজ আমাদের ডিজিটাল সরকার প্রাচীন কালের ঐ রাজার গল্পে উপনিত হয়েছেন।
বিষয়: রাজনীতি
২৭৮১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন