ওরা আমার বউয়ের উপর হামলে পড়েছিলো : সেটা ছিল আমার জন্য একটা দূঃস্বপ্নের রাত।।

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০১ মে, ২০১৩, ০৪:২৯:১৮ রাত

প্রায় আড়াই বছর হয় বউ আমার প্যারিসে আসে। সে আসার পর তাকে নিয়ে প্যারিসের বাইরে কোথাও যাওয়া হয়নি। ক'দিন থেকে দুজনেই চাচ্ছি একটু বাইরে কোথাও বেড়াতে যাব। ইতালির মিলান থেকে চাচাত বোন ওরফে দুধ বোন বারবার চাইতেছে তাদের ওখানে বেড়ানোর জন্য যাইতে।তাকে কয়েকদিন বলেছিলামও যে আমরা আসবো।তাই দু'জনে মিলে একমত হলাম যে মিলানই যাব।

যাব যাব করে আর যাওয়া হচ্ছেনা। সেদিন হঠাৎ করে ট্রেনের টিকেট কেটে নিলাম। মোটামুটি সস্হায় পেয়েছি। আরোও কিছু দিন আগে কাটলে অনেক কম দামে টিকেট পাওয়া যেত। এই সমস্ত দেশে একটা সুবিধা হলো আপনি যত আগে টিকেট কাটবেন আপনার টিকেটের দাম তত কমে আসে।

সেদিন আমরা মিলানের কমোতে গিয়েছি। (কমোর বিষয়ে মিলান সফর পর্ব দুইয়ে লিখব ইনশা আল্লাহ।) সারাদিন ঘুরাঘুরি করে সন্ধায় বাসায় ফিরি। রাতের খাবার ও নামাজ কালাম পড়ে যথারীতি ক্লান্ত অবসন্ন শরীর নিয়ে শুয়ে পড়ি।কিছুক্ষনের মধ্যে রাজ্যের যত ঘুম সব আমার চোঁখে।

অনেক দিন পর বউ, ছোট বোন ও তার দুটো বাচ্চা নিয়ে আমার প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশে গিয়েছি।ছোট থেকে যে ধুলিকনায় বড় হয়েছি সেই মফস্বল শহর বড়লেখায় নামতেই দেখি আওয়ামীলীগ আর জামাত শিবিরের মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ চলছে। কোন দিকে যাওয়ার পথ না পেয়ে জামাত শিবিরের সেই চিরচেনা কার্য্যালয়ে ওদেরকে নিয়ে ঢুকে পড়ি।যদিও সেই পুরাতন কার্য্যালয়টি এখন আর নেই।

কার্য্যালয়টি বড়লেখা শহরের দক্ষিন পার্শে, আর আমাদের বাড়ি শহরের উত্তর পার্শে। একসময় বলতাম বড়লেখা উত্তর বাজার আমাদের বাড়ি। এখন অবশ্য বাজার অনেক লম্বা হয়েছে, এখন আর উত্তর বাজার বলার কোন সুযোগই নাই। এখন বলতে হয় মধ্য বাজার। দক্ষিন বাজার থেকে সেই আগের উত্তর বাজারে আমাকে যেতে হবে এই মারামরির মধ্যে তাও আবার বউ, ছোট বোন ও তার দুটো বাচ্চা নিয়ে।

দুটো রিক্সা পেয়ে গেলাম। এক রিক্সায় তাদেরকে তুলে এক রিক্সায় আমি উঠলাম। তখনকার সময়ের মধ্য বাজারে যাওয়ার পর দেখলাম জামাত শিবিরের ৪জনকে আওয়ামীলীগ মেরে ফেলেছে। এটা দেখে আমি আর স্তির থাকতে পারলাম না। রিক্সা থেকে নেমে ছাত্রলীগের ২ জনকে আমি খুব আচ্ছা করে মারলাম।মেরেই স্হান ত্যাগ করি, শেষে আমি না আবার আক্রান্ত হই।

ঘটনার পর মামলা হয়েছে। আমি আমার বউকে নিয়ে পালাচ্ছি। জুমাবার দিন, জুমার নামাজ পড়ার জন্য এক গ্রামের মসজিদে ঢুকেছি। ঢুকেই দেখি ছাত্রলীগের কয়েকজন সে মসজিদে।ওদের কে দেখার পর বউকে বললাম, চলো এখানে নামাজ পড়া যাবেনা, তাড়াতাড়ি সরে পড়ি ওরা দেখলে আক্রমন করতে পারে। কথাটা বলা শেষ করতে পারিনি, ওরা ঠিকই আমাদের দেখে ফেলে এবং আক্রমন করে।

আমিও একা একা ওদের আক্রমন প্রতিহত করতে থাকি বাংলা সিনেমার নায়কের মত।একসময় দেখি আমার বউকে দেখতেছিনা। চারিদিকে চোঁখ দিয়ে খুজতে লাগলাম, কিন্তু আমার বউকে পাচ্ছিনা। ওর নাম ধরে চিৎকার করতেই দেখি ৫/৬ সন্ত্রাসী ওকে মাটিতে ফেলে দিয়েছে, সে ওদের হাত থেকে বাচার জন্য প্রানপণ চেষ্টা করছে। এই অবষ্হা দেখে আমি আমার বউকে বাচাতে সন্ত্রাসীদের দিকে দৌড় দিয়ে এগুতেই আমার ঘুম ভেংগে যায়।

বিষয়: বিবিধ

৩৫৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File