জামাটা আমার নয়, বললেই শরীরের কাদা মুছা যায়না।।
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৫৪:৫৪ রাত
সদ্য ঘটে যাওয়া সাভার ঘটনা নিয়ে নানান জন নানান কথা বলছেন। কেও বলছেন এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব। তাদের কথার পক্ষে নানান যুক্তিও উপস্হাপন করছেন, তাদের যুক্তিগুলো পড়লে মনে হয় এটাই সত্য। যদিও আমার মনে প্রশ্ন জাগে এই গজব কেন হত দরিদ্র মানুষের উপর দিয়ে যাবে।
কেও বলছেন এটা একটা দূর্ঘটনা,বিশেষ করে পত্রিকার পাতা জুড়ে শুধু দূর্ঘটনার কথাই বলা হচ্ছে।
আবার কেও বলছেন এটা একটা গনহত্যা। আমার কাছে এটাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়।কেননা একটা ফাটল ধরা বিল্ডিংয়ে জোরপূর্বক শ্রমিকদের ঢুকানো হলো, যেটাকে মাত্র আগের দিন প্রকৌশলীরা ব্যবহারের অনুপোযুক্ত হিসাবে ঘোষনা করেছেন।যার কারনে আমি এই গনহত্যাকে আরেকটু বাড়িয়ে বলবো এটা একটা পরিকল্পিত গনহত্যা ।
আল্লাহর গজব হোক আর দূর্ঘটনা হোক বা গনহত্যাই হোক সাভারে একটা ট্রাজেডি ঘঠেছে। এধরনের ঘটনায় সরকারের, দেশের মানুষের কিছু দায় দায়িত্ব বেড়ে যায়।বিশেষ করে সরকারের দায়টা অনেক অনেক অনেক বেশী।দেশের সাধারন মানুষ কিন্তু তাদের দায়িত্বটা যথাযত আন্জামের চেষ্টা করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে।
কিন্তু সরকারের বেলায় আমরা কি দেখি। সরকারের প্রধান থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ন মন্ত্রীরা প্রথমেই এ ঘটনার দায় এড়ানোর জন্য নানান ধরনের কথা বার্তা শুরু করলেন। এমন এমন কথা যা দেশের আপামর জনসাধারনের মাঝে হাস্যেরসের সৃষ্টি করলো।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বললেন, তারা আগে থেকেই দূর্ঘটনা আচ করতে পেরে শ্রমিকদের সরিয়ে রেখেছেন। শ্রমিকরা তাদের জিনিষপত্র নিতে কারখানায় যায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, বি এন পি জামাতের লোকজন ভাংগা দেয়াল ধরে ধাক্কাধাক্কি করেছেন তাই এই ঘটনা ঘঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী একেবারে কাগজপত্র সাথে নিয়ে সংসদে দাড়িয়ে বললেন, রানা যুবলীগের কেও না। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে নাকি অনেকেই সুযোগ নেয়।বাহ! কি চমৎকার কথা।
দেশে কিছু ঘটলেই এর দায় কেও স্বীকার করতে চায়না।এই সরকারের আমলে এটা যেন একটা রছমে পরিনত হয়েছে।প্রকাশ্য দিবালোকে বিশ্বজিতকে হত্যা করা হলো , আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা বললেন এ হত্যা কান্ডের সাথে ছাত্রলীগ জড়িত না।ছাত্রলীগের আভ্যন্তরিন কোন্দলে কেও মারা গেলে বলা হয় এটা শিবির করেছে।প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রলীগ যুবলীগ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করলেও বলা হয় অন্যান্য দল থেকে তাদের মধ্যে সন্ত্রাসীরা ঢুকে এরকম কর্মকান্ড চালাচ্ছে।যদিও এই বলার মধ্যেই শেষ। অন্যান্য দলের হলেও তাদের আর গ্রেফতার করা হয়না।
ঠিক একই অবস্হা দেখলাম আমরা সাভার ট্রাজেডির বেলায়ও।
কিন্তু প্রশ্ন হলো যে জামা আপনি গায়ে দিয়েছেন, শরীরে কাদা লাগার পর যদি বলেন জামা আপনার না তাহলে শরীর থেকে কাদা কি মুছে যাবে?
আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রী এমপিরা কিছু ঘটলেই সহসাই বলে ফেলেন এটা তাদের দলের কেওনা। দূষ্কৃতকারীরা সুযোগ নিচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সবিনয় জিগ্গাসা, আপনারা ক্ষমতায় এলে দূষ্কৃতকারীরা আপনাদের দলে যোগ দিয়ে সুযোগ নেয় ( আপনাদের কথা অনুযায়ি) তাহলে আওয়ামীলীগ কি দূষ্কৃতকারীদের অভয়ারন্য ? আপনারা কেন এই দূষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করেন না ?
বিষয়: বিবিধ
২৫৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন