রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইসলাম থাকলে ১৩ দফার প্রয়োজন নেই।১৩ দফা দেবেন আবার ভোট দেবেন নৌকায় !!!
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:২২:৫২ সকাল
হেফাজতে ইসলাম বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।যদিও আমার মনে হয় তাদের আন্দোলন আস্তে আস্তে স্তিমিত হয়ে যাবে।
আল্লাহ, মুহাম্মদ (সঃ) ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিদ্রুপকারী ব্লগার সহ সকল নাস্তিকদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবীতে ঢাকায় গত ৬ ই এপ্রিল লংমার্চ ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে যেভাবে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীর উপর জুলুম নির্যাতন হচ্ছে সেই প্রেক্ষাপটে এই লংমার্চ ও সমাবেশ খুবই গুরুত্ব বহন করে নিঃসন্দেহে।
কিন্তু হেফাজতে ইসলামের এই লংমার্চে আমি পূর্ব থেকেই আশাবাদি ছিলামনা।কেন জানি আমার আগেই মনে হয়েছিলো যতটা না গর্জে আসতেছে হেফাজতে ইসলাম ততটা বারিষ হবেনা, এর পূর্বেই থেমে যাবে। আর দেখা গেলেও তাই।
আমার এরকম মনে হওয়ার যথেষ্ট কারনও আছে।
প্রথমত , হেফাজতে ইসলাম কোন রাজনৈতিক দল না। আওয়ামীলীগের মত একটা ফ্যাসিষ্ট রাজনৈতিক দলের মোকাবেলায় যথেষ্ট রাজনৈতিক পরিপক্ষতা থাকা চাই, যা হেফাজতের মধ্যে অনুপস্তিত।
দ্বিতীয়ত , তাসবীহ আর জায়নামাজ দিয়ে কোন আন্দোলন হয়না।
এবার আসি আমার দেয়া শিরোনামে।
গত ৬ এপ্রিলের সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম সরকারের কাছে ১৩ দফা দাবী উথ্থাপন করেছেন। যদিও এই দাবীর প্রতি নানা মহল থেকে নানা রকম কথা আসতেছে।আমি ব্যাক্তিগত ভাবে তাদের এই দাবীর প্রতি একাত্ব । আর আমার বিশ্বাস এই দাবীর প্রতি বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মানুষ সকলেই সমর্থন করবে।
কিন্তু এই দাবী গুলি কি বাংলাদেশ সরকার পূরন করবে ? তাও যেখানে আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায়।
হেফাজতে ইসলামের সম্মানীত আলেম উলামারাও জানেন তাদের দেয়া ১৩ দফার একটিও আওয়ামীলীগ সরকার আমলে নেবেনা। আমরাও দেখতে পাচ্ছি সরকার আমলে নেয়াতো দূরের কথা এ দাবীগুলো নিয়ে রীতিমত হাসি মশকারা করতেছে সরকার ও তাদের লালিত বাম ঘরানার কিছু বুদ্ধিজীবি।
তাহলে কি করা দরকার ? এই ১৩ দফা বাস্তবায়ন করতে হলে দরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইসলাম। ইসলাম রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে কোন দফা টফা দেয়া লাগবেনা।
কিন্তু আমরা কি দেখি। নির্বাচনের সময়ে একটা ইসলামী দল বা দলের কোন প্রার্থীকে নিয়ে অনৈসলামীক দল যতটা না বিরুধীতা করে এর চেয়ে বেশি বিরুধীতা করে অপর কোন ইসলামী দল ও তাদের নেতা কর্মী।
আমি দেখেছি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আমাদের এলাকায় একটা পীরভক্ত দলের নেতা কর্মীরা অপর ইসলামী দলের প্রার্থীর বিপক্ষেই তাদের যত প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছে। এমন কি ঐ ইসলামী দলের প্রার্থীর চেয়ে তাদের প্রার্থী যদি একটি ভোটও বেশি পান তাহলে তাদের বিজয় হয়েছে বলে তারা মনে করবে এরকম ঘোষনাও দিয়েছে।যদিও তাদের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিলো।
হেফাজতে ইসলাম সহ অনেক রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক ইসলামী দল ও গ্রুপকে নির্বাচনের সময় দেখা যায় বাংলাদেশের সর্ববৃহত ইসলামীক রাজনৈতিক দলের বিরুধীতা করতে। এমনকি অনৈসলামীক দলের প্রার্থীর পক্ষে জোরালো প্রচার প্রচারনা চালাতে । ভবিষ্যতে যে এমন হবেনা তার গ্যারান্টি কি ?
তাই বলি এই দফা টফা দিয়ে লাভ নাই। কেননা নির্বাচনে ফের আওয়ামীলীগকেই নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন।
আর এভাবে চলতে থাকলে সারা জীবনেও আপনাদের ১৩ দফার বাস্তবায়ন হবেনা।
তাই আসুন,১৩ দফা নয়, সবাই এক দফায় ঐক্যবদ্ধ হই।আর তাহলো রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইসলাম নিয়ে আসি। নির্বাচনে আমরা ইসলামীক দলের প্রার্থীকেই ভোট দেই এবং এর মাধ্যমে আমরা ইসলামকে ক্ষমতায় নিয়ে যাই। যে প্রক্রিয়ায় ইসলামকে ক্ষমতায় নেয়া যাবে সকল ইসলামীক দল ও গ্রুপ এক্যবদ্ধ ভাবে সে প্রক্রিয়ায় কাজ করি।
বিষয়: রাজনীতি
২৮৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন