আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস: পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভালবাসা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবারিক বন্ধন দৃঢ় হোক
লিখেছেন লিখেছেন বাক্সবন্দী বিবেক ১৫ মে, ২০১৩, ০১:২৫:৩২ দুপুর
সারা বিশ্বে পরিবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। পরিবারই একজন মানুষের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ। ারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা ও দৃঢ় বন্ধনের মাধ্যমে পরিবারে একজন মানুষ সমাজের সর্বোচচ সুবিধা ভোগ করে থাকে।
বিশ্বের প্রতিটি দেশ ও সংস্কৃতিতে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ, সমমর্যাদার নিশ্চয়তা এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমঅধিকার ও বৈষম্যহীন পরিবেশের মাধ্যমে সামাজিক অগ্রগতি সাধন ও জীবন মান উন্নয়নে পরিবার সমাজের সর্বনিম্ন স্তম্ভ ও মৌলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
পরিবার এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ জীবনের পথ নির্দেশনা গড়ে উঠে। সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে পরিবারবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। তাই সমাজ সৃষ্টিতে পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও নানান কর্মসূচি আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। তবে, ঘটা করে পরিবার দিবস পালন শুরুর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস।
শিল্প বিপ্লবের পর পশ্চিমাদের মধ্যে পরিবারের প্রতি অনাগ্রহ দেখা দেয়। আর এ অনীহার কারণে পরিবারিক বন্ধনে দেখা দেয় অস্থিতিশীলতা, বাড়তে থাকে বিবাহ বিচ্ছেদ সহ নানান সামাজিক সমস্যা, যার প্রধান শিকার হয় শিশু। অনেক শিশুই বাবার পরিচয় ছাড়া বড় হতে থাকে।
পারিবারিক বিষয়ে জনসচেতনা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ়ীকরণ ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস ঘোষিত হয় এবং ১৯৯৫ সাল থেকে সমগ্র বিশ্বে প্রতি বছর এ দিনটি আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৯৯৫ সালে কোপেন হেগেন এ অনুষ্ঠিত সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলনে সামাজিক সংহতিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ হিসেবে চিহ্নিত করে। তাছাড়া উক্ত সম্মেলনে “সবার জন্য সমাজ” ঘোষনা করে সমাজের সকল গ্রুপ, বিশেষত যারা ঝুঁকিপুর্ণ ও পশ্চাদপদ অবস্থায় রয়েছে তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা প্রদান করে।
আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস উদযাপনের বিষয়টি সাধারণ ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয় না হলেও সমাজের মৌলিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এ দিবস পালনের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসা, সৌহার্দ্য ও বন্ধন দৃঢ় হয়।
সামাজিক অগ্রগতি ও জীবনমান উন্নয়নে সমাজের সর্ব নিম্ন ভিত্তি পারিবারিক বন্ধন টিকিয়ে রাখার মাধ্যমে পরিবারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টিই পরিবার দিবস পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য। দিবসটি উদযাপন পারিবারিক দায়ভার ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি প্রয়াস মাত্র।
পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকা হবে সমান। সদস্যদের অধিকার হবে সমান, মর্যাদা হবে যথাযোগ্য। কারণ পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের আয়না। বিদ্যমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মানবাধিকার ও নারীদের অগ্রগতি পরিবার দ্বারা প্রভাবিত। রাষ্ট্রের সামাজিক উন্নয়নে পরিবারের ভূমিকা ও দায়িত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
“সামাজিক ঐক্য ও পারস্পরিক নির্ভরতায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এগিয়ে যায়”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে আজ সারা বিশ্বে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালন করছে।
আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে বিশ্বের প্রতিটি পরিবারের বন্ধন দৃঢ় হোক এবং পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে সকল পরিবার সুখী হোক সেই প্রত্যাশা করছি।
বিষয়: বিবিধ
১৪১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন