ঘুর্নিঝড়-এই সময় সেই সময়
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত আকাশ ১৬ মে, ২০১৩, ১২:৩০:৫৭ দুপুর
সে সময় চ্যানেল ছিল একটা-বিটিভি।সাগরে কোন ঘুর্নিঝড়ের সৃষ্টি হলে তার আপডেট জানতে এটাই ছিল একমাত্র ভরসা। অবশ্য বাংলাদেশ বেতার ছিল, ছিল হাতের রেডিওটাকে বার কয়েক ঝাকিয়ে, দু হাতে দমাদম চড়থাপ্পড় মেরে বিবিসি শুনার চেষ্টা। শর্টয়েভ রেডিওতে বিভিন্ন ভাষার হাজারো চ্যানেল। তার মধ্যে বিবিসি বাংলা শুনতে ব্যাপক কসরত করতে হত। কখনো কখনো একটু বাতাসে চ্যানেল নড়ে গিয়ে রেডিও থেকে অদ্ভুত ভাষার গোঙ্গানী আসতো" চ্যাপু চ্যাতা না বিইয়ে দা লা"
ঘুর্নিঝড় এলে বিটিভির চেহারা আমুল বদলে যেত। সংবাদ পাঠিকা, উপস্থাপিকাদের লেবাসে ইসলামী ভাবধারা দেখা যেত, মাথায় থাকতো বিরাট ঘোমটা। অন্য সব অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে চলতো ইসলামি সংগীত "অলী আল্লাহর বাংলাদেশ এই শহীদ গাজীর বাংলাদেশ রহম করুন আল্লাহ রহম করুন আল্লাহ" কিংবা "শোন শোন ইয়া ইলাহী আমারি মোনাজাত"।বাংলাদেশ বেতারেও একই অবস্থা।
কখনো কখনো ঘুর্নিঝড়ের আশঙ্কা নিয়ে ঘুমাতে যেতাম। মাঝ্রাতে আব্বা উঠে রেডিও ধরার চেষ্টা করতেন ঘুর্নিঝড়ের খবর জানার জন্য। যদি শুনতে পেতাম, তাতে হাল জামানার টাকডুম টাকডুম সিনেমার গান বাজানো হচ্ছে, আমরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতাম। যাক বাবা! ঘূণীঝড় চলে গেছে। পরের দিন টিভির পর্দায় দেখতাম, উপস্থাপিকারা আগের চেহারায় ফিরে গেছেন। মাথায় যথারীতি ঘোমটা নেই, সাজসজ্জারো কোন কমতি নেই। আম্মা হাসতেন "আল্লাহর সাথে তামাশা!"
এখন হরেক চ্যানেলের ভিড়ে বিটিভী বড় জৌলুষহীন, সাদামাটা। তাই আর আগের মত দেখা হয়না।অন্য চ্যানেল দেখি। ভাবতে ভালোই লাগে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। "ঘুর্নিঝড় এলে মাথায় ঘোমটা দিয়ে ইসলামী সঙ্গীত, আর চলে গেলে সিনেমার গান"-আমরা আর আগের মত মুনাফেকী ষ্টাইলে চলিনা। আমরা এখন সারাক্ষনই সিনেমার গান বাজাই, ঘুর্নিঝড় থাকুক আর না থাকুক।
বিষয়: বিবিধ
১৯৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন