মাওলানা মওদুদি আল্লাহর এক অনুগত দাস এবং রসূল সে) এর আর্দশের একনিষ্ট পতাকাবাহী ।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ৩০ মার্চ, ২০১৩, ০৩:৩৫:৪৪ দুপুর
গত 26.03.2013 তারিখে মাওলানা মওদুদি সম্পর্কে “জরুরী এলান ! আল্লাহর ইসলামের পরিবর্তে জামায়াত-শিবির মওদুদির ইসলাম পালন করে, জামায়াত-শিবির মুরতাদ, নাস্তিক” বিষয়ে পর্ব-4 উল্লেখ করেছিলাম যে, মওলানা মওদুদির উপর বিদ্বেষ পোষনকারীদের অভিযোগের দালিলীক প্রমান কতটুকু সত্য তা মিলিয়ে দেখব।
এখন আমি সে বিষয়ে কিছু আলোচনা করার প্রয়াস পাব। প্রথমে বলে নেওয়া ভাল যে, আপনারা যারা এই বিষয়ে সমালোচনা করবেন কিংবা বির্তক জড়াতে চাইবেন, তাদেরকে অনুরোধ করব আপনারা আপনাদের মস্তিষ্কটি দয়া করে নিরপেক্ষ রেখে ইসলাম সম্পর্কে বুঝে মন্তব্য করবেন। কেননা মাথার মধ্যে পুর্বের কোন বিশ্বাস চুড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত রেখে অন্য কোন বিশ্বাস গ্রহণ করা যায়না। তবে মাওলানা মওদুদির ইসলাম সম্পর্কে জানার আগে আমি পৃথিবীতে সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠিত কিছু মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা করতে চাই। কেননা যারা এর বিরোধীতা করেন তাদের অধিকাংশই ভিন্ন মতাদশের্র অধিকারী , যদিও না বুঝার কারনে অনেক মুসলীম ভাই তার বিরোধীতা করে থাকেন।
মানবীয় মতবাদের অসারতা :
মানবতা অতীতে এবং বর্তমানে অনেক মতবাদ পর্যবেক্ষণ করেছে। রাজনীতিতে গনতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ ও একনায়কতন্ত্র রয়েছে ; আবার অর্থনীতিতে সামন্তবাদ, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র ও কম্যুনিজম রয়েছে। রাজনৈতিক মতবাদগুলো, রাজনীতিকে মূখ্য এবং অর্থনীতিকে গৌণ মনে করে; অপরদিকে, অর্থনৈতিক মতবাদগুলো, অর্থনীতিকে মূখ্য ও মানব জীবনের একমাত্র বুনিয়াদ মনে করে রাজনীতিকে গৌণ বিবেচনা করে। আসলে মানব জীবনকে ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন না করার ফলেই এমন ভারসাম্যহীন চিন্তা-ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথমে দেখি রোমান সমাজ ব্যবস্থা কেমন ছিল । রোমান সমাজ গোটা ইউরোপকে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছিল ,যার মুলভিত্তি ছিল দাস প্রথা। রোমানদের ছিল বিশেষ ধরনের আইন, আর অরোমানদের জন্য ছিল নিকৃষ্ট আইন। যেমন, এক আইনে ছিল, যে কোন সতী বিধবা কিংবা কুমারীর সাথে কেউ যদি অসদুদ্দেশ্য চরিতার্থ করে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক হয় তাহলে তাকে নিজ মালের অর্ধেক জরিমানা দিতে হবে এবং নীচ বংশের লোক হলে তাকে বেত্রাঘাতের পর দেশান্তর করতে হবে। রোমানরা অস্ত্রের বলে প্রভাব বলয় গড়ে তুলতে সচেষ্ট হওয়ায় এবং বিভিন্ন যুদ্ধে অসংখ্য ক্ষত-বিক্ষত হওয়ায় সর্বত্রই বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে।
সামন্তবাদী সমাজ:
এই মতবাদ রাজনৈতিক দিক দিয়ে মানুষকে চার শ্রেণীতে বিভক্ত করে তোলে।
ক) শাসক শ্রেণী , যারা সামন্তবাদের মুকুটমণি ,
খ) র্গীজার পাদ্রী ও সম্ভ্রান্ত লোক,
গ) বিভিন্ন পেশাদার শ্রেণী,
ঘ) সংখ্যাগরিষ্ট কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণী
এখানে, সামন্তপ্রভূ অভুতপুর্ব প্রভাবের অধিকারী হওয়ায় তাদের চেষ্টায় র্গীজাগুলো শক্তিশালী হয়ে ওঠে । ফলে আমরা খ্রীষ্টবাদ ইউরোপে “দুই তরবারি তত্ব’ দেখতে পাই । অর্থ্যাৎ “শাসকের প্রাপ্য শাসককে দাও আর ঈশ্বরের প্রাপ্য ঈশ্বরকে দাও।” – এই শ্লোগানের ভিত্তিতে সমাজ ব্যবস্থা প্রভাব বিস্তার করায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা রোমান শাসকদের মর্জিমত নিয়ন্ত্রিত হত। ফলে ইউরোপ সমাজে দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে 717 সালে মুসলমানদের কনষ্টান্টিনোপল ও 732 সালে ফ্রান্সের পরপটিয়া বিজয় ইউরোপের প্রচলিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পুর্ন ভেঙ্গে ফেলে।
মুসলমানদের স্পেন বিজয় ইসলামের রেঁনেসা এনে দেয়। মুসলমানরা এ সময় জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় পর্দাপন করে পৃথিবীতে নব জাগরণ সৃষ্টি করে । প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, চিকিৎসা শাস্ত্র, প্রকৌশল বিদ্যা ও জ্যোর্তিবিদ্যাসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রভুত উন্নতি সাধিত হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের আইন ও সামন্তপ্রভুদের র্গীজার অভিভাবকত্ব এ নব্য গোষ্ঠীর বিকাশে বাধা হয়ে দাড়ায়। ফলে এ দু-দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় যা বিজ্ঞান ও সমাজের সবকিছুতে বিস্তার লাভ করে র্গীজার ক্ষমতাকে খর্ব করে দেয়। এরই ফলে সমগ্র ইউরোপে নতুন এক সুর ধ্বনিত হয়, সেখানে বলা হয় রাজনীতিতে নৈতিকতার কোন স্থান নেই। আর এর উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ।
চলমান পর্ব-5
বিষয়: রাজনীতি
১৬০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন