“ রেড অ্যালার্ট ছাড়াই আল্লাহর গজব এসে যায়। তওবা করার সময় পাওয়া যায়না।”
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২৩ মার্চ, ২০১৩, ০১:০০:২৫ দুপুর
প্রতিটি নিশ্বাসে আল্লাহকে স্বরণ করতে হয়। কেননা নাক থেকে যে নিশ্বাসটি একবার বের হয়ে যায়, তা পুনরায় আবার নাকের ভিতর প্রবেশ করানোর অর্ডার মহান আল্লাহ না দিলে ঐ বাতাস আর নাকের মধ্যে নিশ্বাস হিসাবে প্রবেশ করতে পারেনা। আর শেষ নিশ্বাসটি আল্লাহর স্বরণ বঞ্চিত হলে সে হতভাগা। তাই তো আমরা দেখি স্বাভাবিক অবস্থায় কোন মানুষ যখন মারা যায়, মৃতপথযাত্রীসহ পাশে অবস্থানকারী সবাই আল্লাহর নাম নিতে থাকেন। সবার বিশ্বাস আল্লাহর নাম নিতে নিতে মানুষটি মারা গেলে পরকালে সে মুক্তি পেয়ে যাবে। এই জন্য র্সাবক্ষনিক আল্লাহর স্বরণে থাকার কথা বলা হয়েছে, যাতে করে যেকোন সময় মৃত্যু এসে যেতে পারে।
গতকাল হঠাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ টর্নেডোতে মহিলা ও শিশুসহ কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও সহস্রাধিক আহত হয়েছে। তিন মিনিটের এই টর্নেডোয় অন্তত ৫০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। হাজার হাজার পাকা-কাঁচা বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে মাটিতে মিশে যায়। বিভিন্ন কাঁচা বাড়ি উড়ে অন্য এলাকায় গিয়ে আছড়ে পড়ে। টর্নেডোর আঘাতে জেলা কারাগারের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। এছাড়া ২-৩ তলা ভবনও টর্নেডোর আঘাতে ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। টর্নেডোর ঘূর্ণিপাকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন দুমড়ে মুচড়ে পাশের খাদে গিয়ে পড়ে। গাছপালা ভেঙে পড়ায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও রেলসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুত্ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কারাগারের দেয়াল ধসে কারারক্ষীসহ আরও কয়েকজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় অর্ধশত রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজন কাপড়, খাবার, ওষুধ সরবরাহ করছে। এতে উঠতি বোরো ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা মতে , গতকাল বিকাল ৫টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, বিজয়নগর ও আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এ যাবতকালের ভয়াবহ টর্নেডো আঘাত হানে। টর্নেডোর ব্যাপারে কোনো ধরনের সতর্ক বাণী ছিল না। প্রথমে শিলাবৃষ্টি ও এর কিছুক্ষণের মধ্যেই টর্নেডোর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় একের পর এক গ্রাম। সদর উপজেলার উরশিউড়া, চিনাইর, পাঘাচং, চানপুর, রামরাইল, মাছিহাতা, সুলতানপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের ওপর ভয়াবহ টর্নেডো আঘাত হানে। মুহূর্তের মধ্যেই বিভিন্ন কাঁচা বাড়িঘরের টিনের চালসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি আকাশে উড়তে থাকে। এ সময় শিশু, নারী-পুরুষ টর্নেডোর দাপটে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গিয়ে আছড়ে পড়ে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে। টর্নেডোর ঘূর্ণিতে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন সড়কের পাশের খাদে গিয়ে পড়ে। টর্নেডোর আঘাতে বিপুলসংখ্যক ঘরের টিনের চাল ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইনে আছড়ে পড়ে। বিভিন্ন যানবাহনের ওপর বিপুলসংখ্যক গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বাসযাত্রীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা গুরুতর আহত হয়। টর্নেডোর আঘাতে বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে মহিলা ও শিশুসহ ২০ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৫০ জনকে ঢাকায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে। আহত সহস্রাধিক রোগীকে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল, আখাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রামের সড়কগুলোতে গাছগাছালি ভেঙে পড়ায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে করে বহু আহত রোগীকে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। টর্নেডোর আঘাতে জেলা কারাগারের পশ্চিম পাশের দেয়াল ধসে পড়েছে। দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে এক কারারক্ষী নিহত হয়েছে। জেল সুপার গিয়াসউদ্দিন জানান, কারাগারের পশ্চিম পাশের দেয়ালটি ভেঙে ১ জন কারারক্ষী নিহত ও অপরজন আহত হয়েছে। দেয়াল ভেঙে পড়ার পরপর কারাকর্তৃপক্ষ কারা সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন এই টর্নেডোর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলছিলেন যে,
“আমার কাছে মনে হলো যেন কিয়ামত শুরু হয়ে গেছে। পেজা তুলার মত সবকিছু উড়তেছিল, কোরআনে কিয়ামতে যে বণনা দেয়া আছে , মনে হচ্ছিল ঠিক যেন তেমন।”
কাজেই অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে মহাকালের ওপারে। যেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসতে পারবেনা। শেষ হবে সকল তাকাব্বুরী, মুহুর্ত্বে বিলীন হবে সব অহংকার। ধ্বংস হবে সকল বালাখানা, সাঙ্গ হবে সকল খেলা।
তাই বলি, ফিরে আসুন আল্লাহর পানে , ক্ষমা চাই সকল পাপের, গ্রহন করি সত্যকে, ত্যাগ করি মিথ্যাকে, ভালবাসি সবাইকে, অনুসরণ করি রসুলের, চলে যায় জান্নাতে।
বিষয়: বিবিধ
১২৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন