“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও একটি বাস্তব প্রেক্ষিত”
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১৯ মার্চ, ২০১৩, ১২:১৮:৪১ রাত
অনেক দিন থেকে ভাবছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর একটি লেখা লিখব। এটা একটি বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত পরিসরের বিষয় হওয়াই সময় করে উঠতে পারছিলাম না। যাইহোক, সম্যক ধারনা দেওয়ার জন্য কয়েকটি পর্বে লেখাটি প্রকাশ করব।
আজকাল পত্রিকার পাতা খুললে, টিভি অন করলে রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবি, লেখক, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক সবার মুখ থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ শব্দটি শুনা যায়।‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ আসলে কী? যা নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিতর্ক করে জাতিকে বিভাজন এবং দেশব্যাপী উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে আরো একটি মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছেন, যা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসাবে অনেকে অভিহিত করছেন।
ছাত্রজীবনের শুরূ থেকেই পতাকা দেখে আসছি। পতাকাকে সম্মান জানিয়ে স্কুলে কতবার জাতীয় সংগীত গেয়েছি। পতাকার বিবরনে সবুজ অংশ কি বুঝায়, লাল অংশ কী বুঝায়, তা গলদকরন করে পরীক্ষার খাতায় লিখেছি। কিন্তু বুঝতে পারিনি , পতাকায় অংকিত লাল সবুজের অর্থ কী? শাহবাগে ব্লগার ইমরান সরকার যেদিন পতাকা উত্তোলনের কর্মসুচী দিলেন এবং নিদিষ্ট দিনে উত্তোলিত পতাকা দেখে আমার কাছে মনে হলো, আমি যেন নতুন করে পতাকা দেখছি । গভীরভাবে পতাকার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, একরাশ সবুজ প্রান্তর থেকে ভেসে উঠেছে রক্তস্নাত একখন্ড ভুমি,যা থেকে আজও রক্ত ঝরছে। এদেশের ছাত্র , শ্রমিক, কৃষক, জনতাসহ খেটে খাওয়া লক্ষ লক্ষ সাধারন মানুষ তাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদেরকে এই পতাকাটি এনে দিয়েছে, এনে দিয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ । কিন্তু এর লক্ষ্য ও আদর্শের ব্যাপারে 42 বছরেও আমাদের মাঝে অর্জিত হয়নি কোন ঐকমত্য। প্রায় প্রতিটি বিষয়েই চলছে বিতর্ক, দ্বন্দ্ব, ও সংঘাত এবং পরিনামে রক্ত ক্ষয়।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর প্রথম আঘাত: পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী ছলে বলে কৌশলে পুর্ববাংলার মানুষগুলোকে কেবলমাত্র ধর্মীয় অধিকার ছাড়া সবধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে । অর্থনৈতিক শোষন, রাজনৈতিক নিপীড়ন, সাংস্কৃতিক গোলামী চাপিয়ে দিয়েছে। এক পর্যায়ে তাদের শোষন থেকে, বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে পুর্ববাংলার মানুষের মধ্যে মুক্তির চেতনা সৃষ্টি হয়েছিল। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছিল।
স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র পরিচালনার মুলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা কে যখন রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসাবে শাসনতন্ত্রে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছিল, তখন জাতিকে বোঝানো হয়েছিল, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ই হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার অঙ্গীকার,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার ছদ্ম্যবরণে এদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে ‘ইসলাম’, ‘মুসলিম, ও ‘আল্লাহর’ নাম মুছে ফেলা হলো, এমনকি হিন্দুদের বিরোধীতার মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে কোরআনের বিশ্বজনীন বানী ‘ইকরা’ বা ‘পড়’ নামটি তুলে দেয়া হলো। 90%মুসলমানের এ বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এটা ছিলনা।
চলমান পর্ব-2
বিষয়: রাজনীতি
১২৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন