বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতির কর্মীরা হিন্দু (বিজেপী) সম্প্রদায়ের মত সা্ম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিশ্বাস করেন না।(প্রথম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১৬ মার্চ, ২০১৩, ১১:০৬:১৫ রাত
https://fbcdn-sphotos-f-a.akamaihd.net/hphotos-ak-ash3/522650_432166263538010_1828267194_n.jpg
ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই।পবিত্র কুরআন, দ্বীন ইসলাম এবং ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, পৃথিবীর আর কোন ধর্মের বেলায়, সেই ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে এ ধরনের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না।
রসূল (স) এর উপর আল কোরআন নাজিলের মাধ্যমে সারা বিশ্বের জন্য রহমত করে আল্লাহ পাঠিয়েছেন আর ইসলামকে একটি পরিপুর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসাবে আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন। এটা শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য নির্দেশিকা । কাজেই এর মধ্যে যেহেতু মুসলমান , হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সবার কল্যাণ নিহিত, সেজন্য এর দ্বারা কারো ক্ষতি হতে পারেনা। অথচ, নিজেদের মনগড়া বিশ্বাসকে আল্লাহ প্রদত্ত গাইড লাইন এর উপর প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়েই হয়েছে যত বিপত্তি।
বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তি কর্তৃক মুসলমান নির্যাতিত :
হিন্দু সম্প্রদায়ের উত্থানঃ বাংলায় এসে কোম্পানির সুচতুরকর্মচারীগণ রাজধানী মুর্শিদাবাদের প্রাসাদ ষড়ষন্ত্রের ধারাটি গভীর আগ্রহের সঙ্গে লক্ষ্য করেন। এই ষড়ষন্ত্র কিংবা বিশ্বাসঘাতকদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। মানিকচাঁদ, রায়দুলভ, উমিচাঁদ, জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, নন্দকুমার, রাম নারায়ণ, কৃষ্ণচন্দ্র,ও মুসলিমদের মধ্যে মীরজাফর , ঘসেটি বেগম অন্যতম। রবার্ট ক্লাইভ এদের সহায়তায় 1957 সালে পলাশির যুদ্ধে নবাবকে পরাজিত করে মীরজাফরকে ক্ষমতায় বসায়। মীরজাফর ছিল পুতুল নবাব ।তাই নবাবের পতনের পর ব্রিটিশ বেনিয়ারা ভালভাবেই বুঝেছিল যে, ভারতীয় উপমহাদেশে নিষ্কণ্টক শাসন ব্যবস্থা বজায় রাখতে বড় বাধা হবে মুসলীম সম্প্রদায়। তাই তারা মুসলমানদেরকে দমিয়ে রাখার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়কে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে হাত করে নেয়। ইংরেজ সরকার যখন সরকারী ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ইংরেজি প্রচলন করেন, তখন হিন্দু সম্প্রদায় নির্দিধায় ইংরেজী শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়ে। যার ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত এক আমলাতান্ত্রিক এলিট গোষ্ঠির উদ্ভব ঘটে। অপরদিকে, হারানো ঐতিহ্য উদ্ধারে মুসলমানেরা ইংরেজ শিক্ষাকে ঘৃণাভরে বর্জন করে এবং সরকারের সাথে বিরোধে লিপ্ত হয়। ফলশ্রতিতে ইংরেজরা তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে একচেটিয়া হিন্দু সম্প্রদায়কে প্রাধান্য দেয় , এই অবস্থায় ইংরেজদের আনুকুল্যে হিন্দুরা শিক্ষা-দীক্ষা, চাকুরী সব দিক দিয়ে সরকারের বড় বড় পজিশন দখল করে নেয়। 1901 সালের শুমারীতে দেখা যায় যে, তৎকালীন বঙ্গদেশে উচ্চবর্ণের হিন্দুগণ মোট জনসংখ্যার মাত্র 10.68% হয়েও সরকারী চাকুরীর 82.2% ভাগে অধিষ্ঠিত ছিল।
কোম্পানীর শাসনামলে বিদেশী বণিক ও পুঁজিপতির অবাধ শোষণ ও নির্যাতণ হতে পরিত্রাণের আশায় শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের পথ বেছে নেয়। ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকল মজলুম বা নিপীড়িত জনসাধারন ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে। ধর্মীয় বিদ্বেষ বা সাম্প্রদায়িক রেষারষি তখন পর্যন্ত ঐক্যের মুলে ফাটল ধরায়নি। তাই তো দেখা যায় 1857 সালে সিপাহী বিপ্লবে ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকল সিপাহী একজোট হয়ে বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছিল।
কিন্তু সুচতুর ইংরেজরা সিপাহীবিপ্লব মোকাবেলায় বুঝে গেল হিন্দু –মুসলমান যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ততদিন দাপটের সাথে ভারত শাসন করা সম্ভব হবেনা। তাই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে (Policy of divide rule) বিভেদকরণের পথ বেছে নেয়। এক্ষেত্রেও সেই একই নীতি অর্থ্যাৎ যেসব মুসলিম সৈনিক সিপাহী বিপ্লবে নেতৃত্ব দান করেছিলেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হয়।
চলমান পাতা-2
বিষয়: রাজনীতি
১৩০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন