‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের রণহুংকারে গৃহযুদ্ধের ডাক দিলেন শেখ হাছিনা।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৮ মার্চ, ২০১৩, ০৪:০৪:৪৮ বিকাল
“ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের জন্য ডিসিদের কাছে চিঠি পাঠাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই কমিটিতে আলেম, ওলামা ও মসজিদের ঈমামসহ সর্বস্তরের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস চালাবে তাদের পর্যবেক্ষণ এবং নাম-ঠিকানা শনাক্ত করার জন্য আওয়ামীলীগসহ সমমনা দলগুলোকে পরামর্শ দেন।
বিএনপিকে নয়া পাকিস্তানের দালাল হিসেবে শেখ হাসিনা আখ্যায়িত করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মদ, জুয়ার লাইসেন্স বাতিল করলেও জিয়াউর রহমান তা চালু করেন। মুখে ধর্মের দোহাই দিয়ে সকল বিধর্মী কাজ করেন। এখন আবার একই কাজ তারা করছে। জায়নামাজে আগুন দিচ্ছে, জুমার নামাজ শেষ হওয়ার আগেই ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। পুলিশসহ সারাদেশে মানুষ খুন, দেশের সম্পদ ক্ষতি করছে ”
শেখ হাছিনা পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় যে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের ডাক দিলেন , সেই কমিটিতে কে থাকবেন ? মসজিদে, মসজিদে যে ‘কমিটি’ গঠনের ডাক দিলেন , সেই কমিটিতে কে থাকবেন ? নিশ্চয়ই এ সকল কমিটিতে থাকবেন হয়ত আমার কিংবা আপনার বাবা, ভাই, চাচা, মামা, খালু অথবা এলাকার কোন মুরব্বী।
ব্রিটিশ আমলে মুসলিম পরিচয়ে উপরোক্ত স্বজনরা একসঙ্গে এলাকায় বসবাস করেছেন, একসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়েছেন । পাকিস্তান আমলেও মুসলিম পরিচয়ে এরা একসঙ্গে এলাকায় বসবাস করেছেন এবং একসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়েছেন ।বাংলাদেশ সৃষ্টির পর বিভিন্ন দল সৃষ্টি হলে এরাও বিভিন্ন দলের সমথক হয়ে যান । তবে সামাজিক ভাবে একসঙ্গে এলাকায় বসবাস করছেন এবং একসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়ছেন ।নির্বাচনের সময় বিভিন্ন দলের সমথক হিসাবে ভোট প্রদান করেন।আবার ভোট শেষে সামাজিক মানুষ হিসাবে একই বেঞ্চে বসে চা, বিস্কিট খেয়ে থাকেন।এটাই চিরকাল দেখি আসছি।
কিন্তু শেখ হাসিনা এখন কী করতে চাচ্ছেন ? গ্রামে গঞ্জে আবহমানবাল থেকে চলে আসা সেই সৌহার্দোপুর্ন পরিবেশকে তিনি নষ্ট করতে চান। তিনি রাজপথের রাজনীতি গ্রামে গঞ্জে টেনে নিতে চান ।রাজপথের হত্যা, রাহাজানি, লগি বৈঠার আন্দোলন নির্মল পরিবেশে পৌছে দিতে তৎপর হয়েছেন।আমরা জানি, কৃষিনির্ভর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সহজ সরল। তারা কায়িক পরিশ্রম করে দিনাতিপাত করেন এবং উদ্বৃত্ত খাদ্য শহর এলাকার মানুষের জন্য সরবরাহ করে থাকেন। তারা রাজার আর রাজনীতির এত ঘোরপ্যাঁচ বোঝেনা।সেই মানুষগুলোকে রাজনৈতিক সংঘাতে জড়ানোর জন্য এক সুগভীর চক্রান্ত শুরু করেছেন।তিনি সারাদেশে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের মাধ্যমে ভাইয়ে-ভাইয়ে, পিতা-সন্তানে, মা-বাবায় দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চান।কেননা বাংলাদেশে এখন অধিকাংশ পরিবার এ লক্ষ্য করা যায় যে, একই পরিবারের সদস্য ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী।রাজনৈতিক সমথর্নের প্রশ্নে তাদের মধ্যে আপোষ নেই।
এই অবস্থায় গত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, বিরোধী দলের কমপক্ষে 38 শতাংশ সমর্থক রয়েছে।সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতায় সেই সমর্থন এখন 75 ভাগে উন্নত হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবী।এমতাবস্থায়, বিভিন্ন এলাকায় ও মসজিদে মসজিদে কমিটি গঠনের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং জামায়াত-শিবিরকে সন্ত্রাসী হিসাবে চিহিৃত করে তাদেরকে মোকাবেলা করার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে, এতে নিশ্চিত দেশ একটি গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাবে। কারন কে কার বিরোদ্ধে দাড়াবে ? ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে আমি কী আমার বাবার গায়ে লাঠি মারব ? আমি আমার ভাইকে খুন করব কী ? আমার দাদা বি এন পি অথবা জামায়াত করে , শেখ হাসিনার নিদের্শ মোতাবেক আমি কী আমার দাদা কে মসজিদ থেকে বের করে দিব ? তাহলে কেন এমন নিদের্শ দিলেন।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আরোহন করার পর থেকে অদ্যবধি বিরোধীদলের হাজার হাজার কর্মীকে পুলিশ দ্বারা পিটিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের কারাগারে এখন আর জায়গার নেই। এর পরও প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মী এরেষ্ট করে কারাগারে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে।ঘুমানোর জায়গা না থাকায় ঘুমাতে পারেনা, টাকা না দিলে গোসলের পানি দৌয়া হয়না, ঠিকমত খাইতে দেয়া হয়না, অথচ সরকার শেয়ার মার্কেটের 86 হাজার কোটি টাকা লুট করে, কুইক রেন্টাল বিদ্যুত নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুণীর্তি করে, ডেসটিনের টাকা চুরি করে, হল মার্কের 3500 কোটি টাকা দুণীর্তি করে আরাম-আয়াসে জীবন যাপন করছেন। আর সেই টাকার কিছু কিছু অংশ শাহবাগী গণজাগরণমঞ্চে ও মিডিয়াকে দান করে সরকারের মুখপাত্র বানিয়ে রেখেছেন।
যা বলছিলাম এই নির্যাতিত ,লাঞ্চিত, বঞ্চিত, মানুষগুলো এই বাংলাদেশের, এই সমাজের সন্তান।এরা আর নির্যাতিত হতে রাজী নয়। শেখ হাসিনার হাতে অনেক রক্ত লেগেছে। এই রক্তের ঋণ আপনাকে পরিশোধ করতে হবে। আপনার পিতা সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন। আল্লাহ আপনাকে আর আপনার বোনকে দুরে রেখে সুযোগ দিয়েছিল মানুষের সেবা করে পাপ মোচন করার । কিন্তু আপনি সেই পথে না গিয়ে আল্লাহ ও তার রসূল (স) কে অবমাননা কারীদের পক্ষ অবলম্বন করে ইসলামপ্রিয় মানুষকে প্রতিনিয়ত হত্যা, নির্যাতন করছেন। কাজেই বন্ধ করুন আপনার নীল নকঁশা , থামান আপনার জিঘাংসু। নতুবা জেনে রাখুন, এর জন্য আপনাকে কঠিন মুল্য দিতে হবে, তখন আপনার পাশে কাউকে পাবেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন