“ গণজাগরণমঞ্চওয়ালাদের কাছে নামাজের চেয়ে আযানের গুরুত্ব বেশী ” শেখ হাসিনা এই পদ্ধতিকে বাহবা দিচ্ছেন।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৭ মার্চ, ২০১৩, ১০:৫৯:৩৮ রাত
1971 সালের প্রথম মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ধর্মীয় দলগুলো নামাযের আযান শুরু হলে নামাযের জন্য প্রগাম বিরতি দিয়ে নামায পড়ে নেন।ধর্মীয় ছাড়াও অন্যান্য দলগুলো (আওয়ামীলীগ ও বামদল ব্যতীত) অন্তত নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রগাম বিরতি দেন।কেননা নামায না পড়লেও নামাযকে সম্মান দেখিয়ে এই বিরতি দেন বলে আমার মনে হয়।
কিন্তু দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সৈনিকেরা (কথিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ) অর্থ্যাৎ গণজাগরণমঞ্চওয়ালাদের নিকট শুরুর দিকে আযান ও নামায নিয়ে কোন মাথা ব্যথা ছিলনা।কখন আযান হচ্ছে, কিংবা কখন নামায হবে, এ ব্যাপারে কোন চিন্তাও ছিলনা, কোন পরিকল্পনাও ছিলনা।কিন্তু সময় ও অবস্থার পরিবর্তনে এখন এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে । গণজাগরণমঞ্চের ব্লগার নাস্তিক রাজীব ইসলামের মৌলিক বিষয় আল্লাহ ও রসূল (স) কে নিয়ে কুরুচিপুণ কটুক্তি করেছেন, যার জন্য সারা বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ।90% মুসলমানের এ দেশে কতিপয় ব্লগাররা আল্লাহ ও রসূল(স)কে নিয়ে কটুক্তি করবেন, এটা মেনে নেওয়া যায়না। তাই শাহবাগে অবস্থিত গণজাগরণমঞ্চের প্রতি স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে।এর থেকে পরিত্রাণের জন্য নামাযের আযান শুনা গেলে আযানের জন্য বিরতি দিয়ে সাধারন মানুষকে বুঝানোর একটি প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে যে, গণজাগরণমঞ্চ ইসলামের বাইরে নয়।কিন্তু হৃদয়ে ইসলাম না থাকলে জোর করে কী ইসলাম পালন করা যায় ? তাই আযানের পর নামায অনুষ্ঠিত হয় সেটা উনারা ভুলে গিয়েছেন ।আজকে 7 র্মাচ, সোরওয়ার্দী উদ্যাণে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সৈনিকেরা ঘোষণা দিলেন,এখন মাগরিবের আযানের বিরতি , আযান শেষ হলে আমাদের কর্মসূচী আবার শুরু হবে।ঠিক তাই,কর্মসূচী শুরু হয়ে গেল কিন্তু নামায পড়ার জন্য আর কোন সময় দেয়া হলো না ।এ অবস্থা দেখে আপনাদের কী মনে হয় ? এটা কী ধম পালন, না ধম নিয়ে ব্যবসা ?
আম-রাম ও বামরা সব সময় বলে এসেছেন,ধম একটি পবিত্র জিনিস, ধম নিয়ে কোন রাজনীতি কিংবা ব্যবসা করতে দেয়া হবেনা।পবিত্র জিনিস রাজনীতির মধ্যে আসবে কেন ? ধম থাকবে ধমের জায়গায় , তাকে কেন রাজপথে টেনে আনা হবে ? রাজধানীর সোরওয়ার্দী উদ্যাণে সাধারন মানুষকে বুঝানোর জন্য নামায বাদ দিয়ে আযানের জন্য বিরতি দিয়ে যে ধম পালন করা হলো , সেটা কী ধম নিয়ে ব্যবসা নয় ?
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচণের আগে পবিত্র মক্কায় গিয়ে হজ্জব্রত পালন করে মাথায় ফেটি বেঁধে সাধারণ মানুষের কাছে ভোট প্রার্থণা করেছিলেন। জনগণ তাকে ইসলামের খাদেম ভেবে ক্ষমতায় এনেছিলেন । ক্ষমতায় আরোহন করে তিনি বেমালুম ভুলে গেলেন মাথায় ফেটি বাধার কথা। সংবিধানের মূলনীতি “আল্লাহর উপর র্পুন আস্থা ও বিশ্বাস” তুলে দিয়ে ধমনিরপেক্ষতা জুড়ে দিয়েছেন। ধমনিরপেক্ষ মতবাদ কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামপ্রিয় মানুষের উপর হত্যা, নির্যাতণ, গুম,করে তার বাবার মত বাকশাল প্রতিষ্টার স্বপ্ন দেখছেন।বায়তুল মোকারম মসজিদে গুলি চালিয়ে মুছুল্লিদেরকে হত্যা করেছে।আবার সাধারন মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝে মাঝে মাঝে ধমের কথাও বলছেন।এটা কী ধম নিয়ে ব্যবসা নয় ?
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ম্যাকিয়াভেলীকে `A devil in disguise’ (ছদ্মবেশী শয়তান) বলে অভিহিত করা হয়।তিনি শাসকের গুনাবলী বণর্না করেছেন এভাবে- A prince should be combined two qualities like fox and a lion. অর্থ্যাৎ একজন শাসকের দুটি গুন থাকবে, তার একটি হল, শিয়ালের মত র্ধুত হবে আর সিংহের মত সাহসী হবে।
রাজনীতিতে শেখ হাছিনা এই নীতি গ্রহণ করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ধমের আশ্রয়, ক্ষমতায় আরোহন করে ধম নিধন-তিনি ম্যাকিয়াভেলীর চরিত্র অনুসরন করেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা মুনাফিকের লক্ষন।সুদ , ঘুষ, যেনা , ব্যাভীচারী, র্দুণীতি, টেন্ডারবাজী করে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করে হজ্জ সম্পাদন করে, অথবা বিভিন্ন জায়গায় মিলাদ মাহফিল করে নিজেকে মাঝে মাঝে ইসলামের খাদেম হিসাবে জাহির করবেন, এটা ইসলামের পথ নয়।আল্লাহ ইসলাম একটি পরিপুন জীবন ব্যবস্থা হিসাবে ঘোষনা দিয়েছেন।।এর মধ্যে পরিবার সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি সবই বিদ্যামান।মানুষের চলার পথে যা যা প্রয়োজন , তার সকল সমস্যার সুস্পষ্ট সমাধান রয়েছে ইসলামে।
ইসলামে রাজনীতি রয়েছে।আল্লাহর রসূল (স) স্বয়ং এই রাজনীতি করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন ।র্বতমানে যারা ধর্মীয় রাজনীতি করেন, তারা রসূল (স) এর পদ্ধতি অনুসরন করে আল্লাহর জমীনে তার দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার কাজে সর্বদা নিয়োজিত। এদেরকে হত্যা করার জন্য আপনি যে র্টাগেট নিয়েছেন, তাতে এরা কেউ হারবে না বরং এরা বিজয়ী হবে । আপনি অন্তত এটা স্বীকার করবেন যে, সবাইকে একদিন মরতে হবে।সেই মৃত্যুটা যদি আল্লাহর পথে হয়, আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী এদের পরাজিত হওয়ার কিছু নেই।কেননা আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহর পথে যারা নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা মৃত বলোনা।” তাই তো দেখেন, আপনার নিদের্শে পুলিশ শরাহত পাখির ন্যায় এদেরকে হত্যা করছে, আর এরা রক্তমাখা শরীর নিয়ে হাঁসতে হাঁসতে শাহাদাতের পেয়ালা হাতে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হচ্ছে। একটু চিন্তা করুন, যারা মারা যাচ্ছে, তাদের পরিবারেও নেই কোন আফসোস বরং তাদের পরিবারগুলোও এর জন্য গর্বিত।কারন তারা জানে, শহীদের বাবা মা হওয়ার জন্য কাল কিয়ামতের মাঠে নাজাতের ফায়সালা হয়ে যাবে।
আপনাকে বুঝতে হবে, হত্যা করে , জেল জুলুম দিয়ে, নির্যাতন করে ইসলামী আন্দোলনকে থামানো যায়না ।
রাম-বামসহ আপনি এই ব্যবস্থাকে ভয় পান ।ভয় আবু জেহেল, আবু লাহাব এরাও পেয়েছিল।তাদেরও পতন হয়েছে। আপনারও পতন হবে।আপনার ঘুম এখন হারাম হয়ে গেছে, তাই বাংলাদেশের হাজারো সমস্যা আড়াল করার জন্য 42 বছর আগে সংঘঠিত যুদ্ধ অপরাধীর ধুয়া তুলে জাতিকে দুভাগে বিভক্ত করে ফেলেছেন। নাস্তিকদেরকে আঁচলে ঠাই দিয়ে খোদাভীরুদেরকে দুরে ছুঁড়ে ফেলেছেন।যে রসূল (স)আপনার মুক্তির দিশারী, সেই রসূলকে অসম্মান করা হয়েছে , আপনি তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন । এটা আল্লাহ সইবে কেন ? তাইতো শুরু হয়েছে আপনার পতনের বাঁশি । ইতিহাসের র্নিমম শিক্ষা এটাই। আল্লাহ কোন জালিমকে সাহায্য করেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন