“অগ্নি পরীক্ষায় নিখাদ প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক”
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৬ মে, ২০১৫, ১১:১৬:৫৩ রাত
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর’ বিপ্লবী এই আওয়াজ উচ্চারণ করেছিলেন, তখনো ঠিক এই একই অবস্থা ও পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিলো। ঘোষক জেনে বুঝেই ঘোষণা দিয়েছিলেন। শ্রোতারাও বুঝতে পারছিলো কি কথা
তাদের জন্য । ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে! তাই এই ঘোষণার যে দিকটি যাকে আঘাত করেছে, সেই এটাকে নিভিয়ে দেয়ার জন্যে উদ্যত হয়ে উঠেছে । পোপ ও ঠাকুররা দেখলো এ আওয়াজ তাদের পৌরহিত্যের জন্য বিপজ্জনক। জমিদার মহাজনরা দেখলো তাদের অর্থ সম্পদের জন্য বিপজ্জনক , অবৈধ উপার্জনকারীরা দেখলো তাদের অবৈধ উপার্জনের জন্য বিপজ্জনক, গোষ্ঠী পূজারীরা দেখলো গোষ্ঠীগত শ্রেষ্ঠত্বের জন্য (racial supererioty) বিপজ্জনক, জাতি পূজারীরা দেখলো জাতীয়তাবাদের পূর্বপুরুষদের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পথ ও মতের জন্য বিপজ্জনক।
মোটকথা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর’ বিপ্লবী আওয়াজ শুনে সব ধরণের মূর্তি পূজারীরা নিজ নিজ মূর্তি বিচূর্ণ হবার ভয়ে আতংকিত হয়ে উঠলো। তাই এতোদিন পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধোমত্ত থাকা সত্ত্বেও এখন সকল কুফুরী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেলো। ‘আল কুফরু মিল্লাতুন ওয়াহিদাহ’ এই নীতি কথাটি তারা বাস্তবে রূপ দিলো। এক নতুন আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে তারা সমবেত হয়ে গেলো এক প্লাটফরমে। গঠন করলো ঐক্যজোট।
এই কঠিন অবস্থাতে মুহাম্মদ (সা.) এর সাথী কেবল তারাই হলো, যাদের ধ্যান ধারণা ও মনমগজ ছিলো পরিষ্কার ও পরিশুদ্ধ। যাদের মধ্যে যোগ্যতা ছিলো সত্যকে বুঝবার এবং গ্রহণ করবার। যাদের মধ্যে সত্যপ্রিয়তা ছিলো এতোটা প্রবল যে, সত্য উপলব্ধির পর সে জন্যে অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দেবার এবং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবার জন্যে তারা ছিলো সদা প্রস্তুত। এই মহান আন্দোলনের জন্যে এই ধরণের লোকদেরই ছিলো প্রয়োজন। এ ধরণের লোকেরা দু’একজন করে আন্দোলনে আসতে থাকে। সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে সংঘাত।
অতঃপর কারো রুজি রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। কাউকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। কেউ আপনজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কারো ছুটে যায় বন্ধু, কারো হিতাকাংখী। কারো উপরে আসে মারধর। কাউকেও করা হয় জিঞ্জিরাবদ্ধ। কাউকে পাথর চাপা দিয়ে শুইয়ে রাখা হয় তপ্ত বালুকার উপর। কাউকেও জর্জরিত করা হয় গালি দিয়ে, কাউকেও বা পাথর দিয়ে। উৎপাটিত করা হয় কারো চোখ। বিচূর্ণ করা হয় কারো শির। নারী, সম্পদ, ক্ষমতা, নেতৃত্ব এবং সকল প্রকার লোভনীয় জিনিস দিয়ে খরিদ করার চেষ্টাও করা হয় কাউকে। এই সকল অগ্নিপরীক্ষা ইসলামী আন্দোলনের উপরে এসেছে। আসা জরুরী ছিলো। এগুলো ছাড়া ইসলামী আন্দোলন না মজবুত হতে পারতো, আর না পারতো ক্রমবিকাশ ও প্রসার লাভ করতে
বিষয়: বিবিধ
১৪১৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঈমানি ঘোষনা দেয়ার সাথে সাথেই উনাদের জীবনে নেমে এসেছিলো নির্বিচার নির্যাতন! এভাবেই ঈমানের দাবিতে কারা সত্যবাদি আল্লাহ বিশ্ববাসীকে উদাহরন হিসেবে দেখিয়ে দিয়েছেন! আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা আছে এতে অথচ আমরা আজ কতো আরামে ইসলাম পালন করছি!
শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন