প্রিয় তাবলীগ ভাইয়েরা, আল্লাহ ও রসূল (স) এর উপর কটুক্তি করলে আপনাদের ঈমানে আঘাত লাগে কী ?

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৫ মার্চ, ২০১৩, ১১:৫৬:০০ রাত



হযরত আনাস( রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রসূল (স) বলেছেনঃ ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কোন ব্যক্তি মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতামাতা,সন্তান-সন্ততি ও সমস্ত মানুষের তুলনায় অধিক প্রিয় না হয়।"( মিশকাত)।

অন্য একটি হাদিস আছে,

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর( রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রসূল (স) বলেছেনঃ ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন না তার ইচ্ছা ও খায়েস সে শরীয়তের পূর্ণ অনুগত হয়ে যায়, যা নিয়ে আমি প্রেরীত হয়েছি।"( মিশকাত )।

অপরদিকে আল্লাহ কোরআনে বলেছেন,

It is not for a believer, man or woman, when Allâh and His Messenger have decreed a matter that they should have any option in their decision. And whoever disobeys Allâh and His Messenger, he has indeed strayed in a plain error.(সূরা আহযাব-৩৬)

আল্লাহ তার উম্মতকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য রসূল (স) এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম র্আদশ।”

রসূল (স)এর সর্বোত্তম র্আদশ অনুসরণের মাধ্যমে কী করতে হবে ?

রসূল (স)এর সর্বোত্তম র্আদশ অনুসরণের মাধ্যমে কী করতে হবে আল্লাহ সে বিষয়ে সূরা সূরা ছফ এর 9 নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন।তিনি বলেছেন,

“ আল্লাহ সত্য দ্বীন ও হেদায়েত সহকারে রসূল (স) কে প্রেরণ করেছেন, যাতে কিনা সকল বাতিল মতাদর্শের উপর আল কোরআনকে বিজয়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।এতে মুশরিকগন যতই অপছন্দ করুক না কেন?”(সূরা ছফ-9)

ইতিহাস সাক্ষী দেয় দুনিয়ার বুকে যখন বাতিল মতার্দশের উপর “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু- এর আওয়াজ বুলন্দ হয়েছে, তখনই তিন শ্রেণীর লোক বিদ্রোহ ঘোষনা করেছে।

ক) ক্ষমতাশীন মহল, খ) অর্থনৈতিক শোষনের দল,(সুযোগ সন্ধানী গ্রুপ) গ) ধর্মব্যবসায়ী মহল

মহানবী (স) এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নির্মল, নিষ্কলংক চরিত্রের অধিকারী, বিশ্বস্ততার প্রতীক রসূল (স) সমাজে আল্লাহর বিধিবিধান প্রতিষ্ঠার্থে উপরোক্ত তিন শ্রেণীর নিকট থেকে প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।গোটা সমাজ ইট, পাথর, লাঠি নিয়ে ছুটে এসেছে। শুরু করেছিল নির্যাতনের এক করুন অধ্যায় এবং শেষ পর্যন্ত তার প্রিয় জন্মভুমি থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়েছিল।

ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয় –এটা রসূল (স) এ জীবনে ঘটেছে।তাই আজও যদি কেউ তার দেখানো পথে দাওয়াত প্রদান করে , তাহলে নিঃসন্দেহে তিন শ্রেণীর লোকের নিকট থেকে বাধাপ্রাপ্ত হবে।

রসূল (স) এর আর্দশ অনুসরনের মধ্যেই ইহকালী শান্তি ও পরকালীন মুক্তি রয়েছে।রসূল (স) এর জীবন ছিল 63 বছরের সমষ্টি। এই 63 বছরের জীবনে যা যা সংঘঠিত হয়েছে , কোন ব্যক্তি যদি নিজেকে মুসলমান দাবী করে, তাহলে তার জীবনেও রসূল (স) এর জীবনে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো ঘটতে বাধ্য। কেননা কিয়ামতের আগ পর্যন্ত উপরোক্ত তিন শ্রেণীর লোক বিদ্যমান থাকবে। নিজেকে মুসলমান দাবী করব, রসূলের পথে চলব অথচ বাধা আসবে না এমনটি কখনও হতে পারে না অন্তত আল কোরআনের শাসন কায়েম হবার পুব পর্যন্ত। আর যদি বাধা না আসে , তাহলে ধরে নিতে হবে ঐ তিন শ্রেণীর সাথে আপোষ করে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া হয় । এই দাওয়াত কখনও রসূল (স)এর দেখানো পথ নয়। এটা অবশ্য ভ্রান্ত পথ।

আমাদের তাবলীগের ভাইয়েরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ঈমান ও আমলের মেহনত করে থাকেন।মসজিদের ফরয নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে অহরহ ঘোষনা আসে, “ একটি জরুরী এলান শুনি ভাই, নামাযন্তে ঈমান ও আমল নিয়ে গুরুত্বপুর্ণ বয়ান হবে, আমরা সবাই বসে যাই , বহুত ফায়দা হবে।”

আমরা অনেকে বসি, আবার অনেকে বসি না । তাবলীগের ভাইয়েরা সারা জীবন এই বয়ান শুনে থাকে। এক সময় শুনতে শুনতে দুনিয়া ছেড়ে চলেও যায়। কিন্তু এদের জীবনে আর রসূল (স) এর মক্কা ও মদীনা আসেনা ।

তাবলীগের ভাইয়েরা অনেক সময় বলে থাকেন, তারা মক্কার জীবনের ইসলাম পালন করে থাকেন। তাদের এই যুক্তিও আমি মিলাতে পারিনা। কেননা, মক্কাতে যখন রসূল (স) কালিমার দাওয়াত দিয়েছিলেন, তখনও উপরোক্ত তিন শ্রেণীর নিকট থেকে প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। আমরা দেখেছি, হযরত সুমাইয়া (রা)এর শাহাদত, হযরত বেলাল (রা),হযরত খাব্বাব (রা) এর উপর অত্যাচার তো মক্কাতেই হয়েছিল । সমাজচ্যুত হওয়া, উপবাস থাকা এগুলোও তো মক্কাতেই ঘটেছিল। তাহলে আমাদের তাবলীগের ভাইদের কালিমার দাওয়াতে বাধা আসেনা কেন? যেহেতু বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র নয়, সেহেতু এর কর্ণধারেরা তিন শ্রেণীর অংশ। দ্বীন ইসলাম প্রচারে উল্লেখিত তিন শ্রেণীর নিকট থেকে বাধার পরিবর্তে টাকা-পয়সাসহ অনেক সুযোগ সুবিধা পায় কেন ?

তাহলে কী ধরে নিব , আমাদের তাবলীগের ভাইয়েরা রসূল (স) এর চাইতেও আরো উন্নত পদ্ধতিতে ইসলামের দাওয়াত চালিয়ে যাচ্ছেন( নাউযুবিল্লাহ)। এটা তো হওয়ার কথা নই । কেননা আল্লাহ তায়ালা রসূল (স) কে সর্ব্বোচ্চ যোগ্যতা দিয়ে প্রেরণ করেছেন। হাদিসে এসেছে, তার চেহারা দেখলে মানুষের মধ্যে ভালবাসার উদ্রেক হত। তার সাথে কেউ কথা বললে আপন হয়ে যেত।আল্লাহ অপমানিত হবেন-এমন বিষয় ছাড়া কারো উপর তিনি রাগ করতেন না।এমন ব্যক্তির তুলনা শুধু তিনিই।

তাহলে আসল ব্যাপারটি কী ?

আমি একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করি।একদিন তাবলীগের ভাইয়েরা তাদের গাস্তে বেরিয়ে আমাকে ঈমান ও আমলের আলোচনায় বসার দাওয়াত দিলেন। বাংলাদেশে তখন কুখ্যাত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন এর বিরোদ্ধে ইসলামপ্রিয় মানুষগুলো রাজপথে মিছিল করছে।

আমাকে বলা হল ভাই, আপনার নাম কী ? নামটি মুসলিম হওয়ায় তারা আল হামদুলিল্লাহ বললেন। এরপর বললেন, ভাই আমরা তো মুসলমান , আর মুসলমান হিসাবে সবারই নামাজ পড়া দরকার। আমি উত্তরে বললাম, জি ভাই, আমি নামাজ পড়ি।এরপর বললেন, মাগরিবের নামাজ অমুক মসজিদে পড়ুন, সেখানে ঈমান ও আমল নিয়ে গুরুত্বপুর্ণ বয়ান হবে, শুনলে বহুত সওয়াব হবে।আসবেন তো ? আমি তাদের কে বললাম, আমি তো খুব ব্যস্ত মানুষ, ঈমান ও আমল সম্পর্কে আমাকে এখানেই একটু শুনান। উনারা বললেন এটা মসজিদে বয়ান হবে। আপনি মসজিদে আসুন।

তখন আমি তাদের কে বললাম ভাইয়েরা । আমি কিছু আপনাদের বলতে চাই , যদি আপনারা শুনেন। কুখ্যাত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন এর নাম জানেন কিনা তা জিজ্ঞাসা করলাম । তারা বললেন, উনি একজন খারাপ মহিলা। আমি বললাম , তিনি রসূল (স) এর চরিত্র নিয়ে, আল কোরআন নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। এতে আমাদের ঈমান আকিদায় আঘাত লেগেছে । চলুন, সরকারের কাছে তার বিচার চেয়ে আন্দোলন করি, মিছিল করি। তারা বললেন, তিনি কী বলেছেন ? তখন আমি হুবহু তাসলিমার মন্তব্যটি তাদের কে শুনালাম।

“ I am not favour of minor change of Quran. It serve no purpose. It should be revised throughly.

অর্থ্যাৎ আমি কোরআনের ছোট-খাটো পরিবতর্নে বিশ্বাসী নই, ইহাতে উদ্দেশ্য হাসিল হবেনা। আমি এর পুরো পুরি পরিবর্তন চাই।

মন্তব্য শুনিয়ে বললাম, ভাইয়েরা এই মহিলা আল্লাহর কোরআন পরিবর্তন করতে চাই, এটা আমাদের ঈমানের উপর আঘাত। কাজেই যে ঈমান আমলের ব্যাপারে আপনারা দাওয়াত দিচ্ছেন, সেই ঈমানকে রক্ষার জন্য প্রতিবাদ জানানো এখন ফরজ।তখন তাদের আমীর বললেন, ভাই, এগুলো রাজণীতির কথা। আমরা রাজনীতি করিনা । এই কথা বলে তারা চলে গেলেন।

তাবলীগের ভাইদেরকে আমি বলিতে চাই, দেশে এখন ঈমান আকিদার উপর আঘাত এসেছে, আল্লাহ ও তার প্রিয় রসীল (স) এর উপর কটুক্তি করা হচ্ছে, ইসলাম প্রিয় মানুষদেরকে সরাহত পাখির মত হত্যা করা হচ্ছে, সবাই না হোক আপনাদের মধ্যেও বেশ কিছু মানুষ মওলানা সাঈদীকে ভালবাসেন বলে আমার বিশ্বাস , সেই মওলানা সাঈদীকে বিনা অপরাধে ফাঁসির দেওয়া হয়েছে, অথচ যারা আল্লাহ ও তার প্রিয় রসীল (স) এর উপর কটুক্তি করল, তাদের বহাল তবিয়তে সরকার প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছে। শাহবাগে গনজাগরণ এর ধুয়া তুলে কী হচ্ছে তা হয়ত কমবেশী জানেন।

আল্লাহ ও তার প্রিয় রসীল (স) এর উপর নুন্যতম ভালবাসা থাকলে কোন মুমিন এর পক্ষে ঘরে বসে থাকা সম্ভব না।ইসলামের উপর যে আঘাত এসেছে , এখন যদি তার প্রতিরোধে এগিয়ে না আসেন , তবে আর কবে আসবেন ? না মসজিদের মধ্যে শুধু বয়ান শুনতে শুনতে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবেন। এতদিন ধরে যে ঈমান মজবুত করলেন তার পরীক্ষা দেবেন কবে ? আর ঈমানের পরিক্ষায় পাশ না করে কখনও জান্নাতের আশা করা যায়না।

আল্লাহ বলেছেন,

"কখন এমনটি ঘটেনি যে, আমি কোন জনপদে কোন সতর্ককারী পাঠিয়েছি এবং সেই জনপদের সমৃদ্ধিশালী লোকেরা একথা বলেনি যে, তোমরা যে বক্তব্য নিয়ে এসেছ আমরা তা মানি না।" (৩৪:৩৪)

অনেক প্রাচুর্য এবং নেয়ামতে মত্ত থেকে যুগে যুগে অত্যাচারী শাসক ঈমানদারদের নির্যাতন চালিয়েছে। অন্যদিকে ঈমানের পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি অংশ নিতে হয়েছিল নবী-রাসুলদের, অতপর তাদের সঙ্গী-সাথী ঈমানদারদের, এবং অতপর যারা তাদের নিকটবর্তী তাদের। ঈমানদারদের অভিযুক্ত করা হয়েছিল 'পাগল', 'জাদুকর', 'জোতিষী ', ইত্যাদি হিসেবে - তাদের গালিগালাজ করা হয়েছিল, অপমান করা হয়েছিল। এটি সকল কাল ও অঞ্চলে প্রযোজ্য। তবুও ..

"... তাদের ওপর যে মিথ্যা আরোপ করা হয়েছে এবং যে কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাতে তারা সবর করেছে ৷ ..." (৬:১৩৪)

আল্লাহ আমাদের বলছেন:

"তোমরা কি মনে করেছো, এমনিতেই তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে? অথচ তোমাদের আগে যারা ঈমান এনেছিল তাদের ওপর যা কিছু নেমে এসেছিল এখনও তোমাদের ওপর সেসব নেমে আসেনি ৷ তাদের ওপর নেমে এসেছিল কষ্ট-ক্লেশ ও বিপদ-মুসিবত, তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল ৷ এমনকি সমকালীন রসূল এবং তাঁর সাথে যারা ঈমান এনেছিল তারা চীৎকার করে বলে উঠেছিল, অবশ্যিই আল্লাহর সাহায্য নিকটেই ৷" (২:২১৪)

"আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো ৷ এ অবস্থায় যারা সবর করে তাদের উত্তম খবর শোনাও।" (২:১৫৫)

"তোমাদের অবশ্যি ধন ও প্রাণের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবং তোমরা আহলি কিতাব ও মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে৷ ... (৩:১৮৬)

সাহাবীরা ঘরবাড়ি, নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। বাধ্য হয়েছিলেন সবকিছু পিছনে ফেলে যেতে। তাদের উপর ভয়ঙ্কর পরীক্ষার পর পরীক্ষা এসেছিল। তাদের শত্রুরা বহুগুনে সংখ্যায় বেড়েছিল। কখনো সাহাবীরা বিজিত হয়েছিলেন - কখনো হন পরাজিত। তাদের অনেকে ওহুদের বা অন্যান্য যুদ্ধে শহীদ হন। নবীজি (দ) নিজে মুখে আঘাতপ্রাপ্ত হন - তার একটি দন্ত-মোবারক ভেঙ্গে যায়। তার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে মাথার একদিকে গভীর ক্ষত হয়ে যায়। তার শত্রুরা এতে আনন্দে আত্মহারা হয় - পক্ষান্তরে মুসলমানরা হতাশায় নিমজ্জিত হন। খন্দকের যুদ্ধে মুমিনদের অবস্থা হয় এরকম:

" মু’মিনদেরকে নিদারুণ পরীক্ষা করা হলো এবং ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়া হলো৷" (৩৩:১১)

"যখন তারা (শত্রুরা) ওপর ও নিচে থেকে তোমাদের ওপর চড়াও হলো, যখন ভয়ে চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল, প্রাণ হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত ... " (৩৩:১০)

মুমিনরা একটি অনবরত 'ভয়', 'নিগ্রহ' এবং 'দারিদ্র্য' অবস্থার মধ্য দিয়ে বসবাস করছিলেন। ভয়াবহ ক্ষুধার যন্ত্রনায় তাদের পেটে পাথর বেধে রাখতে হয়েছিল। ঈমানদারদের নেতা নবীজি (দ) কখনো একদিনে দুই বেলায় পেট ভরে খেতে পারেননি (মুসলিম: ২৯৭০)।

উপরন্তু নবীজিকে বিভিন্ন ভাবে মনো-কস্ট দেয়া হয়েছিল - যেমন তার সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী (ঈমানদারদের মা) সম্পর্কে অপবাদ ছড়িয়ে দিয়ে। জীবনের শেষ প্রান্তে মুসায়লামা, তুলায়হা এবং আল-আনসি নামক ভন্ড -নবীরাও তাকে কস্ট দেয়। যখন তিনি মারা যান, তখন তার যুদ্ধের পোশাক এক ইহুদির কাছে ত্রিশ সা' পরিমান গমের বিনিময়ে বন্দক ছিল (বুখারী: ২৯১৬)।

নবীরা এবং ঈমানদারেরা সব সময় পরীক্ষা এবং নির্যাতন মোকাবেলা করেছিলেন । প্রত্যেকে তাদের ঈমানের স্তর অনুযায়ী পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তাদের কাউকে কাউকে করাত দিয়ে চিরে দুই টুকরা করা হয়েছিল কিন্তু তবুও তারা ঈমান-চুত হননি। মহানবী (দ) বলেন,

"ঈমানদারদের উদাহরণ হল একটি গাছের মত - প্রবল বাতাস তাকে সর্বদা একবার একদিকে বাক করে ফেলে আবার পরক্ষনেই অন্যদিকে। ঈমানদাররা এভাবে সবসময়েই পরীক্ষার মুখোমুখি হন।" (বুখারী: ৫৬৪৪, মুসলিম: ২৮০৯)

"ঈমানদারদের উদাহরণ একটি সতেজ গাছের কচি কান্ডের মতন; প্রবল বাতাস কখন ও তাকে বাকিয়ে ফেলে, কখনও ভেঙ্গে ফেলে, কখন ও প্রবল বাতাসেও তা দাড়িয়ে থাকে যতক্ষণ না শুস্ক ও মৃত হয়ে যায়।" (বুখারী: ৫৬৪৩, মুসলিম: ২৮১০)

উপরোক্ত কোরআন ও হাদিসের কথা উল্লেখ করলাম এই জন্যে যে, আপনার এটা উপলব্ধি করতে পারেন। আসলে সহজ করে আরো একটি কথা বলি, তা হলো,

স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যেক সৎ ব্যক্তিই তার নৈতিকতার আদশকে কায়েম রাখতে পারেন, তবে নৈতিক উৎশৃংলাতার প্রবল বার্তা পরিবেষ্টিত উন্নত নেতিক চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা চাট্টিখানি কথা নয় । এ বিষয়টি আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে।

তাই ধমনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সারাটি জীবন ঝামেলামুক্ত থেকে ইসলামের দাওয়াত পৌছে দিয়ে নিজেদেরকে আত্মতুষ্টি লাভ করবেন এবং জান্নাতের আশা করবেন তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত, এমনটা ভাবার অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে।

তারিখ: 5.3.2013

বিষয়: বিবিধ

১৭০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File