*শুধু কালেমা, নামায রোজা, হজ্জ, যাকাত পরিপালন করাই ইসলাম নয়।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৩:২৫:২১ দুপুর
শুধু কালেমা, নামায রোজা, হজ্জ, যাকাত পরিপালন করাই ইসলাম নয়। পরিপূর্ন ইসলাম হলো একটি সুদৃশ্যমান প্রাসাদের ন্যায়। কালেমা, নামায রোজা, হজ্জ, যাকাত হলো ইসলামের ফাউন্ডেশন। আর এই ফাউন্ডেশনের উপর ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে ধর্মচর্চা করার মাধ্যমে ইসলামকে সকল মতাদর্শের উদ্ধে তুলে তা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করাই হলো প্রকৃত ইসলামের তাৎপর্য। এই কাজটি রসূল (স) করেছিলেন দীর্ঘ 23 বছর ধরে। ।
আসুন দেখি ইসলামের ফাউন্ডেশন কি জিনিসঃ
ক) মুখে কালেমা “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসূলুল্লাহ” অথ্যাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, মুহম্মদ (স) আল্লাহর রসুল
খ) মুখে কালেমা পাঠ করার পর সত্যই কালেমা স্বীকার করা হয়েছে কিনা, তার প্রথম প্রাকটিচ হলো নামায। কোন ব্যক্তি মুখে কালেমা পাঠ করার পর নামাজ না পড়লে তিনি কালেমার মমার্থ না বুঝে শুধু মুখে তা পাঠ করেছেন বলে ধরে নিতে হবে। কারন কালেমা গ্রহনের প্রথম শর্ত হলো আল্লাহর ইচ্ছার কাছে সমর্পন করা। পার্থিব জগতের সকল নেতা, সকল আইন, সকল আদেশের উপর অঅল্লঅহর আদেশ ও নিষেধ পরিপালন করা। মসজিদে আযান দেয়ার সাথে সাথে আল্লাহর কাছে ডাতে তার কাছে নত হওয়ার জন্য ছুটে যাওয়া। এর ব্যতিক্রম হলে বুঝতে হবে, তিনি কালেমায় প্রকৃত ব্শ্বিাসী নন।
গ) কালেমা ব্শ্বিাসী কোন মানুষ সুস্থ থাকলে তার জন্য রোজা পালন বাধ্যতামুলক। এখানে শরীয়া ওজর ব্যতীত রোজা থেকে বিরত থাকার কোন সুযোগ নেই।
ঘ) কালেমা বিশ্বাসী কোন ব্যক্তির নিসাব পরিমান সম্পদ থাকলে তার জন্য যাকাত দেওয়া অপরিরহার্য।
ঙ) শারীরিক সামর্থ এবং হ্জ করার সামর্থ থাকলে তিনি অবশ্যই হজ্জব্রত পালন করবেন।
তাহলে ইসলামের ফাউন্ডেশন হলোঃ কালেমা, নামাজ, রোজা, হ্জ্জ ও যাকাত।
কালেমা, নামাজ, রোজা, হ্জ্জ ও যাকাত। এটি কোন পরিপূন ঘর নয়।ফাউন্ডেশনকে কেউ পরিপূন ঘর বলে না। ফাউন্ডেশনের উপর যখন ইট দিয়ে দেয়াল তুলে তার দরজা, জানালাসহ অন্যান্য আনুসঙ্গিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে বসবাসের উপযোগী করা হয়, তখন তাকে পরিপূণ প্রাসাদ বলে ।
কালেমা বিশ্বাসের পর একজন ব্যক্তির ফাউন্ডেশন উপর আনুসঙ্গিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করার কার্যক্রম অটোমেটিক্যলি চলতে থাকবে। এর মাধ্যমে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন এবং এই বিশ্বাসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে। রাষ্রীয়ভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল পরিপূণ প্রাসাদ নির্মিত হবে। রাষ্রীয়ভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করার কাজটিই হলো ইসলামী আন্দোলন যা
একজন কালেমা বিশ্বাসীর প্রথম কাজ। এই কাজটি একটি ফরজ কাজ। এই কাজটি সকল নবী রসূল করে গেছেন।
এই কাজটি করতে গেলেই পার্থিব স্বার্থকামী গোষ্টি মাথাচাড়া ওঠে। তারা রাষ্ট্র যন্ত্রের সকল উপকরণ দিয়ে এর বিরোধিতায় নেমে পড়ে। এর উদাহরণ সেই সকল নবী রসুলদের বেলায় ঘটেছিল। এখন যারা কাজ করছেন বা করবেন তাদের বেলাও ঘটবে।
এই কাজ করছিলেন মিশরের ইখওয়ানুল মুসলীমুন(বর্তমানে ব্রাডারহুড)এর সাবেক নেতা সাইয়েদ কুতুব, হাসানুল বান্নাসহ অসংখ্য দ্বীনী ভাইয়েরা।
এই কাজ করতে গিয়ে তাদের কি হয়েছিল তার একটি নজির দেখুনঃ
ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসে সাইয়েদ কুতুবের নাম জানেনা এমন লোক থাকলে বলতে সে ইসলাম বোঝেনী। মিশরের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক জলন্ত সাক্ষী সাইয়েদ কুতুব। সেদেশের সরকার ইসলামের এই বিপ্লবী নেতাকে ইসলাম প্রচারের অপরাধে ফাসি দিয়েছিল। ফাঁসির পূর্ব মূহুত্বে জেল হুজুর যখন তাকে কালেমা পড়াতে এসেছিলেন তখন তিনি কি বলেছিলেন তা শুননঃ
শহীদ কুতুব ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে পিচ পা কিংবা ভয় পান নি । শুধু কলেমা পড়াতে আসা হুজুরকে একটা খোটা মারার মাধ্যমে তিনি সারা পৃথিবীর প্রখ্যাত আলেমদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন । তিনি সেদিন হুজুরকে বলে ছিলেন যে, আপনি আমাকে কালেমা পড়াতে এসেছেন । আর আমি এই কালেমার উপর বই লেখার জন্য আজ রাষ্ট্রদ্রোহী হিসাবে পরিচিত। আর যে কালেমা পড়ানোর দায়িত্বে আপনি বেতন পান সরকারের নিকট থেকে। সেই সরকারই কালেমাপ্রচারের অপরাধে আমাকে ফাসি দিচ্ছে।
অতএব শুধু কালেমা, নামায রোজা, হজ্জ, যাকাত পরিপালন করাই ইসলাম নয়।
বিষয়: বিবিধ
১৮৯৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন