নপুংসুক সাঈদী, ধষণ করার শক্তি নেই, ধিক ! সাঈদী ধিক! খুনি সাঈদী, খুন করার শক্তি নেই, ধিক ! সাঈদী ধিক !

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০২ মার্চ, ২০১৩, ১০:২৯:৪১ রাত



সরকারি সূত্রগুলো জানায়, সাঈদীর ফাঁসির রায়ে দলটির নেতা-কর্মীরা সহিংসতায় লিপ্ত হবেন—সরকারের উচ্চপর্যায়ে এমন আশঙ্কা থাকলেও এত প্রাণহানি ঘটবে, তা তাদের ধারণায় ছিল না। উপরোক্ত শিরোনাম একটু বিদঘুটে হলেও দিতে হলো। আলোচনার পুবে এর প্রেক্ষাপট আলোচনা করা দরকার।আমরা জানি, 25 শে মার্চ রাত্রে শেখ মুজিবুর রহমান নিজের আত্ম রর্ক্ষাথে পাকিস্তানীদের কাছে ধরা দিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। আর তার প্রিয় মানুষগুলো জীবন রক্ষার্থে ভারতে গিয়ে বহাল তবিয়তে অবস্থান করেছিলেন। যুদ্ধের সমস্ত দাবানল সহ্য করেছে এদেশের ছাত্র , শ্রমিক, কৃষক, জনতাসহ খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। এরাই আমাদেরকে একটি স্বাধীন পতাকা এনে দিয়েছে ।অথচ, সেই শ্রমিক, কৃষক, জনতাসহ খেটে খাওয়া সাধারন মানুষগুলো এখনও প্রতিদিন তাদের নিষ্ঠার সাথে শান্তির্পুনভাবে তিলে তিলে দেশগড়ার কাজে নিয়োজিত আছে। তারা রাজনীতি বোঝেনা, তারা অর্থনীতি বোঝেনা,তারা নিজেদের শ্রম দিয়ে আজও নিজেদের দৈনন্দিন খাবার সংগ্রহ করে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। তাদের চাওয়া ছিল একটি শান্ত, সুষ্ট সামাজিক পরিবেশ, যেখানে থাকবেনা কোন হত্যা, থাকবেনা কোন রাহাজানি, থাকবেনা ঘুষ, দুর্ণীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, শিক্ষার পরিবেশ থাকবে র্নিমল, বজায় থাকবে সুন্দর ধর্মীয় পরিবেশ।

কিন্তু স্বাধীনতার 42 বছর পরও তাদের সেই স্বপ্ন পুরণ হলোনা। কারনটা সবাই জানে।তথাপি কিছুটা উল্লেখ না করে পারছি না। খেটে খাওয়া মানুষই কেবল জানে, তার উর্পাজিত অর্থের মুল্য কত ? তাই সে তার উর্পাজিত অর্থ ব্যয় করার সময় হিসাব-নিকাশ করে ব্যয় করে।সে কখনও তার অর্থ অপচয় করেনা। কিন্তু যে উপার্জন করেনা , সে যদি বিনা কষ্টে কারো সম্পদ হাতে পায় ,তাহলে সে সম্পদ খরচের মায়া তার থাকার কথা নয়।

স্বাধীনতা অর্জনে যাদের কোন কিছু হারাতে হয়নি, যারা বিদেশে ভ্রমণের ন্যায় অবস্থান করেছেন ,তারাই স্বাধীনতাত্তোর দেশে এসে অবতার সেজে সকল সম্পদ ভোগ করার সুযোগ পেয়েছে , তখন তারা বেপরোয়া হয়ে অর্থ লোপাট করেছে, করেছে অর্থের অপচয়ও। ক্ষমতায় মসনদে বসে যারা ক্ষমতা এনে দিল, তাদেরকে অবিশ্বাস করে হত্যায্জ্ঞ করেছে।বিষয়টি এমন যে, বক আর বাঘের গলায় হাড় বেধে যাওয়ার গল্পের মত। বক কেন তার গলার হাড় বের করে দিয়েছে, এই জন্য তাকে সে খাবে।

যাইহোক, ক্ষমতার লোভ তাদেরকে এমনভাবে মোহাচ্ছিন্ন করে ফেলেছে যে, এখন তারা যেকোন ভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। যে কারনে এক সময় বঙ্গবন্ধুর গায়ের চামড়া দিয়ে যে ডুগডুগী বানাতে চেয়েছিল সেই ইনু, দিলীপ বড়ুয়া সাহেবকেও শেখ হাসিনা নিজের আঁচলে জায়গা করে দিয়েছে। যে মুক্তিুযুদ্ধ নিয়ে আমাদের এত গর্ব, এত অহংকার, সেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী কামরুল, মখা আলমগীর, সাজেদা চৌধুরী, ইন্জি. মোশাররফ রাজাকারদেরকে মন্ত্রীপরিষদে স্থান দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রাজেনৈতিক দলের একটি নীতি থাকে। সেরুপ নীতি থেকে অধিকতর ভাল নীতি পাওয়া গেলে সেটিই গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত।সে হিসাবে কেউ দল পরিবর্তন করলে সেটা দোষনীয় বলা ঠিক নয়। আমি যতটুকু জানি, বামরাজনীতি যারা করেন তাদের একটি আদর্শ আছে।তারা তাদের ঈপ্সিত লক্ষ্য পুরনের পুর্বে সেই রাজনীতিতে আপোষহীন থাকে। কিন্তু আজকে আমরা কী দেখছি, বামরাজনীতিবীদগন নিজেদের আদর্শ জলান্জলী দিয়ে ভাগ বাটোয়ারা স্বার্থের কাছে পরাভুত হয়েছে।

বর্তমানে আম-বাম মিলে একটি জগাখিচুরী মন্ত্রীপরিষদ গঠন করে যারা স্বাধীন পতাকা এনে দিয়েছে, সেই শ্রমিক, কৃষক, জনতাসহ খেটে খাওয়া সাধারন মানুষগুলোর অর্থ লোপাট করে তাদের উপরই অত্যাচার , নির্যাতন, জুলুম , হত্যা, গুম , চালিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু এভাবে কী ক্ষমতায় থাকা যায় ? ইতিহাস বলে জনগনের অধিকার ক্ষুন্ন করে স্বৈরচারী হয়ে একটি সময় পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকা য়ায়।তবে সেটি কলংকিত অধ্যায় হয়ে থাকে।

এবার আসি সাঈদী প্রসঙ্গে:

ছোট বেলা থেকে থেকেই বাবা আমাদেরকে নীতি বাক্য শুনাতো। বলতো, সত্য কথা বলবে, কারো সাথে মিথ্যা কথা বল না, মিথ্যা বললে আল্লাহ জিহবায় পেরেক মেরে রাখবে, বড়দের দেখলে সালাম দেবে, ছোটদেরকে সব সময় আদর করতে হয়, চলার পথে কাটা থাকলে সেই কাটা কুড়িয়ে নির্জন জায়গায় ফেলে দেবে, কারো জিনিস না বলে নেবে না আরো কত কিছূ। এর পাশাপাশি মাঝে মাঝে মসজিদে নামাজের জন্য নিয়ে যেতেন এবং তাকিদ করতেন। খোদার ভীতি, নবীরসূলের জীবণী, বেহেস্ত ,দোযখ জানার জন্য ওয়াজ-মাহফিলে নিয়ে যেতেন।এভাবে কোন একদিন সাঈদীর ওয়াজ মাহফিলে নিজে নিজেই গিয়েছিাম।সেখানে গিয়ে আল্লাহর কোরআনে সূরা কাসাস থেকে মুসা (আ) ঘটনা তাফসির করছিলেন । মুসার আগমনের র্পুবেই ফেরআউন গদিতে সমাসীন। ফেরআউন তার পুরো সাম্রাজ্যে একচ্ছত্র মালিক মনে করে খোদায় দাবী করে বসে। আল্লাহ তার পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সাম্রাজ্য ধ্বংস করার জন্য ফেরআউনের সাম্রাজ্যে মুসাকে পাঠিয়ে তারই ঘরে লালিত-পালিত করে বড় করে তুললেন । পরর্বতী ঘটনা আমরা সবাই জানি।এভাবে তার কয়েকটি তাফসির শুনার সৌভাগ্য আমার হয়েছে ।গ্রামের মানুষ তো, তাই এর আগেও আমি গ্রামে অন্যান্য দু-একটি ওয়াচ মাহফিল শুনেছি। কিন্তু সাঈদীর মত সহজ সরল প্রাঞ্জল ও মোহনীয় পরিবেশে কোরআনের তাফসির কোথাও পাইনী। আমার মত বাংলাদেশের 68 হাজার গ্রামের মানুষ তার তাফসির শুনার সৌভাগ্য হয়েছে । তখন থেকে আমি তাকে একজন কোরআনের তাফসিরকারক বলে জানি। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তার তাফসিরে দল মত নির্বিশেষে মানুষ আংশগ্রহণ করেছে। গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে, দেশ থেকে বিদেশে সর্বোত্ত সাঈদী সাহেব একজন কোরআনের তাফসিরকারী বলে পরিচিতি পেয়েছে।তার কোরআনের তাফসির মাহফিলে অংশগ্রহন করে অনেক অমুসলীম আল্লাহ ও রসূল (স) এর উপর ঈমান এনে মুসলমান হয়ে গেছে।নিঃসন্দেহে সাঈদী আল্লাহ তায়ালার একটি নেয়ামত।আল্লাহর এই নেয়ামতকে সাঈদী যথাযথভাবে মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দেওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করেছেন বলে মনে হয়।

সাঈদীর অপরাধ : সাঈদীর বড় অপরাধ হলো জামায়াত নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠনে যোগদান করা। এই সংগঠনে যোগদান না করলে আজকে তার এই পরিনতি হতনা। কেন তিনি এই সংগঠনে যোগ দিলেন। যেভাবে কোরআনের তাফসির করছিলেন, সেটা অব্যাহত রাখলে কী ঈমানের দাবী পুরণ হতনা ?

দেখা যাক কোরআন এ বিষয়ে কী বলে।

“আল্লাহ তার পাক কোরআনে বলেছেন-“ তোমরা সঙ্গবদ্ধভাবে আল্লাহরে ইসলামকে

আকড়ে ধর আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা।”(সূরা-ইমরান-103)।

তিনি অন্যত্র বলেন, “ তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকতে হবে, যারা কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎকার্যের আদেশ দিবে, অসৎর্কায থেকে বিরত রাখবে ।

“ নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ সব লোকদের ভালবাসেন, যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে কাতারবন্দী হয়ে লড়াই করে যেন তারা ইস্পাত নির্মিত প্রাচীর।(সূরা-ছফ-4)।

আরো আছে, “ যারা সংঘবদ্ধ হয়ে আল্লাহরে ইসলামকে আকড়ে ধরবে , মুলত তাদের জন্যই রয়েছে হেদায়েতপুর্ন সরল সঠিক” (সূরা-ইমরান-101)।

“ হে ঈমানদার গন ! তোমরা আল্লাহ, ও তার রসূল (স)এবং তোমাদের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল তাদের আনুগত্য কর।”(সূরা-নেসা-59)।

“ তিনি তাদের কে এমন সব জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নে ঝরনাধারা প্রবাহমান হবে। তাতে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তোষ্ট হয়েছেন এবং তারাও সন্তোষ্ট হয়েছেন তার প্রতি। এরা আল্লাহর দলের লোক। জানিয়া রাখ, আল্লাহর দলের লোকেরাই কল্যাণপ্রাপ্ত হবে” (সূরা-আল মুজাদালা-22)।

এছাড়া সংগঠন সম্পর্কে কোরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। এবার দেখা যাক আল্লাহর রসূল (স) এ বিষয়ে কি বলেছেন।

“ হজরত আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত, রসূল (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি সংগঠন থেকে এক বিঘত পর্যন্ত দুরে সরে গেল, সে যেন ইসলামের রজ্জু হতে তার গর্দান কাটা গেল ।” (আবু দাউদ)

“ হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রসূল (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি নেতার আনুগত্যকে অস্বীকারকরত: সংগঠন পরিত্যাগ করল এবং সেই অবস্থায় মারা গেল। সে জাহিলীয়াতের মৃত্যুবরণ করল।(মুসলিম)

উপরোক্ত কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে একজন মুসলমানের জন্য সংগঠন করা ফরজ বা বাধ্যতামুলক। তাহলে যিনি কোরআনের তাফসির করবেন অথচ সংগঠনের পক্ষে এতগুলো আয়াত ও হাদিসের নিদের্শ থাকার পরও সংগঠন করবেন না তা কী করে হয় ? সে কারনেই হয়ত ঈমানের দাবী পুরনার্থে 1979 সালে জামায়াতে যোগ দিয়েছিলেন ।

রসূল (স) এর মিশন ও ভিশন কী ছিল :

আল্লাহ বলেছেন,

“ আল্লাহ সত্য দ্বীন ও হেদায়েত সহকারে রসূল (স) কে প্রেরণ করেছেন, যাতে কিনা সকল বাতিল মতাদর্শের উপর আল কোরআনকে বিজয়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।এতে মুশরিকগন যতই অপছন্দ করুক না কেন?”(সূরা ছফ-9)

পথ ভোলা মানুষকে পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ রসূল মুহাম্মাদ(স)কে মনোনীত করে পাঠিয়েছেন।তিনি মানুষকে ডাক দিয়েছেন ইসলামের পথে ।তার আহবানটা ছিল ব্যাপক, পরিধি ছিল গোটা পৃথিবী আর কর্মক্ষেত্র ছিল পুর্নাঙ্গ জীবন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, আল্লাহ বিধান দ্বারা মানুষের সর্বাঙ্গীন জীবন প্রতিফলিত করায় ছিল মানুষের কল্যাণ ও মুক্তি।

রসূল (স) এর তিনটি মূখ্য বিষয় ছিল।

1) আল্লাহর দাসত্ব ও নবী (স) এর নেতৃত্ব মেনে নেয়া।

2) কর্মবৈষম্য বা মোনাফেকী স্বভাব পরিত্যাগ করে একনিষ্ঠ আত্বসর্মপনকারী হয়ে যাওয়া। 3) খোদাদ্রোহী সৎ লোকদের নেতৃত্ব, কতৃত্ব ও প্রাধান্য নির্মুল করে খোদাভীরু ও সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ইতিহাস সাক্ষী দেয় দুনিয়ার বুকে যখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু- এর আওয়াজ বুলন্দ হয়েছে, তখনই তিন শ্রেণীর লোক বিদ্রোহ ঘোষনা করেছে।

ক)ক্ষমতাশীন মহল, খ) অর্থনৈতিক শোষনের দল, গ) ধর্মব্যবসায়ী মহল

মহানবী (স) এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নির্মল, নিষ্কলংক চরিত্রের অধিকারী, বিশ্বস্ততার প্রতীক রসূল (স) সমাজে আল্লাহর বিধিবিধান প্রতিষ্ঠার্থে উপরোক্ত তিন শ্রেণীর নিকট থেকে প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।গোটা সমাজ ইট, পাথর, লাঠি নিয়ে ছুটে এলো। শুরু করল নির্যাতনের এক করুন অধ্যায় এবং শেষ পর্যন্ত তার প্রিয় জন্মভুমি থেকে তাকে বহিস্কার করা হলো।

ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয় –এটা রসূল (স) এ জীবনে ঘটেছে।তাই আজও যদি কেউ তার দেখানো পথে দাওয়াত প্রদান করে , তাহলে নিঃসন্দেহে তিন শ্রেণীর লোকের নিকট থেকে বাধাপ্রাপ্ত হবে।

জামায়াত-শিবির আল্লাহর জমীনে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম করার লক্ষে যে আন্দোলন করছে তা শুরু থেকেই উপরোক্ত তিন শ্রেণীর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

এই তিনটি দল পৃথক পৃথকভাবে পৃথক সময়ে নয় বরং যুগপৎভাবে একতাবদ্ধ শক্তি নিয়ে সমাজে বিদ্যমান রয়েছে । ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের বিরোধিতায় শ্রেণী তিনটি একইভাবে একই সময়ে বিরোধিতায় এগিয়ে আসে। একটু চিন্তা করলেই তা বুঝা যায়।নানা ধরনের অজুহাত সৃষ্টি করে ক্ষমতাকে ধরে রাখার প্রয়াস এখনও বিরাজমান।বতমানে শাহবাগে গণজাগরনের দিকে তাকালে সহজেই তা প্রতীয়মান হয়।

আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য রসূল (স) এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদশ।”

এই আদশ অনুসরনের মধ্যেই ইহকালী শান্তি ও পরকালীন মুক্তি রয়েছে।রসূল (স) এর জীবন ছিল 63 বছরের সমষ্টি। এই 63 বছরের জীবনে যা যা সংঘঠিত হয়েছে , কোন ব্যক্তি যদি নিজেকে মুসলমান দাবী করে, তাহলে তার জীবনেও রসূল (স) এর জীবনে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো ঘটতে বাধ্য। কেননা কিয়ামতের আগ পযন্ত উপরোক্ত তিন শ্রেণীর লোক বিদ্যমান থাকবে।নিজেকে মুসলমান দাবী করব, রসূলের পথে চলব অথচ বাধা আসবে না এমনটি কখনও হতে পারে না অন্তত আল কোরআনের শাসন কায়েম হবার পুব পযন্ত। আর যদি বাধা না আসে , তাহলে ধরে নিতে হবে ঐ তিন শ্রেণীর সাথে আপোষ করে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া হয় । এই দাওয়াত কখনও রসূল (স)এর দেখানো পথ নয়। এটা অবশ্য ভ্রান্ত পথ।

ঈমানের দাবী পুরণ করতে গিয়ে সাঈদীর ফাসি :

সাঈদী আল কোরআনের তাফসির করতে গিয়ে এই বাধার পথটিই বেছে নিয়েছেন।সকল বাতিল মতাদর্শের উপর আল কোরআনকে বিজয়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে একজন মুসলমানের চরিত্র কেমন হবে, আল কোরআনের আলোকে তিনি তার মাহফিলে যুব সমাজসহ সকল পর্যায়ের মানুষের নিকট পৌছে দিয়েছেন।নিজেদের আয়নায় রসূল (স)এর চরিত্রকে অনেক ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস পেয়েছেন।ফলে অতিদ্রুত যুব সমাজসহ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে মাওলানা সাঈদী অতি পরিচিতি একজন ধর্মীয় প্রচারক হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয় পৃথিবীর অন্তত 50 টি দেশে সাঈদী একটি মাইল ফলক।

এমন একজন মানুষ ধর্মভিত্তিক একটি সংগঠনে থাকলে সেই সংগঠনটি দ্রুত তার লক্ষ্য- উদ্দেশ্যে পৌছাতে সক্ষম। ঠিক তাই, 1979 সালে জামায়াতে যোগ দেওয়ার পর লক্ষ্য করা গেছে যে, যুব সমাজের মধ্যে ইসলাম আলো পৌছে দিয়ে একটি রেঁনেসা আনতে সক্ষম হয়েছেন।

সংগঠনে যুক্ত হয়েছে কারা ?

1970 সালে 99% লোক আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দিয়েছে।1971 সালে 9 মাসের যুদ্ধে উপরিল্লিখিত এদেশের ছাত্র , শ্রমিক, কৃষক, জনতাসহ খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ(আওয়ামীলীগের বতমান সুবিধাভোগী ব্যতিত)দেশের জন্য যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।কিন্তু সেই সকল মানুষের প্রত্যাশা পুরন না করে তাদেরকে রক্ষী বাহিনী দিয়ে হত্যা করেছে। এই দেশপ্রেমিক লোকগুলো এখনও বঞ্চিত, লাঞ্চিত, আপমানিত। পরবর্তীতে কি হয়েছে তা আমরা সবাই জানি।

99% আওয়ামী লীগ থেকে বিভিন্ন ভাবে ভাগ হয়ে 1978 সালে একটি অংশ বি এন পি নাম ধারন করেছে ।আওয়ামী লীগ এবং বি এন পি থেকে বিভিন্ন ভাবে ভাগ হয়ে 1981 পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি আবিভুত হয়েছে।বামরাজনীতির ধারক ও বাহকগন সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের পতনের পর নিজেদের আদর্শের শ্লোগান ভুলে গিয়ে খাদ্যের অভাবে যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছে আশ্রয় নিয়েছে তার দলে।কিন্তু কোন দলই সাধারন মানুষের স্বাভাবিক প্রত্যাশা পুরন না করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে।সাধারন অসহায় মানুষগুলো না পাওয়ার বেদনা নিয়ে সকল অনিয়মের বিচারের ভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছেন ।

আল্লাহ এই নির্যাতিত অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাড়ানোর জন্য র্নিদেশ দিয়ে বলেছেন,

“ তোমাদের কী হল যে, তোমেরা খোদার পথে লড়াই করছ না এবং অসহায় নরনারী ও শিশুগনের জন্য, যারা বলে , হে আমাদের পরোয়াদেগার ! এই জনপদ যাহার অধিবাসী জালিম, উহা হতে আমাদের অন্যত্র লইয়া যাও।তোমার নিকট থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক নিযুক্ত করএবং তোমার নিকট থেকে কোন সাহায্যকারী পাঠাও।(সূরা-নিসা-75)

দেশের সাধারন অসহায় মানুষগুলো না পাওয়ার বেদনায় বিকল্প খুজঁতে থাকে।মওলাণা সাঈদীর বিরামহীন কোরানের তাফসির দেশের মানুষগুলোর মধ্যে আশা জাগায়।বিভিন্ন দলের, মতের, শ্রেণীর মানুষ ও তাদের সন্তানেরা দলে দলে কোরানের ছায়াতলে আশ্রয় নেয় ।জামায়াত ও শিবিরের লক্ষ লক্ষ কমী সৃষ্টি হয় ।তারফলে আমরা দেখেছি 1991 সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী 18 টি আসন জয়লাভ করে। সরকারসহ উপরিল্লিখিত তিন শ্রেণীর মানুষ ভয় পেয়ে যায় । তাদের উপলব্ধি করে যে, এখন যদি জামায়ত-শিবিরের অগ্রযাত্রা রোধ না করা যায়, তাহলে তাদের মৃত্যু অনিবায।

শুরু হল চক্রান্ত :

তিন শ্রেণীর একতাবদ্ধ মিশন শুরু হল

ক)জামায়ত-শিবিরের অগ্রযাত্রার নায়ক কে ? তাকে খুঁজে বের কর। খুঁজে পাওয়া গেল । সে আর কেউ না ,মওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।(আজকের পত্র পত্রিকায় সে কথা স্বীকার করা হয়েছে।)

খ)পরামশ হলো , তাকে ঠেকাও যে কোন মূল্যে। শুরু হয়ে গেল তাকে ঠেকানোর সকল তৎপরতা। তার সমাবেশে হামলা করে , পথে বাধা সৃষ্টি করে, জনগনকে বাধা দিয়ে । কিন্তু কোনে উপায়ে মওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর অগ্রযাত্রা ঠেকানো যাচ্ছে না । দিন যত যায়, কোরানের মাহফিলে লোক সমাগম তত বেশী হয়।

গ) প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের ন্যায় শুরু কুটিল চক্রান্ত ।বলা হলো যেহেতু বাধা দিয়ে লোক ঠৈকানো যাচ্ছে না, তাহলে কলংক দিয়ে , তার নামে বদনাম করে ঠেকাও।শুরু হল উদ্ভট কলংক। তা হল – তার মেয়েরা বরকা পড়েনা এবং অন্য ছেলেদের সাথে চলাফেরা করে।

আল্লাহ বলেন, “শয়তান চক্রান্ত করে , আমি কৌশল অবলম্বন করি । শেষ পযন্ত আমার কৌশলও টিকে থাকে।”

এক্ষেত্রেও আল্লাহ সাঈদীর বিরোদ্ধে সকল চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিলেন।যেদিন এই বদনাম রটানো হল, তারপর পরের দিন জানা গেল জনাব সাঈদীর কোন মেয়ে সন্তানই নেই। এভাবে র্ব্যথ হয়ে দ্বীনের শত্ররা ভিন্ন পথ বেছে নিলেন।

ঘ)বলা হল, সাঈদী কোরআনের তাফসির করতে লক্ষ লক্ষ টাকার সম্মানী নেন।অতএব সে দ্বীনের কাজে ওয়াজ করেনা , টাকা কামাইয়ের ধান্ধায় ওয়াজ করেন।

সাঈদী তার কোরআনের সমাবেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে এ বিষয়ে জনতাকে সাক্ষী রেখে এর সত্যতা জানতে চান । মাহফিলের আহবায়কেরা এ অভিযোগ মিথ্যা বলে অভিহিত করেন।

ঙ) এরপর শুরু হল আরো জঘন্য অপবাদের অভিযোগ। তাহল, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার, ধষণকারী, হত্যাকারী ,মানবতাবিরোধী অপরাধে দুষ্ট।

এই তথাকথিত জঘন্য অপবাদের অভিযোগ তুলে তাকে প্রহসনের বিচার করে ফাঁসির রায় দেয়া হল।

একটি বিবেচ্য বিষয় : কয়লা ধুইলে যায়না ময়লা ।

যে অভিযোগ গুলি সাঈদীর বিরোদ্ধে দেয়া হয়েছিল তারমধ্যে গুরত্বপুণ হলো, ধষণ ও হত্যা।বাস্তবতায় দেখেছি, কোন ব্যক্তি যখন তার আর্থিক, সামজিক বা জীবনের হুমকি হয়ে যাবে এমন কিছু সামনে আসে, তখন সে তা থেকে নিবৃত্ত হতে চায় এবং কোন অবসথায় সে ঐ পথে পা বাড়াবে না।আমরা দেখেছি 1971 সালে যারা গ্রামে অন্যায়ের সাথে যুক্ত ছিল, পরবতীর্তে তাদের অধিকাংশ লোকই সে পথ থেকে বের হয়ে আসতে পারেনী ।আরো আশ্চায্য ব্যাপার হল, তাদের সন্তানাদিগুলোও একই পথে ধাবিত হয়েছে।সবিশেষ সমাজে কুখ্যাত হয়েই মারা গেছে।

সাঈদীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হবে কেন।যদি ধরে নেয়া হয়, সাঈদী ধষণ ও হত্যাকার্যে নিজে অংশ গ্রহন করেছিল, তখন তার বয়স মাত্র 30 বছর ।ভরা যৌবন । এই ধষণ নেশা বা প্রবনতা যাই বলি না কেন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাবার কথা নয় । অন্তত বতমান সমাজে যারা ধষনের সেঞ্চুরী করেছে , তাদের দিকে তাকালে তো তাই মনে হয়।সাঈদী যেখানে অসংখ্য মেয়েকে প্রতিদিন পালাক্রমে ধষন করতেন,সেই সাঈদী যুদ্ধোত্তর হঠাৎ নপুংসুক হয়ে গেল নাকি।তাও তো মনে হয়না । কেননা যুদ্ধের পরও তার বিবাহিত স্ত্রীর সন্তানাদি হয়েছে।কিন্তু 1971 সালের পর তার কতৃক ধর্ষিত হয়েছে কোট এমন কোন প্রমান দেখোতে পারেননী বা কেউ অভিযোগও দেননি।অথচ গ্রামীন ।এলাকায় যুদ্ধোত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে অনেক মেয়ে রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধা কতৃক ধর্ষিত হয়েছে এমন প্রমানের অভাব নেই।একইভাবে হত্যা বা খুনের ক্ষেত্রেও অনুরুপ উদাহরন সাঈদীর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়নি।

এবার আসি সাঈদী ঔরসজাত সন্তানের চরিত্র নিয়ে।

যে কথা উপরে বলেছিলাম য়ে বাবার কুরক্ত বংশ পরস্পরায় তাদের সন্তানাদিগুলোর মধ্যেও সংক্রামিত হয় ।সন্তানাদিরাও একই পথে ধাবিত হয়।কিন্তু লক্ষ্য করার বিষয় সাঈদী সাহেবের কোন ছেলেই তার বাবার মত ধষক ও হত্যাকারী হয়নি। বরং তার সব কয়টি ছেলে অত্যান্ত শান্ত, ভদ্র, ও বিনয়ী হয়েছে। এটা কি করে সম্ভব ? টিভির পদায় তার ছেলেদেরকে দেখে অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে।

তাহলে সাঈদীর অপরাধ কী ইসলামী রাজনীতি করা ?

এটা যদি সাঈদীর অপরাধ হয়, তাহলে এই অপরাধে সাঈদীর হাজার বার ফাঁসি হলেও তার আপত্তি থাকার কথা নয়।কারন এ পথে সেতো জেনে বুঝেই এসেছে।এ পথ তো সেই পথ, যে পথে সুমাইয়া গেছে, হামজা গেছে, মালেক, শাব্বির , হামিদ গেছে। এ পথের দাবী সম্পর্কে সাঈদীর চেয়ে আমার বেশী জানার কথা নয়।

সাঈদীর ফাঁসি হলে কী হবে:

শেখ মুজিব যখন মারা যায, তাকে রক্ষা করার জন্য আজকে বড় গলায় যারা বঙ্গবন্ধুর নাম বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন , তাদের কাউকে দেখা যায়নি। এমন কি সাধারন কোন মানুষকেও তাকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিতে হয়নি। অথচ কেবলমাত্র সাঈদীর ফাঁসির রায়ে বাংলাদেশের ৮০ জন ইসলামপ্রেমী মানুষ নিঃস্বার্থভাবে সাঈদীর মুক্তির জন্য তাদের বুকের তরতাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। এখনও সাঈদীর ফাঁসি হয়নি। উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে আপিল করা হবে বলে তাদের আইনজীবি উল্লেখ করেছেন । উচ্চ আদালতেও যদি প্রহসনের রায় দেওয় হয়, তাহলে ৬৮ হাজার গ্রামের যেসব জায়গায় সাঈদী আল্লাহর কোরআনের দাওয়াত পৌছে দিয়েছে, যে মাটির মানুষগুলো তার কাছে থেকে নবী- রসূল সম্পর্কে জানতে পেরেছে এবং রসূল (স) এর তরীকা অনুযায়ী আমল করতে শিখেছে , তাদের মধ্যে আরো অনেকেই ঐশ্বরিকভাবে এবং সাঈদীর মুখের কোরআনের সম্প্রচার রক্ষার্থে অনায়াসে জীবন বিলিয়ে দেবে বলে মনে হয়।

সেদিন পত্রিকায় দেখলাম, সাঈদীর ক্যাসেট ভেঙ্গে ফেলায় কুড়িগ্রামের এক আওয়ামীগার পরের দিন বোবা হয়ে গেছে।সংবাদ টির ভিতরে পড়ে দেখলাম, সেখানকার এক ফেরিওয়ালা সাঈদীর ক্যাসেট বাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বেড়াতো । ঘটনার দিন যথারীতি সে সাঈদীর ক্যাসেট বাজিয়ে ফেরি করতে রওয়ানা হয়েছে। আওয়ামীগার এতে রাগান্বিত হয়ে তার ক্যাসেটটি কেড়ে নিয়ে ফিতাটি টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়। ফেরীওয়ালা তাকে জিজ্ঞাসা করে আমার কী দোষ ? আওয়ামীগার তাকে বলে তুই সাঈদীর ক্যাসেট বাঁজাস কেন ? ফেরীওয়ালা বলে, গ্রামের মানুষগুলো সাঈদীর ওয়াজ শুনতে পছ্ন্দ করে । সাঈদীর ক্যাসেট বাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে আমার সংসার চলে । আমি কী করব? শুনেছি বোবা আওয়ামীগার এখন বারডেমে চিকিৎরত।

যা বলছিলাম, এই জনপ্রিয় মানুষটিকে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বাতিল শক্তি ফাঁসি দিলেও সাধারন জনগনের মনি কোঠায় চিরকাল সাঈদী একজন ইসলামের সেবক হয়েই থাকবে। অপর দিকে, সাঈদীর রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে ইসলামপ্রিয় মানুষের অভিশাপে আওয়ামীলীগের কবর রচিত হবে।

বিজ্ঞানী ল্যাভয়েশিয়া বলেছিলেন, “এ মাথা কাঁটতে ক্ষণ সময়ের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু এ মাথা তৈরি করতে শত যুগও যথেষ্ট নয়।”

কী দেখছি রাজপথে ?

ছোট বেলা থেকে থেকেই বাবা আমাদেরকে নীতি বাক্য শুনাতো। বলতো, সত্য কথা বলবে, কারো সাথে মিথ্যা কথা বল না, মিথ্যা বললে আল্লাহ জিহবায় পেরেক মেরে রাখবে, বড়দের দেখলে সালাম দেবে, ছোটদেরকে সব সময় আদর করতে হয়, চলার পথে কাটা থাকলে সেই কাটা কুড়িয়ে নির্জন জায়গায় ফেলে দেবে, কারো জিনিস না বলে নেবে না আরো কত কিছূ।

স্কুলে শিখেছি, ■ একে আল্লাহ, ■ দুইয়ে জাহান, ■ তিন এ জামানা, ■ চার এ কিতাব, ■ পাঁচ এ পাঞ্জাতক, ■ ছয় এ হাদিস, ■ সাত এ দোযখ, ■ আট এ বেহেস্ত ■ অ তে অযু, ■ আ তে আল্লাহ, ■ ক তে –কালিমা, ■ ঈ তে ঈদ, ইত্যাদি।

যে বয়সে আমার মত অনেকেই উপরোক্ত নীতি বাক্য শুনে সেই অনুযায়ী চরিত্র গঠনের প্রয়াস চালিয়েছে এবং এখনও তা প্রতিপালন করে আসছি।

কিন্তু এখন রাজপথে কি দেখছি ? 3 বছর থেকে শুরু থেকে 18 বছরের যুবককে শফত পড়ানো হয়েছে-

■ ক তে কাদের মোল্লা , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ গ তে গোলাম আজম , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ স তে সাঈদী , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ ন তে নিজামী , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ ই তে ইসলামী ব্যংক , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ ফ তে ফোকাস , তুই রাজাকার,তুই রাজাকার, ■ ফাঁসি চায়, ফাঁসি চায়, কাদের মোল্লার ফাঁসি চায়, ■ ফাঁসি চায়, ফাঁসি চায়, গোলাম আজম ফাঁসি চায়, ■ ফাঁসি চায়, ফাঁসি চায়, সাঈদীর ফাঁসি চায়, ■ ধর ধর, শিবির ধর,সকাল বিকাল নাস্তা কর, ■ রাজাকারের ফাঁসি চায়, ■ ধম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ কর, বন্ধ কর, ■ তুমি কে আমি কে , বাঙ্গালী, বাঙ্গালী, ■ ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও,

এই কচি কোমলমতি শিশুদেরকে কী চেতনা শেখানো হলো ? এর মধ্যে ফ্যসিবাদের চেতনা রয়েছে ।এই বয়সে রাজাকার, ফাঁসি চাই, ধর ধর, আগুন জালো,ভেঙ্গে দাও এর Concept তাদের মধ্যে আসার কথা নয়।কিন্ত তুবও আফিম খাওনোর মত তাদের কে গিলে খাওয়ানো হল। এরা এখন রাস্তা ঘাটে, স্কুল কলেজে বলে বেড়াচ্ছে এই শ্লোগান গুলো। এর ভবিষ্যত কী হবে।এই তরুন প্রজন্মকে যে ফ্যাসিবাদের চেতনায় প্রজ্জলিত করা হলো, এর হাত থেকে শিক্ষাগুরুরা রক্ষা পাবেন তো ?

আমার একটি বাস্তব ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল।ঈদে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি ঈদ উযজাপন করতে । ঈদের সময় গ্রামের অনেকের সাথে দেখা হয় । যারা দুর-দুরান্তে চাকুরী করেন তারাও বেড়াতে আসেন।এমন অনেক বন্ধ মিলে এ জায়গায় বসে আছি। এমন সময় একজন এলাকার মুরব্বী আমাদের কাছে এসে খুবই বিচলিতভাবে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবারা তোমরা কী বলতে পারো ঐ বাচ্চা ছেলেটির কিসের এত দুঃখ ? আমরা বললাম কেন কি হয়েছে ?

তখন তিনি বললেন, ছেলেটি শুধু বলছে- “আমি জ্ঞান হারাবো, মরেই যাব , বাঁচাতে পারবে না তো ।” এত ছোট বয়সে তার এত কষ্ট কেন?

আমরা মুরব্বীর কথা শুনে হাসি ঠেকাতে পারিনী । আমাদের হাসি দেখে মুরব্বী একটু বিব্রত বোধ করল । আমরা তার এই অবস্থা দেখে ঘটনাটি পরিস্কার করে বুঝিয়ে দিলাম । তারপর তিনি শুধু বললেন, হাইরে কলিকাল , কী যুগ এলো । এই কথা বলতে বলতে চলে গেল ।

নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পাছেন , আমরা সেদিন মুরব্বীকে কো ঘটনা বুঝিয়ে শান্ত করেছিলাম।তারপরও বলি , সম্ভবত চিত্রনায়ক রিয়াজ ও শাবনুর অভিনীত একটি গানের অংশ ছিল সেটি।

এই উদাহরনটি দিলাম এই কারনে যে, ঐ গানের ভাষা, অথ সম্পর্কে ঐ ছেলেটির কোন ধারনা ছিলনা । সে গানটি শুনে একটি লাইন মুখস্ত করে সমস্ত রাস্তায় অনবরত গাইতে থাকে।

আজকের গণজাগরণ মঞ্চে শিশুদেরকে শফতের মাধ্যমে যে মুল্যবোধ শেখানো হল,তার ফলাফল জাতি খুব ভালভাবে পাবে।

বিষয়: বিবিধ

২৪৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File