নবী প্রেমিক মহানবী (স) উম্মতেরা আজ কোথায় ?

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:৩৫:২৬ রাত

নবী প্রেমিক মহানবী (স) উম্মতেরা আজ কোথায় ?

আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কয়েকটি পংক্তি মনে পড়ে গেল।

ক)‘আল্লাহ তে যার পুর্ন ঈমান কোথা সে মুসলমান ।’ খ)নবী মোর পরশমণি, নবী মোর সোনার খনি, নবী নাম জপে যেজন সেই তো দু‘জাহানের ধনী। গ)তোরা দেখে যা আমেনা মায়ের কোলে, সেথা পুর্ণিমারই জোসনা দলে। ঘ) মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই, যেন গোরে থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পায়।

এভাবে আল্লাহ ও তার রসূল (স)এর বন্দনার কথা অনেক কবি, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার বিভিন্নভাবে বণর্ণা করেছেন। আল্লাহ ও তার রসূল (স)এর বন্দনা গেয়ে আত্মিক ও মানষিক শান্তি লাভ করেছে ও নিজেদেরকে ধন্য মনে করেছেন। এমন মানুষ মিলবে না আর এ ধরা থেকে, যে ছিল সকল মানুষের , ধনীদের, গরীবের, দুঃখীদের। যার মহিমায় এই পৃথিবী এত সুন্দর হয়েছে, যার আগমনে জাহিল সমাজ আলোর পথ খুঁজে পেয়েছে, যার সুপারিশ ছাড়া কাল কিয়ামতের মাঠে কোন ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবেনা, সেই মানুষটিকে (স) আমরা চিনতে পারিনা। তার নামটি সমস্বরে চিৎকার করে আল্লাহর জমীনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনা।

আমরা চিনেছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি নাকি বাঙ্গালী জাতির জনক। আমরা তার নামে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে শ্লোগান দিই ‘জয় বাংলা’ জয় বঙ্গবন্ধু, এখানে উল্লেখ্য, শেখ মুজিবুর রহমানের আগে বঙ্গবন্ধু নামক বিশেষণটি না নাগালে আবার শেখ সাহেবের মান-সম্মান কমে যাবে অথবা কোন এক বিশেষ শ্রেণীর তালিকায় পড়ে যেতে হবে। আবার জালো জালো, আগুন জালো, জালোরে জালো, আগুন জালো, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও সালাম, লও সালাম।বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে শহীদ জিয়ার নামের মহিমা প্রকম্পিত করি।অপরদিকে, পল্লীবন্ধু এরশাদের নামের মহিমাও প্রকম্পিত হয়। শুধু আল্লাহ ও তার রসূল (স) এর মহিমা জমীনে কেউ জোরে-সরে উচ্চারন করলেই কিছু লোকের গায়ে আগুন ও জ্বালা ধরে যায়। ‘নারায়ে তাকবীর-আল্লাহ সর্বশেষ্ঠ, আল্লাহ আকবর-আল্লাহ সবচেয়ে বড়।’ আমার নেতা, তোমার নেতা, বিশ্ব নবী মোস্তফা

এই শ্লোগানের মধ্যে আল্লাহ এবং তার রসূল (স) এর মহত্ব ও বড়ত্ব প্রমান করে । যে কারনে শয়তান ভয় পায়।কাজেই শয়তান এই শ্লোগান শুনলে তার কান ঝালাপালা হয়ে যায় এবং তা বন্ধ করার জন্য সে চক্রান্ত করতে পারে। এই চক্রান্ত রোধ করার জন্য মহান আল্লাহ পথও বাতলে দিয়েছেন ।কিন্তু আমরা যারা নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করি, আল্লাহ এবং তার রসূল (স) এর উপর ঈমানও এনেছি বলে দাবী করি , তাদের কেন ‘নারায়ে তাকবীর শ্লোগানে এত আপত্তি ।কী আছে এই শ্লোগানে ?

বাংলাদেশের ৯০% মুসলমানের মধ্যে রসূল (স) প্রেমী আশেকানের অভাব নেই । জামায়াতসহ সমমনা ১২ টি সংগঠন ছাড়াও ইসলামের নামে অসংখ্য দল ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার মধ্যে তাবলীগ জামাত, দেওয়ান বাগীর মুরিদান, আটরশির পীরের মুরিদান, চরমোনায়ের পীরের মুরিদান সহ লক্ষ লক্ষ নবী প্রেমিক মুসলমান রয়েছে। বছরে বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে নবী প্রেমের জয়গান শুনা যায়। নবীর জন্য বিটিভিসহ সকল মিডিয়া চ্যানেলগুলো ঐদিন গুলোতে নবী প্রেমের তারিফ করতে করতে অনেকটা র্মুছা যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্ত তারা এই ‘নারায়ে তাকবীর শ্লোগান শুনলে কেমন যেন অসস্থি বোধ করেন।আমি বুঝতে পারিনা এই শ্লোগানের মানে তো আল্লাহর বড়ত্ব।এই শ্লোগানের মানে তো আল্লাহর শ্রেষ্টত্বের প্রশংসা। প্রত্যেক মুসলমান পাঁচ বেলা সালাতে এই প্রশংসা করে থাকে । তাহলে কী - এর মধ্যে অন্য কোন অথ আছে ? একজন খোদায় অবিশ্বাসী নাস্তিক যদি আল্লাহর আলো, বাতাসে বড় হয়ে আল্লাহর জমীনে চিৎকার করে বস্ততন্ত্রের কথা, নাস্তিকত্বের কথা বলতে পারে , তাহলে খোদায় বিশ্বাসী হয়ে তার জমীনে আল্লাহর শ্রেষ্টত্বের প্রশংসার শ্লোগান দিতে এত কুন্ঠা কেন ? যাক এ বিষয়ে পর্রবতীতে একদিন আলোচনা করব । এবার আসি শাহবাগ চত্তরের গণআন্দোলন প্রসঙ্গে।

যার আদর্শ অনুসরন করে রাত্র-দিন অতিবাহিত হয়, সেই মহান নবী (স) এর কার্যক্রম ও চরিত্র নিয়ে এক শ্রেণীর ব্লগার কুরুচিপুর্ন লেখা ও বিষোধগার করেছেন যা বর্তমানে সর্বজন বিদীত। এরা কারা ? এদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তির জন্মই মুসলীম পরিবারে। একজন হিন্দু ব্লগার নিজের নাম আরিফুর রহমান ধারন করে ব্লগ লেখেন।এরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা করে শিক্ষিতও হয়েছে বটে।কিন্তু এদের মধ্যে ধর্মের আদর্শিক শিক্ষা না থাকায় তারা মুসলীম পরিবারে জন্ম নিয়েও আল্লাহ ও তার রসূল (স) চিনতে পারিনী। সে যাগ গে, তারা চিনতে পারিনী সেই জন্য তারা আমলও করেনা । তার জন্য কাল কিয়ামতের মাঠে তারা জবাবদিহী করবে। কিন্তু তাই বলে যারা আল্লাহ এবং তার রসূল (স) কে চিনতে পেরেছে এবং ভক্তিসহকারে তা প্রতিপালন করতে চায়- তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিমুলে আঘাত হানার সাহস তাদেরকে কে দিয়েছে ? দিনে দিনে তিল তিল করে যে বিশ্বাস সৃষ্টি করেছে , সেই বিশ্বাসের মুলে কুঠারাঘাত করার পরও নবী প্রেমিক মুসলমানগন জাগেনা কেন ? তাহলে কী তাদের বিশ্বাসে গলদ রয়েছে ? আল্লাহর কোর‘আন ও নবীর চরিত্র নিয়ে কুৎসিত মন্তব্য জানার পরও যদি ঈমানে আঘাত না লাগে , তাহলে আমরা প্রতিনিয়ত নামাযন্তে ঈমান ও আমল নিয়ে কী এত আলোচনা করি ? বহুত ফায়দা কীভাবে হবে ? কখন হবে ? নাস্তিকরা নাস্তিকত্বের রাষ্ট্র কায়েম করার মধ্য দিয়ে তো নিশ্চয়ই মুসলমানদের বহুত ফায়দা হওয়ার কথা নয়।

আল্লাহ রব্বুল আলামীন যেখানে রসূল (স) কে সর্বোত্তম চরিত্রের সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন এবং তার চরিত্র অনুসরন করার জন্য নিদের্শ দিয়েছেন, সেখানে কতিপয় নাস্তিক ব্লগার আল্লাহ এবং তার রসূল (স) এর চরিত্রের উপর কালিমা লেপন করেছেন। এই বিষয়টি নবী প্রেমিক মুসলমানেরা মেনে নিতে পারেনা।

এখন ঈমানের দাবী পুরনের সময় এসেছে। পার্থিব জগতে এই ছোট জীবনে পরীক্ষা দিয়ে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার সময় এখন। এর অসিলায় হয়ত জীবনের যাবতীয় গুনাহ খাতা মাফ করে দেবেন। তাই আসুন, ৯০% মুসলমানের এই দেশে রসূল (স) প্রেমী আশেকানদের আজকে সকল নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। আর যারা এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে নাস্তিক্যবাদ প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি করছে, তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে- এটা ওলী আওলীয়ার দেশ, এদেশে ইসলামের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবেনা । আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলাম ভালভাবে বুঝে তা পালন করার তাওফিক দিন। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File