রমজান কাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকে ? (পর্ব-২)

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২১ জুন, ২০১৪, ০৭:৩১:০৩ সন্ধ্যা



এ মাস নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আত্মমর্যাদা ও বরকতের মাস। গতানুগতিকতার স্বাভাবিক প্রবাহে যারা এ মাসটিকে পেয়েছে, এর মর্যাদা ও বরকত তাদের জন্য নয়। বৃষ্টি নামলে বিভিন্ন নদী, পুকুর, ডোবা, নিজ নিজ প্রশস্ততা ও গভীরতা অনুযায়ী বৃষ্টির পানি ধারণ করে। ভূখন্ডের বিভিন্ন অংশ নিজের ঊর্বরতা অনুসারে ফসল উৎপাদন করে, অথচ বৃষ্টির পানি ভূখন্ডের সকল অংশে সমানভাবে বর্ষিত হয়। একটি বড় প্রশস্ত পুকুর যে পরিমান পানি ধারণ করতে পারবে, একটি ছোট কলসীতে সে পরিমান পানি ধারণ করানো সম্ভব নয়। এমনিভাবে যদি বিস্তীর্ণ মরুভূমি বা অনুর্বর জমিতে বৃষ্টির পানি পড়ে, তা তো শুধু প্রবাহিত হয়েই চলে যায়, ভূমি তা থেকে উপকৃত হতে পারেনা। কিন্তু ঊর্বর জমিতে বৃষ্টির পানি পড়লেই ফসল জীবন্ত হয়ে উঠে। ঠিক একই অবস্থা মানুষেরও। রমাদ্বানুল মোবারকের ঐ অফুরন্ত সম্পদ থেকে আপনি কি কিছু পেতে চান? ঊর্বর ভূমির মতো আপনার মনটাকে নরম করুন, নিজের অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করুন, নিজের যোগ্যতা ও ধারণ ক্ষমতা থাকলে বীজ অঙ্কুরিত হবে, সম্পূর্ণ বৃক্ষ হবে, আর বৃক্ষ সৎ কাজের পত্ররাজী, ফুল ও ফলে সুশোভিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আপনারা সাফল্যের ফসল কেটে ঘরে উঠাবেন। কৃষকের মত আপনি শ্রম দেবেন, কাজ করবেন, প্রতিদানে জান্নাতের পুরষ্কারসমূহের ফসল আপনার জন্য প্রস্তুত হতে থাকবে। যত বেশী শ্রম দেবেন, তত বেশী ফসল পাবেন। পক্ষান্তরে যদি আপনাদের মন পাথরের মতো শক্ত হয় এবং আপনারা অসতর্ক কৃষকের মতো শুয়ে-বসে দিন কাটান, তাহলে রোযা, তারাওয়ী, ক্কিয়াম ও তিলাওয়াতের বিনিময়ে পাওয়া রহমত ও বরকতের সমস্ত পানি বয়ে চলে যাবে অথচ আপনার তহবিলে কিছুই আসবেনা।

প্রকৃত অর্থে আল্লাহর দেয়া সুযোগ ছাড়া সত্যিই কিছু পাওয়া যায়না, আর যারা চেষ্টা-সাধনা এবং পরিশ্রম করে, এই ‘আল্লাহর দেয়া সুযোগ’ শুধু তাদেরই হস্তগত হয়। দেখুন, এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেন? ‘আপনি তাঁর দিকে এক হাত অগ্রসর হলে আল্লাহ্ আপনার দিকে দু’হাত অগ্রসর হবেন। আপনি তাঁর দিকে হেঁটে অগ্রসর হলে আল্লাহ্ আপনার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হবেন’ (মুসলিম: আবু জর্দ রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। কিন্তু পিছন দিকে ফিরে, অসচেতন বা বেপরওয়াভাবে আপনি যদি দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে বলুন, কিভাবে আপনাকে আল্লাহ্ সুযোগ সৃষ্টি করে দিবেন?

পুরো রমাদ্বান মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাবে, আর আপনার তহবিল শূন্যই থেকে যাবে, এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টি করবেননা। কিছু করার জন্য ও নিজের ভাগের রহমত লুটে নেয়ার জন্য কোমর কষে নিন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই সতর্কবাণীটিকে ভালোভাবে স্মরণ রাখুন; ‘অনেক রোযাদার এমন আছে, যারা নিজেদের রোযা থেকে ক্ষুৎ-পিপাসার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পায়না, অনেকে রাতের নামাজ আদায় করে থাকে, কিন্তু তাদের এ নামাজ রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনা’ (দারামীঃ আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদ্বানের আগমনের পূর্বে নিজের সাথীদেরকে উদ্দেশ্য করে এই মাসের মহত্ব ও বরকত সম্পর্কে আলোচনা করতেন এবং এই মাসের বরকতের ভান্ডার থেকে নিজেদের হিসসা (অংশ) পুরোপুরি সংগ্রহ করার জন্য ব্যাপক পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তাগিদ করতেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে আমিও একই বিষয়বস্তুর উপর আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। অর্থাৎ, রমাদ্বান মাসের মহত্ব ও বরকতের গূঢ় রহস্য কি? এ মাস থেকে পরিপূর্ণ কল্যাণ লাভের জন্য কি পরিমাণ সতর্কতা ও প্রস্তুতি প্রয়োজন, কোন্ কাজগুলোর প্রতি অগ্রাধিকার দিতে হবে, লক্ষ্যপানে পৌঁছানোর জন্য কোন্ পথে চলতে হবে এবং ভ্রান্ত পথ কোনটা তা চিহ্নিত করতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৬১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

237312
২১ জুন ২০১৪ রাত ০৯:১৯
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : বরকতের মাস???

Rolling on the Floor Rolling on the Floor



237341
২১ জুন ২০১৪ রাত ১১:৪১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
রমজান মাস আমাদের আত্মশুদ্ধির জন্য আহব্বান জানায়।

অপ্রয়োজনিয় মন্তব্যটি মুছে দিলে ভাল হয়।
237349
২২ জুন ২০১৪ রাত ১২:০৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
237386
২২ জুন ২০১৪ রাত ০২:১৮
ভিশু লিখেছেন : খুব ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
237392
২২ জুন ২০১৪ রাত ০২:২৬
পবিত্র লিখেছেন : খুবি ভালো লাগলো!!! Happy Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File