খোশ আমদেদ মাহে রমাদ্বান( WELCOME THE MONTH OF RAMADAAN)
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২১ জুন, ২০১৪, ০১:৩৩:১৩ দুপুর
আরেকবার আমাদের উপর রহমতের ছায়া বিস্তার করার জন্য রমাদ্বানের মোবারক মাস এগিয়ে আসছে। আল্লাহ্ তা‘আলার বরকত ও করুণাধারায় আমাদের জীবনগুলোকে সিক্ত করতে পবিত্র মাহে রমাদ্বান ফিরে আসছে পুনরায়। যেখানে স্বয়ং নবী করীম (সাঃ) এ মাসটিকে ‘শাহরুন আজীম’ এবং ‘শাহরুম মোবারাকাহ্’ নামে আখ্যায়িত করেছেন, সেই পবিত্র মাসের মহত্ব এবং বরকত সম্পর্কে আমাদের আর কি ই বা বলার থাকতেপারে? অর্থাৎ এ মাসটি হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মহান মাস, বরকতের মাস। আমাদের বিবরণ এ মাসের মহত্বকে ছুঁতেও পারবেনা, আমাদের ভাষা এর বরকত বর্ণনা করে শেষও করতে পারবেনা।
এই মাসটি কেন এতো মহান?
মাসেরই আঁচলে এমন একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও মহামুল্যবান রাত্রি লুকায়িত আছে, হাজার মাসে যাকিছু দেয়া হয় সেই একটি রাতে তার চেয়েও বেশী বরকত ও কল্যাণের ভান্ডার লুটিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। সেই মোবারক মাসেই আমাদের মহান প্রতিপালক আমাদের জন্য তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত আমাদের উপর নাযিল করেছেন।
এরশাদ হচ্ছেঃ অর্থাৎ ‘আমরা সুস্পষ্ট ঐ কিতাবকে বরকতের রাতে নাযিল করেছি’ (সূরা দোখানঃ৪৪:৩)। এই কিতাবটা হচ্ছে رَحْمَةًمِّنرَّبِّكَ‘তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে রহমত’ (সূরা দোখানঃ৪৪:৬)।
প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে এমাসের প্রতিটি দিবস পবিত্র, প্রতিটি রাত বরকতপূর্ণ। এর প্রতিটি দিনে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে অগণিত বান্দাহ্ প্রভূর আনুগত্য ও সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা এবং বৈধ আকাঙ্খা পরিত্যাগ করে স্বাক্ষ্য দেয় যে, শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই তাদের প্রভূ এবং একমাত্র তিনিই তাদের চাওয়া-পাওয়ার মূল লক্ষ্যবস্তু। জীবনের প্রকৃত ক্ষুধা ও পিপাসা হচ্ছে তাঁর আনুগত্য এবং ইবাদাত করা, একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত রয়েছে অন্তরের প্রশান্তি আর শিরা-উপশিরার প্রবাহ। আর যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে, তখন অসংখ্য বান্দাহ্ আল্লাহ্ তা‘আলার সামনে ক্কিয়াম, তাঁর সাথে কথা বলা এবং তাঁর যিকিরের স্বাদ ও বরকত সংগ্রহ করে করে ধন্য হতে থাকে, আর এভাবে তাদের অন্তরগুলো উজ্জল প্রদীপের ন্যায় রাতের আকাশে তারার মতো চমকাতে থাকে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা‘আলা কথাটা এভাবে বলছেনঃ
অর্থাৎ ‘আল্লাহ্ আকাশমন্ডল ও যমীনের নুর, তাঁর নুর-এর দৃষ্টন্ত হচ্ছে এরূপ, যেমন একটি তাকের উপর প্রদীপ রাখা হয়েছে, প্রদীপ রয়েছে একটি ফানুসের মধ্যে। ফানুসের অবস্থা হচ্ছে মোতির মতো ঝকমক করা তারকা। আর সেই প্রদীপ যাইতুনের এমন এক বরকতপূর্ণ গাছের তেল দ্বারা উজ্জল করা হয়, তা পূর্বের ও নয়, পশ্চিমের ও নয়। যে তেল আপনা আপনিই উথলে পড়ে, আগুন যদি না ও লাগে। (এইভাবে) আলোর উপর আলো (বৃদ্ধি পাওয়ার সব উপাদান একত্রিত)। আল্লাহ্ তাঁর নুরের দিকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তিনি লোকদেরকে উদাহরণ দিয়ে কথা বুঝিয়ে থাকেন। তিনি সর্ব বিষয়ে ভালোভাবে ওয়াকিফহাল। (তাঁর নুরের দিকে হেদায়েতপ্রাপ্ত লোক) সে সব ঘরে পাওয়া যায় যেগুলোকে উচ্চ-উন্নত করার এবং যার মধ্যে আল্লাহকে স্মরণ করার তিনি অনুমতি দিয়েছেন। তাতে এ সব লোক সকাল-সন্ধ্যা তাঁর তসবীহ্ করে, যাদের ব্যবসা ও কেনা-বেচা আল্লাহর স্মরণ, সালাত কায়েম ও যাকাত আদায় করা থেকে গাফিল করে দেয়না, তারা সেই দিনকে ভয় করতে থাকে যেদিন দিল উল্টে যাওয়ার এবং চক্ষুদ্বয় পাথর হয়ে যাওয়ার অবস্থা দেখা দিবে। (সূরা আন্ নুরঃ ২৪৩৫-৩৭)।’
এই মাসের প্রতিটি মুহূর্তের মধ্যে এতো বেশী বরকত লুকায়িত আছে যে, এ মাসে করা নফল কাজগুলো ফরজ কাজের মর্যাদা পায়, আর ফরজ কাজগুলো সত্তর গুণ অধিক মর্যাদা পায় (বায়হাকীঃ সালমান ফারসী রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। ‘রমাদ্বানের মোবারক মাস এলে আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, সৎ পথে চলা সকলের জন্য সহজ এবং উম্মুক্ত হয়ে যায়, শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়। অন্যায় ও অসৎ তৎপরতা বিস্তারের সুযোগ অপেক্ষাকৃত কমতে থাকে’ (বুখারী, মুসলিমঃ আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। ‘অতঃএব যে ব্যক্তি রমাদ্বানের সম্পূর্ণ রোযা রাখবে, তার সকল গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হবে। ‘লাইলাতুল ক্কদর’-এ যে ব্যক্তিগণ ক্কিয়াম করে রাত কাটিয়ে দিবে, তাদেরকেও ক্ষমা করে দেয়া হবে শুধুমাত্র এই শর্তে যে, আল্লাহ্ তা‘আলার সকল বাণী আর ওয়াদাকে তারা সত্য মনে করবে, বান্দাহ্ হিসেবে নিজের সকল দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সাথে পালন করবে এবং সর্বদা সতর্কতার সাথে আত্মসমালোচনার কথাও মনে রাখবে’ (মুসলিম: আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)।
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খারাপ মানুষের প্রতি দয়ালু হওয়া মানে ভালো মানুষের প্রতি নিষ্ঠুর হওয়া।
সব দেশেই পুলিশ থাকে। অপরাধী অপরাধ করলে পুলিশ হাত গুটিয়ে থাকে? কেন থাকা উচিত না? অপরাধীরা কষ্ট পাবে।
আর তাই যদি হয় তো ৯০% মুমিনের বাংলাদেশ ফরমালিনের স্বর্গ কেন?
মন্তব্য করতে লগইন করুন