“বাংলাদেশ সব সম্ভাবনার দেশ”
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১৮ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:০৩:০০ দুপুর
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে দূযোগের ঘনঘটা দেখে অধিকাংশ মানুষই এখন বলে এদেশে আর কিছুই হবেনা। আমি বলি, কেন হবেনা ? বাংলাদেশ সব সম্ভাবনার দেশ। এখানে যা প্রতিনিয়ত হচ্ছে ও ঘটছেঃ
ক) পিতা-মাতাকে খাটের সাথে বেধে রেখে যুবতী মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ সংঘটিত হচ্ছে এই বাংলার আনাচে কানাচে। প্রকাশ্য দিবালোকে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানি ঘটছে অহরহ।
খ) সরকারী অফিসে বড় বড় কর্মকর্তার সামনে দলীয় ক্যাডারা টেন্ডারবাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে অথবা অন্যদের টেন্ডার ছিঁড়ে ফেলে নিজেদেরগুলো বাক্সে ঢুকিয়ে দিচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে
গ) জীবন রক্ষার অধিকার সমুজ্জল করার দায়িত্ত সরকারের। সরকারের পুলিশ বাহীনীর সামনে দিনের বেলায় হাজার হাজার মানুষের সামনে চাপাতি দিয়ে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এই সবুজ বাংলায়।
ঘ) গনতান্ত্রিক দেশে মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার একটি সাংবিধানিক অধিকার । রাজনৈতিক মামলায় হয়রানি করে সেই অধিকার লংঘিত হচ্ছে অহরহ। নিরীহ মানুষকে মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটানো হচ্ছে আমাদের এই বাংলাদেশে।
ঙ) সাংসদকে বলা আইন তৈরির মেশিন। এই সাংসদদের মধ্যে যারা অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্ন, তাদেরকে সরকারের মন্ত্রী ও কেবিনেট মন্ত্রী বানানো হয়। এই মন্ত্রীরাই এখন জনসভায় ক্রেষ্ট এর পরিবর্তে নগদ টাকা চাওয়া শুরু করেছেন বাংলাদেশে।
চ) নাগরিক স্বাধীকার নামক সংগঠনের একটি দেয়াল লিখনে দেখেছিলাম, “ ফাইল ঠেকিয়ে টাকা আদায় করা আর পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা আদায় করা একই কাজ।”তাদের শেআগানের বাস্তবতা দেখছি এখন এই সবুজ বাংলায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাড়িয়ে প্রকাশ্য চাঁদাবাজী হচ্ছে সবসময়।
ছ) রাস্তায় বের হলে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে চলেছে অবিরাম। মানুষ বিবেক, মূল্যবোধ হারিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে দেখে ছিনতাইকারী কিভাবে দৌড়ায়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
জ) প্রচলিত আছে, “সাদা জামা গায়ে দেয়া ভদ্র মানুষেরা ব্যাংকে চাকুরী করে” । সেখানে নিরাপদ ভেবে মানুষ তাদের কষ্টের অর্জিত সম্পদ ব্যাংকে রেখে আসে। অথচ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কুচক্রীমহল জনগনের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে এই বাংলায়।
ঝ) মানুষের জানমাল ও সমাজে শান্তি শৃংখলার নিমিত্তে গঠিত পুলিশ বাহীনী জনগনকে ভয় দেখিয়ে টাকা খাচ্ছে অবিরত । যেখানে নেই কোন নিয়ন্ত্রন। পুলিশের আই জি থেকে গ্রামের চোকিদারী পর্যন্ত এই মহাউৎসবে মেতে রয়েছে । বর্তমানে সমাজে অনাসৃষ্টির কাজেও এরা ব্যবহৃত হচ্ছে।
ঞ) বলা হয়, কোর্টের ইটও নাকি টাকা না পাইলে কথা কয়না” বলছিলাম জর্জকোট, হাইকোট, সুপ্রিম কোটের কথা। যেখানে একজন সাধারন নিরীহ মানুষের জন্য বিচারের বানী আজ নিভৃতে কাঁদছে। এরা নাকি সমাজের শিক্ষিত ভদ্র মানুষ । কিন্তু টাকার কাছে কতারা তাদের বিবেক, মূল্যবোধ সবই বিক্রি করে থাকে আমাদের সোনার এই বাংলাদেশে।
ট) অপরাধ সনাক্ত করার জন্য পুলিশ আসামীকে রিমান্ডের এনে জিজ্ঞাসা করে। এখানে রিমান্ডের নামে অত্যাচার করতে করতে পুঙ্গু কিংবা হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে নিবিকারে। মানবাধিকার যেন অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে। এটা বাংলাদেশে সম্ভব ।
ঠ) সমাজের সভ্য মানুষগুলো অসভ্যের ন্যায় ঘুষ খেয়ে, দূর্নীতি করে বিশাল বৈভবের মালিক হয়ে প্রভু সেজে বসেছে। তারা এখন বড় বড় নীতিকথা শুনান। এটা যে একটি অপরাধ , তা তারা উপলব্ধি করতে পারেন না। এসবই বাংলাদেশে সম্ভব হচ্ছে।
ড) বলা হয়, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। কিন্তু এই মেরুদন্ড দাড় করানোর জন্য যে শিক্ষা দেয়া হচেছ, তাতে মেরুদন্ড আরো ভেঙ্গে পড়ছে। শিক্ষা অফিসগুলোতে দূর্ণীতির ছড়াছড়ি। যে শিক্ষা শিশুকে দেয়া হবে, তার মধ্যে রয়েছে অনৈতিকতা ছোয়া। শিক্ষার গ্রহণ করতে করতেই মেরুদন্ড বাকা হয়ে যাচ্ছে। আর এই সবই সম্ভব হচ্ছে বাংলাদেশে।
ঢ) কারাগারগুলো হল সংশোধানাগার। সেখানে রয়েছে মদ, গাঁজাসহ নিষিদ্ধ পানীয় ব্যবস্থা। কারাগারে বসে বাইরের অপরাধ জগতের সবকাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে। তাই দীর্ঘদিন কোনো আসামী কারাগারে থাকলেও তিনি সংশোধিত না বরং অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠছেন। সেটা বাংলাদেশের মতো কারাগারেই সম্ভব ।
ণ) অনাদিকাল থেকে এদেশের আলেম ওলামারা জাতির কাছে সম্মানিত ব্যাক্তি হিসাবে গণ্য হয়ে আসছেন। সেই আলেম ওলামাদেরকে লাথি মেরে, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে , নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। যারা বেঁচে ছিলেন, মুচলেকা দেয়ার মতো কান ধরে ঢাকা থেকে
বের করে দেয়া হয়েছে। এটা 90% মুসলমানের বাংলাদেশেই সম্ভব হয়েছে।
ত) কবিতার পংত্তিতে পড়েছিলামঃ
“মহাজ্ঞানী মহাজন,
যে পথে করেছেন গমণ,
সেই পথ লক্ষ্য করে ,
স্বীয় র্কীর্তি ধ্বজা ধরে,
আমরা হবো বরণীয়।”
জাতীয় সংসদের মন্ত্রী, সাংসদ, জনগনের সমর্থনের ভিত্তিতে আইন পরিষদের সদস্য হয়ে সংসদে এসে প্রণয়ণের কাজে নিয়োজিত থাকেন। এদের জ্ঞান গরিমা বেশী বলে আমরা তাদের নিকট থেকে জ্ঞান গরিমা পাবো বলে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকি। কিন্তু তারা পবিত্র সংসদে যে সব বিষয়ে তর্ক-বির্তক ও টেবিল চাপড়া-চাপড়ি করে, তা দেখে আমরা বরণীয় হওয়ার চেয়ে আমাদের নির্ভেযাল জ্ঞানের মধ্যে তাদের দুষিত জ্ঞানের কথা ঢুকে গিয়ে মর্ম যাতনার কারন হয়ে যাচ্ছে। এগুলোও সম্ভব হচ্ছে আমাদের কষ্টের অর্জিত বাংলাদেশে।
এভাবে হাজারো হাজারো কাজ সম্ভব হচ্ছে ব-দ্বীপ এই ভুখন্ডে। কাজেই যারা বলছেন, এদেশে কিছু হবেনা, তারা মনে হয় সঠিক বলছেন না। কারন এই দেশ হলো সব সম্ভাবনার।
এখন আর ওলি আল্লাহর বাংলাদেশ নেই, এখন শাহমুখদুম, শাহজালাল, শাহপরান এর বাংলাদেশ নেই, এই বাংলাদেশ এখন শুধুই শেখ হাছিনার ও তার দাদা ভারতের।
বিষয়: বিবিধ
২৪৫০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন