হিন্দুরা বলেন ‘ভগবান ‘ আর ‘আল্লাহ’ নাকি একই জন। আসলেই কি তাই !

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:০৭:৫১ দুপুর



সূরা হজ্জে মহান আল্লাহ মূর্তিপুজকদের উদ্দেশ্যে বলেন,

“হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।” (সূরা হজ্জে-73)

O mankind! A similitude has been coined, so listen to it (carefully): Verily! Those on whom you call besides Allâh, cannot create (even) a fly, even though they combine together for the purpose. And if the fly snatched away a thing from them, they would have no power to release it from the fly. So weak are (both) the seeker and the sought.

‘ভগবান; অর্থ হলো জগদ্বীশ্বর, ঈশ্বর । এর স্ত্রী লিঙ্গ হলো ভগবতী, যা অর্থ হলো পরমেশ্বরী, দূর্গা।

অপরপক্ষে, আল্লাহ নিজেই তার পরিচয় দিচ্ছেন,

“আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই ৷ অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছুই তিনি জানেন ৷ তিনিই রহমান ও রহীম ৷আল্লাহ-ই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই৷ তিনি বাদশাহ, অতীব পবিত্র, পূর্ণাঙ্গ শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, হিফাযতকারী, সবার ওপর বিজয়ী, শক্তি বলে নিজের নির্দেশ কার্যকরী করতে সক্ষম ৷ এবং সবার চেয়ে বড় হয়েই বিরাজমান থাকতে সক্ষম ৷ আল্লাহ সেই সব শিরক থেকে পবিত্র যা লোকেরা করে থাকে ৷সেই পরম সত্তা তো আল্লাহ-ই যিনি সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের র্নিদেশ দানকারী এবং সেই অনুপাতে রূপদানকারী৷ উত্তম নামসমূহ তাঁর-ই ৷ আসমান ও যমীনের সবকিছু তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করে চলেছে ৷ তিনি পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী ৷

(সূরা হাশরঃ ২২- ২৪)

আল্লার কোন স্ত্রী লিংগ নেই। ‘আল্লাহ ’ শব্দটি হচ্ছে একক -লা শরীক আল্লাহর ‘ইসমে জাত ’ বা মৌলিক নাম, মূল সত্তার পরিচায়ক নাম। ‘লা -ইলাহা ইল্লাল্লাহ ’ কথাটির শব্দগত তরজমা হচ্ছে কোন ইলাহ নেই সেই বিশেষ সত্তা ব্যতীত , যাঁর নাম আল্লাহ। এর তাৎপর্য হচ্ছে এই যে , সমগ্র সৃষ্টিতে আল্লাহ ব্যতীত এমন আর কোন সত্তার অস্তিত্ব নেই, যে উপাসনা পাওয়ার যোগ্য হতে পারে। তিনি ব্যতীত এমন যোগ্যতাসম্পন্ন আর কেউ নেই, ইবাদাত বন্দেগী ও আনুগত্যে যার সামনে মস্তক অবনমিত করা হয়। তিনিই একমাত্র সত্তা, যিনি তামাম জাহানের মালিক ও বিধানকর্তা , সবকিছুই তাঁর মুখাপেক্ষী , সবাই একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই সাহায্য কামনা করতে বাধ্য । তিনি মানুষের উপলব্ধির বাইরে লুক্কায়িত এবং তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করতে গিয়ে মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে।

‘ইলাহ ’ বলতে কি বুঝায় , সবার আগে তা-ই বুঝে নিতে হবে। আরবী ভাষায় ‘ইলাহ ’শব্দের অর্থ হচ্ছে ইবাদাতের যোগ্য অর্থাৎ শ্রেষ্ঠত্ব , গৌরব ও মহত্বের যে সত্তা উপাসনার যোগ্য এবং বন্দেগী , ইবাদাতে যাঁর সামনে মস্তক অবনিমত করা যায়। ‘ইলাহ ’ শব্দের অর্থে এ তাৎপর্য ও শামিল রয়েছে যে , তিনি হবেন অনন্ত শক্তির অধিকারী , যে শক্তির উপলব্ধি মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধির সীমানা অতিক্রম করে যায়। ‘ইলাহ’ শব্দের তাৎপর্যের মধ্যে এও রয়েছে যে , তিনি নিজে কারুর মুখাপেক্ষী হবেন না, অথচ আর সবাই জীবনের সকল ব্যাপারে তাঁর মুখাপেক্ষী হবে এবং তাঁর কাছে সাহায্য ভিক্ষা করতে বাধ্য হবে।

তাহলে ‘ভগবান’ আর ‘আল্লাহ’ একই সত্ত্বা বলাটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা সচেতন মহলের কাছে আমার আবেদন রইল।

বিবেকের কাছে প্রশ্ন ?

এই দুই সত্ত্বা যদি এক হয় , তাহলে কিভাবে তিনি তার সৃষ্টিকে একই সময়ে দুই রকম নির্দেশ দান করেন। দুই ধরনের বিশ্বাস সৃষ্টি করাতে বাধ্য হলেন।

যেমন , ইসলাম ধর্মের অনুসারীদেরকে আল্লাহ বলেছেন,

“প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর আশ্বাদ গ্রহন করতে হবে, (ইমরান- ১৮৫)

তিনি অন্যত্র বলেছেন,

“ এমনকি যখন এদের কারোর মৃত্যু উপস্থিত হবে তখন বলতে থাকবে, ‘‘হে আমার রব ! যে দুনিয়াটা আমি ছেড়ে চলে এসেছি সেখানেই আমাকে ফেরত পাঠিয়ে দাও, আশা করি এখন আমি সৎকাজ করবো ৷ কখনোই নয়, এটা তার প্রলাপ ছাড়া আর কিছু আর নয় ৷ এখন এ মৃতদের পেছনে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে একটি অন্তরবর্তীকালীন যুগ—বরযখ ,যা পরবর্তী জীবনের দিন পর্যন্ত থাকবে ৷( সূরা মুমিনুনঃ ৯৯ -১০০)

ভগবানে বিশ্বাসী হিন্দুরা পুর্নজীবনে বিশ্বাস করেন । তারা বলেন,

“যতক্ষন মানুষের আত্মা পাপমুক্ত হবেন না, ততবার মৃত্যুর পর তিনি অন্যরুপ ধারন করে পৃথিবীতে পর্দাপন করতে থাকবেন।”

ভগবান ও আল্লাহ একই হলে মানুষের মধ্যে দুই ধরনের বিশ্বাস সৃষ্টি হতে পারেনা।

তাই ‘ভগবান ’ও ‘আল্লাহ; কে এক কাতারে ফেলে সরলীকরন করার যে মানুষিকতা তা আরেক ধরনের বড় শিরকের কাজ।

বিষয়: বিবিধ

৩৫২৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

167201
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০০
সালাহ লিখেছেন : এটা হল গাজাখোরি তত্ব । ওরা বলে ভগমানের স্ত্রী আছে , আর আমরা বলি আল্লাহর স্ত্রী নেই , খ্রিস্টানরা যীশুকে বলে আল্লাহর ব্যাটা , আমরা বলি আল্লাহ সন্তান গ্রহন করা থেকে পবিত্র । ভালো লিখনি দিবার জন্য ধন্যবাদ
167306
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৯
সালাম আজাদী লিখেছেন : দু:খ আমাদের, আল্লাহ থাকতেও তাকে আমরা খোদাও বানিয়ে ফেলি। অগ্নি পুজকরা যাকে খোদা বলে, আমাদের অধিকাংশ আলিম উলামা তাকেই আল্লাহ বুঝিয়ে থাকেন
205444
১০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:৫৪
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন : Thanks. Spiritually informative.

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File