নেতা হিসাবে যখন কারো সম্পর্কে মন্তব্য করতে হয় , তখন নিজস্ব আচরণটা সবার উর্দ্ধে থাকতে হয়।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৪৬:৩৯ দুপুর
বিশ্ব ইতিহাস পর্যালোচনা করে আমরা জানতে পারি যে, জ্ঞানে পরিপূর্ণতা অর্জনকারী কোনো মনীষীই ধর্মমানবদের চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেননি; কুৎসা কিংবা কটূক্তি পর্যন্ত করেননি।
এ সম্পর্কে মাওলানা রুমী (র বলেন,
“ নিষ্ফল বৃক্ষ অনবনমিত শিরে
থাকে দণ্ডায়মান,
ফুলে ফলে পরিপুরিত বৃক্ষ,
সদা থাকে নিম্নপান।”
ভোগবাদী আদর্শ আর বস্তুবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এক শ্রেণীর সুন্দর চকচকে মানুষ বের হয়, যাদের আত্মা থাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত, অন্তর্দৃষ্টি থাকে শূন্য, প্রত্যয় থাকে দুর্বল, নিরাশাই হয় তাদের সম্বল। আর এরাই হলো শয়তানের প্রকৃত দোসর। জ্ঞান শিল্প ধর্ম বিবেক অন্তরসহ তাদের সব কিছুই ঘোরে বস্তুবাদের পিছনে। ধর্মীয় মহামানবদের মর্যাদা সম্পর্কে তাদের জ্ঞান থাকে খুবই সীমিত।
এই সীমিত জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ নিজের বিপদে নিজেই যখন সমাধান খুঁজে পায়না, তিনি কেমন করে বহুমুখী আচরণবিশিষ্ট মানুষের সমস্যার সমাধানের পথ বাতলে দিতে পারেন ? তাই তো দেখা যায়, তাদের অসম্পুর্ন চিন্তা বাস্তবায়ন করতে গেলে অন্যপাশে নতুন সমস্যা ঘণিভুত হয়ে ওঠে। এখানেই রয়েছে সর্বশক্তিমান আল্লাহর তায়ালার জাতসত্তার বৈশিষ্ট্য।
আল্লাহ মানূষ সৃষ্টি করে তাকে পরিচালনার জন্য নবী-রসূলের মাধ্যমে গাইড লাইন দিয়ে সত্য পথ বাতলে দিয়েছেন। যে কারনে নারী-পুরুষ সকল মানুষের মুক্তির গ্যারান্টি রয়েছে ইসলামে । ইসলামের এই প্রবর্তক রসূল (স) আল্লাহ প্রদত্ত গাইড লাইন ফলো করেছিলেন বলেই সমাজের মানুষগুলো মুক্তির স্বাদ পেয়েছিলেন। তিনি যা বলতেন তা নিজে আগে করে দেখাতেন । .
আল্লাহ বলেন,
হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা নিজেরা করো না ? (সূরা ছফ-২)
আমরা আজ তার আদর্শ ভুলে গিয়ে নিজেদের মতাদর্শের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুজতে গিয়ে অযাচিতভাবে পৃথিবীতে অনাসৃষ্টি করে চলেছি।
তাইতো জর্জ বার্নার্ড শ যথার্থই বলেছেন,
”I believe that if a man like him (Muhammad) were to assume the dictatorship of the modern world he would succeed in solving its problems in a way that would bring it the much needed peace and happiness.”
অর্থ্যাৎ আজো যদি মহানবী সা:-এর ন্যায় একজন নিঃস্বার্থ মানবদরদি মহামানব থাকত, তবে পৃথিবীর প্রতিটি ঘরে শান্তি ও উন্নয়নের প্রবল স্রোত বয়ে চলত।
নারী মুক্তির বিষয়ে প্রখ্যাত অমুসলিম চিন্তাবিদ Dr. Annic Sesaht বলেন :
‘আমি প্রায়ই চিন্তা করে দেখছি যে, খ্রীষ্টধর্ম অপো ইসলামে নারীদের স্বাধীনতা অনেক বেশি।… নারী জাতি সম্পর্কে আল কুরআনের আইন অনেক বেশি সঠিক ও উদার।’
PIERRE CRABITES নামে এক আমেরিকান ভদ্রলোক বলেন,
“ Ô Muhammad (SM) was probably the greatest champion of womens rights the world has even seen.Islam has conferred upon the Muslim wife property right and judicial status exactly the same as that of her husband.”
আজকে যে সব নেতা কিংবা সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবি সমাজ নিচের ছবিতে দেখুন:
রাজপথে, বিভিন্ন সভা সেমিনারে, মিডিয়াতে টক শো এর মাধ্যমে ইসলামকে মধ্যযুগীয় বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং মুক্ত চিন্তার অধিকারী বলে অবাধ স্বাধীনতার শ্লোগানে মুখরিত করছেন, তারা কি তাদের নিজস্ব আচরণটি সবার উর্দ্ধে রাখতে পেরেছেন ? তারা কী নিজেদেরকে সমালোচনার উর্দ্ধে মনে করেন এবং মানুষ কী তাদের কে প্রকৃতঅর্থেই পথপ্রদর্শক বলে গ্রহণ করেন ? এছাড়া সার্বজনীন মুক্তির ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে তাদের জানা ও মানা এবং বিশ্বাসের ব্যাপারে সাধারন মানুষের গ্রহণযোগ্যতা কতুটুকু ? তা বিশ্লেষনের দাবী রাখে ।
নেতা হিসাবে কারো সমালোচনা করতে গেলে নিজস্ব আচরণটা সবার উর্দ্ধে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় নতুবা সেই কথার মুল্যায়ণ থাকেনা।
তাই বলব, ফিরে আসুন সেই আলোকবর্তিকার কাছে, যিনি সর্বকালের, সর্বযুগের সকল মানুষের সকল সমস্যার সমাধান দিয়ে গেছেন তাকে অনুসরণ করি । এই আলোতে পথ চলতে গিয়ে কখনোও যদি সামান্যতম ভুল হয়ে যায় , সঙ্গে সঙ্গে আলোর মালিকের কাছে ক্ষমা চাই, তিনি খুবই করুনার আধার, আশ্রয়দাতা, পথ দেখিয়ে দিবেন।
মিথ্যে অহংকারে বেশী জানলেওয়ালা, বেশী করনেওয়ালা, বেশী বুঝনেওয়ালা হয়ে মানুষের প্রভু সাজাঁর চেষ্টা না করি।
বিষয়: রাজনীতি
১৮৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন