আল্লাহর সাহায্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব মানুষের, আর কোরআন রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহর ।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:৪৭:৪৬ রাত
ইদানিং প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রোনিক্স মিডিয়া, রাজপথে, নভা সেমিনারে এক শ্রেনীর বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবীদ, লেখক ইসলামের সেবক হয়ে প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছেন,
“ ইসলামকে রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহর, হেফাজতে ইসলামের নয়।”
যারা এ কথা বলছেন তাদের অধিকাংশই দেশে বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত । ইসলাম সম্পর্কে তাদের বক্তব্য শুনলে তাদের জন্য বড় মায়া হয়। তারা অনেকে অনগল ইংরেজীতে কথা বলেন, লেখেন। কিন্তু “আল্লাহ’ শব্দের উচ্চারণ করতে গেলে আল্লাহর ‘হ, মুখে আসেনা । লিখতে গেলে লেখেন আল্লা। ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে গেলে বিসমিল্লাহর ‘হ, মুখে আসেনা । লিখতে গেলে লিখে বিসমিল্লা। এই তাদের ইসলাম সম্পর্কে বিদ্যা। এরাই মুখে আওড়িয়ে যাচ্ছেন “ ইসলামকে রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহর, হেফাজতে ইসলামের নয়।”
তাদের কাছে আমার জি্জ্ঞাসা , ‘ইসলামকে রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহর’ এ কথা কোরআনের কোন জায়গায় তারা পেয়েছেন ? এসব কথা বলে নিজের দায়িত্ব পাশ কাটনোর সুযোগ খুজঁছেন। ইসলাম থেকে দুরে গিয়ে মানুষকে পাপের পথে হাতছানি দিতে চাইছেন।
পাঠকবৃন্দ, মহান আল্লাহ কোরআন শরীফের সূরা হিজর এ ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন,
“ ﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ﴾
আর এ বাণী, একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক৷(সূরা হিজর-৯)
রসূল (স) যে জাতিকে দাওয়াত দিচ্ছিলেন, তাদের অবিরাম হঠকারিতা , বিদ্রূপ , বিরোধিতা , সংঘাত ও জুলুম - নিপীড়ণের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল । নিজের জাতির কুফরী , স্থবিরতা ও বিরোধিতার পাহাড় ভাংতে ভাংতে রসূল (স) ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলেন । মানসিক দিক দিয়ে তিনি বারবার হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন । তা দেখে আল্লাহ তাঁকে সান্তনা এবং সাহস যোগানোর জন্য উপরোক্ত আয়াতটি নাযিল করেন।
এখানে কোরআন শরীফের 6666 টি আয়াত বা বানীর কথা বলা হয়েছে। এই আয়াতের কোন শব্দ পরিবতন কিংবা ধ্বংস করার সাধ্য কারো নেই। যারা এর বিরোধীতা করে তারা এ বাণীর কিছু ক্ষতি করতে পারবে না । এটি সরাসরি আল্লাহর হেফাজতে রয়েছে । তাদের চেষ্টায় একে বিলুপ্ত করা যাবে না । তারা একে ধামাচাপা দিতে চাইলেও দিতে পারবে না । তাদের আপত্তি ও নিন্দাবাদের ফলে এর মর্যাদাও কমে যাবে না । তারা ঠেকাতে চাইলেও এর দাওয়াতকে ঠেকাতে পারবে না । একে বিকৃত বা এর মধ্যে পরিবর্তন সাধন করার সুযোগও তারা কেউ কোনদিন পাবে না ।
এখানে কোরআন হলো বানী, আর ইসলাম হলো তার পোশাক বা পরিবেশ । আল্লাহর রসূল এই পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন কোরআনের বানী দিয়ে। এই 6666 টি আয়াত বিশিষ্ট কোরআন শরীফ কাপড়ে বেধে নিরাপদ দুরত্বে তাকের উপর রেখে দেওয়ার জন্য আল্লাহ নাযিল করেননি।
ধরা যাক, কোন ব্যক্তি দীঘদিন যাবৎ এই কোরআন কে তার মযাদা না দিয়ে তাকের উপর নিরাপদ জায়গায় রেখে দিল। অতঃপর এর গায়ে মাকড়ঁসা, তেলাপোকা, এমনকি ঘুণ ধরে এটা খেয়ে ফেলল । এখন, মহান আল্লাহ কী মাকড়ঁসা, তেলাপোকা, ঘুণ হতে কোরআন শরীফ নামক পবিত্র গ্রন্থটি হেফাজত করে দিবেন ? নিশ্চয়ই না । এ দায়িত্ব মানুষের । কোরআন নামক বইটি হয়ত ঘুণে খেয়ে ফেলতে পারে , এর পরিচযা না করার জন্য কাল কিয়ামতের মাঠে তাকে জবাবদিহি করতে হবে । কিন্তু কোরআন শরীফ নামক পবিত্র গ্রন্থটির মধ্যে যে 6666 টি আয়াত রয়েছে , তা সংরক্ষনের দায়িত্ব আল্লাহর।
মুলকথা হলো, এই কোরআনের বিধি অণুযায়ী ইসলামের পরিবেশ সৃষ্টিতে যারা এর বিরোধিতা করবে, তাদের হাত থেকে কোরআনকে হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। আর কোরআনের নির্দেশ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যারা কাজ করবে, তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে।
কাজেই অবুঝের মত, মূর্খের মত, ইসলাম সম্পর্কে কোন কিছু না জেনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সাধারন জনগনের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানো বড় গোনাহের কাজ । জেনে রাখা দরকার যে, কোরআন ঝাঁড়-ফুক আর তাবিজ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য নাযিল হয়নি । এটা মানব জীবনের পুর্নাঙ্গ জীবন বিধান হিসাবে, জীবন চলার পাথেয় হিসাবে, সকল সমস্যার সমাধান হিসাবে নাযিল হয়েছে।
তাই আসুন, ফিরে যায় কোরআনের কাছে, অজন করি আল্লাহর সন্তুষ্টি, চলে যায় জান্নাতে।
বিষয়: বিবিধ
২১৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন