আইয়ামে জাহিলীয়াতে ওকাজ মেলায় যা হতো তাই হচ্ছে আজকের 1 লা বৈশাখী মেলায় ।

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:৫৪:০৯ দুপুর



সকালে টিভির সুইচ অন করার পর স্ক্রিণে ছবি আসার আগেই যে শব্দের আওয়াজ কানে এলো তা আইয়ামে জাহিলীয়াতের সময় ওকাজ মেলায় অনুষ্ঠিত হতো। দৃশ্যতঃ দলে দলে মানুষ ঢোল , তবলা , মুর্তি হাতে নিয়ে নাচের তালে তালে এগিয়ে যাচ্ছে ওকাজ মেলায়। নারী-পুরুষের বাধভাঙ্গা জোয়ারে মাতামাতি চলছে কথিত বাঙ্গালী সংস্কৃতির মহাজয়গান। সেখানে একে অপরের মধ্যে যেন হারিয়ে যাচ্ছে মহা আলিঙ্গণে । শহরের এই মানুষগুলো যারা 365 দিনের মধ্যে 364 দিন পান্তা ভাত খাননা, তারা আজ বৈশাখ উযযাপনে পান্তা ভাত, কাঁচা-মরিচ-ইলিশ মাছ খাবেন। তাদের দৃষ্টিতে আজকে এসকল উপাদান না খেলে অথবা এ অনুষ্ঠান উযযাপন না করলে বাঙ্গালিত্ব থাকবেনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মহাদয় সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তা মহাসমারোহে পালনের ঘোষাণাও দিয়েছেন।

বাঙ্গালী এই সংস্কৃতিতে যোগ হয়েছে আধুনিকতার ছোয়া। ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হচ্ছে । কোথাও ব্যান্ড সংগীত বাজিয়ে, কোথাও রিমিক্সের তালে তালে সুরের র্মুছনায় পাগলপারা কিছু মানুষ। কোথাও রবীন্দ্র সংগীত, শুনতে শুনতে হারিয়ে যাচ্ছেন কোন এক অজানায়। নারী-পুরুষের মিলন মেলায় পালিত হচ্ছে বৈশাখ।

বাংলাদেশে নাকি 90% লোক মুসলমান। বাকী 10% হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মবালম্বী। বৈশাখ উযযাপনে যারা উপস্থিত হয়েছেন, এদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলমান। মহাসমারোহে যে উৎসব পালন করা হচ্ছে তা মুসলমানদের সংস্কৃতি নয়। অনেকে হয়ত বলবেন, এর মধ্যে মুসলমান তথা ধর্ম টেনে আনছেন কেন ?

আমার বক্তব্য এখানেই। আজকের এই উৎসবের মধ্যে অনে্কেই এসেছেন যারা নিদেজেদেরকে মুসলমান দাবী করেন। তাদের মধ্যে অনেকেরই মসজিদে যাওয়ার আগ্রহ না থাকলেও বৈশাখ উযযাপনে আগ্রহের কোন কমতি নেই। অথচ একজন মুসলমানের প্রত্যেকটি কাজ হওয়া উচিত আল্লাহকে খুশির জন্য।

এ ব্যাপারে একটি হাদিসঃ

“ আন আবি উমামাতা (র) থেকে বণিত রসূল (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালবাসবে, আবার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ঘৃণা করবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে দান করবে , আবার সন্তুষ্টির জন্য কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকবে, সেই ব্যক্তি তার ঈমানকে পরিপুন করল।” (মিশকাত)

এখন আমাদের বুঝতে হবে যে, 1 লা বৈশাখ উযযাপনে যে উৎসবটি করা হচ্ছে, তা দ্বারা আল্লাহ সন্তুষ্টি হবেন কিনা? আপনার নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে উত্তর যদি আসে হ্যাঁ , তাহলে কোন কথা নেই । আর যদি মনে হয় এই কাজটি আল্লাহর পছন্দ নয়, তাহলে অবশ্যই তা পরিতাজ্য। কেননা কাল কিয়ামতের মাঠে আমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে বাঙ্গালী হিসাবে নয় , মুসলিম হিসাবে।

আল্লাহ বলেন,

“পার্থিব জীবনের উপর কাফেরদিগকে উম্মত্ত করে দেয়া হয়েছে। আর তারা ঈমানদারদের প্রতি লক্ষ্য করে হাসাহাসি করে। পক্ষান্তরে যারা পরহেযগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চমর্যাদায় থাকবে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন।” (বাকারা-212)

তাই আমার অনুরোধ মুসলিম ভাইবোনদের কাছে, ইসলামকে জানুন, সেইমতে আমল করুন । প্রগতির স্রোতে ভেসে যে সভ্যতা কায়েম করতে যাচ্ছেন, সেটা মুসলমানদের নয়, এটা বিজাতীয় সংস্কৃতি। আল্লাহ চাইলে আপনার আনন্দ নিমিষেই বিষাদে রুপ নিতে পারে। তাই আসুন ফিরে যায় আল্লাহর কাছে ।

আল্লাহ বলেন,

হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা আল-বাকারা: ২০৮)

বিষয়: বিবিধ

১৮২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File