রিমান্ডের নামে নির্যাতন সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য , আটক করে স্বস্তির ঢেকুর তুলে আত্মতৃপ্তির কারন নেই।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:৩৩:৩২ সন্ধ্যা
স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কোন ব্যক্তি দেশের আইন শৃংখলা পরিপন্থী কোন কাজ কিংবা দেশ ও জনগনের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র করলে আইনশৃংখলা বাহিনী দেশের স্বার্থে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোর্পদ করতে পারেন। র্কোট তার অপরাধের উপর ভিত্তি করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য রিমান্ড মন্জুর করে থাকেন। যিনি সত্যিকার অর্থেই অপরাধী, তিনি স্বভাবতই দূর্বল । পুলিশ নির্যাতনে তার মধ্যে দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া হবে।
এক. শারিরীক ও মানুষিক কষ্ট ভোগ,
দুই. প্রকৃত অপরাধী হওয়ায় তার মধ্যে প্রতিহিংসার মনোভাব সৃষ্টি না হয়ে প্রায়শ্চিত্তের মনোভাব সৃষ্টি হবে। পরবর্তীতে অনেকে ভাল হয়ে যান।
কিন্তু সরকার যদি তার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির নেতাকর্মীদের বিনাকারনে ঢালাওভাবে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেন, তখন তার মধ্যেও দুটি প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।
এক. শারিরীক ও মানুষিক কষ্ট ভোগ করা সত্ত্বেও নিজেকে দোষী হিসাবে স্বীকার না করা, ইহাতে পুলিশ কর্তৃক অতি নির্যাতনে প্রাণ বাঁচানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে দোষী হিসাবে মেনে নেয়া অথবা পুলিশ যা বলতে বাধ্য করে তা মুখে বলা ।
দুই. অপরাধী না হওয়ায় তার মধ্যে প্রতিহিংসার মনোভাব সৃষ্টি হবে এবং সর্বোত সে সুযোগ খুজঁবে তার পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে প্রতিহিংসাপরায়ন মানুষিকতা নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান বিরাজ করবে।
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আরোহণের পর থেকেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক নিপীড়ণ শুরু হয়েছে। নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থায় এসে পৌছেছে যে, তাদেরকে কারাগারে রাখার মত আর কোন জায়গা নেই। রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে কারাগারে আলুর বস্তার মত ছুড়ে ফেলছে । কারাগারে গিয়েও সস্তি নেই । ঘুষ না দিতে পারলে গোসলের পানি দেয়া হওনা, ভাল খাবার দেয়া হয়না। পরিত্যক্ত জায়গায় ঘুমানোর জন্য জায়গা দিলেও মশারী নেই।
প্রশ্ন হলো, রিমান্ডে কি করা হয়? রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে এমন অনেকে নির্যাতিত হয়েছেন, যারা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য, মন্ত্রী , কেবিনেট মন্ত্রী ও দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি এবং ব্যবসায়ীবৃন্দ । দেশ পরিচালনায়, দেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান অনুষীর্কায। শুধু রাজনৈতিক কারনে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন দেয়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর পুলিশ দ্বারা অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকার যে মানষিকতা সৃষ্টি হয়েছে , তা তাদের জন্য বুমেরাং হবে। তখন একই অবস্থায় তাদেরকেও নির্যাতণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
গত বেশ কিছুদিন শিবির সভাপতিকে রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তার মা দাবী করেছেন। নির্যাতনের কারনে বেহুশ হয়ে পড়ে আছেন। ইনজেকশন পুশ করে জ্ঞান ফিরলেও তাকে আবার নির্যাতন করা হচ্ছে। এভাবে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে ধ্বংস করে দিয়ে নীরুর বাঁসি বাজাবেন, এতটা আস্বস্ত হওয়া মনে হয় ঠিক না । কারন সময় ঘনিয়ে এসেছে বলেই মনে হয়। অন্তত তাদের 4 বছরের অর্জিত আমলনামা লক্ষ্য করলে বুঝা যায় , তারা তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জনগণের মতামতের তোয়াক্কা করেনি, যা তাদেরকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
যেমন:
ক) শুরুতেই শেয়ার মার্কেটে সাধারন বিনিয়োগকারীদের 86 হাজার কোটি টাকা লুটকরে মার্কেটকে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, যা থেকে এখনও রক্ত ঝরছে।
খ) কুইক রেন্টাল দুর্ণীতি করে কোটি কোটি পাচাঁর করা।
গ) পদ্মাসেতু দুর্ণীতির গন্ধ বিশ্ববাসীর নাক থেকে যাচ্ছেনা।
ঘ) হলর্মাক কেলেংকারী সবাই জানে ।
ঙ) সুরণ্জিত দুর্ণীতি
চ) বি ডি আর হত্যাকান্ড দিনের মত পরিস্কার।
ছ) সাংবাদিক সাগর রুনি হত্যাকান্ড কি কারনে মানুষের অজানা নয়।
জ) রাজনীতিক গুমের কথা আর কী বলব ?
ঝ) ধর্ষণের সেঞ্চুরী করেছে তার সোনার ছেলেরা।
ঞ) শাহবাগে গণজাগরণমঞ্চ তাদের নতুন নাটক।
ঞ) এই নাটকে ভিডিও তোলার দায়িত্ব যে পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল , সে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছিল। মাঝখানে নাটক কেমন হচ্ছে তার ব্লু-প্রিণ্ট দেখার জন্য ভিটিও অন করে এমন কিছু দৃশ্য দেখা গেছে, যা নাটকে রাখা যাবেনা মর্মে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ঞ) ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত তাদেরই আসকারার ফল।
সরকার সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, পেশাজীবি, রাজনীতিক, ছাত্র, শিক্ষকসহ সবশ্রেণীর লোকদেরকে যেভাবে বেছে বেছে খুন , রাহাজানি, হত্যা , গুম শুরু করেছে। তাদের বোঝা উচিত, রক্তের অপর নাম শক্তি । খুণ ঝরলে জমিন উবর হয়, মানুষের ক্ষোভ তাতে উত্থিত হয়ে লাভার স্রোতের মত উদগীরণ হতে থাকে। এই উদগীরণের দাবানলের আগুন তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে। তখন বোধদয় হয়ে কোন কাজে লাগবে না। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।
বিষয়: রাজনীতি
১২৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন