আল্লাহর কসম ! এতিম শিশুদের একফোঁটা চোখের পানি সরকারের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়াবে।

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ১০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:১১:৩৪ সকাল





এতিমরা হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল ও অসহায়। তাই তাদের প্রতি আল্লাহর করুণা ও রহমত রয়েছে। নবী করিম (স) নিজে একজন ইয়াতীম ছিলেন। তাই তিনি ইয়াতীমদেরকে খুব বেশী ভালোবাসতেন।

এক শ্রেণীর মানুষ আছে, যারা এতিমদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে মহান আল্লাহ কোরআনে বলেন,

“ সে এমন ঐ লোক যে ইয়াতীমদেরকে রূঢ় ভাষায় তাড়িয়ে দেয় ” (আল-মাউন-২)।

এতিমদের প্রতি উত্তম ব্যবহার প্রসঙ্গে রসূল (স) বলেন,

“ হযরত আবু হুরাইয়া (রা) হতে বর্ণিত। রাসূল (স) এরশাদ করেছেন, যে ঘরে ইয়াতীম রয়েছে এবং তাকে উত্তমভাবে লালন পালন করা হয়, সে ঘর সবচেয়ে উত্তম ঘর। আর যে ঘরে ইয়াতীম রয়েছে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় সে ঘর সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘর।”(সুনানে ইবনে মাজাহ)

অন্য একটি হাদিসে আছে,

“ আবু শুরাইহ খুরাইলিদ ইবনে আমার আল খুযাঈ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (স)বলেছেন, হে আল্লাহ! দুই দুর্বল অর্থাৎ ইয়াতীম ও নারীদের প্রাপ্য অধিকার যে ব্যক্তি নষ্ট করে আমি তার জন্য অন্যায় ও গুনাহ নির্দিষ্ট করে দিলাম। (রিয়াদুস সালেহীন।)

এতিমের সম্পদ ভক্ষণকারীর শাস্তি

এতিমের সম্পদে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগকারীদের জন্য ভীষণ শাস্তির হুমকি রয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন:

إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا [النساء:10]

অর্থ: নিশ্চয় যারা এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে, আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। (সূরা নিসা : ১০)

গত ৮ এপ্রিল ‘হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের মারকাজুল উলুম আল-ইসলামিয়া মাদরাসায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা হকিস্টিক, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি-বৈঠা এবং দা-ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। সেময় এতিম বাচ্চারা খেতে বসেছিল । শেখ হাছিনার সোনার ছেলেরা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাদের ভাতের বাসন ভেঙে ফেলে । ভয়ে এতিম শিশুরা মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানেও তারা জুতা পায়ে প্রবেশ করে এতিম শিশু এবং মাদরাসার শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করল। এতিম শিশুদের মাথায় উঠিয়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হলো । এতে 30 জন এতিম ছাত্র আহত হয় হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে।

এরপর ভাঙচুর চালানো হল মসজিদে। কুরআন ও হাদিস ছুড়ে ফেলে দেয়া হল মাটিতে। অবস্থাদৃষ্টে ইজরাইলের কথা মনে পড়ে যায়। তারা ফিলিস্তীনে প্রবেশ করে প্রতিনিয়ত এ ধরণের কাজ করে

দুই তলাবিশিষ্ট মাদরাসার দরজা-জানালার সব কাচ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে । ভাঙ্গা হয়েছে হেফজখানার কুরআন এবং হাদিস রাখার তাকগুলো । মাদরাসার ওজুখানা, ফ্যান, লাইট, বাথরুমের দরজা ভেঙে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। পাশের তিনতলা মসজিদের ভিতর ঢুকে একইভাবে ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। তারা মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের টাকা-পয়সা, কাপড় এবং বইপত্র , মসজিদের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেল । এখন সেখানে ভয়ে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা কমে গেছে।

এমতাবস্থায়, শেখ হাছিনা ইসলামপ্রিয় মানুষদের দাবী অস্বীকার করে ধর্মবিদ্বেষীদের বিষোদগার করার সাহস আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ধর্মীয় আবমাননার বিরুদ্ধে কোন আইন করা হবেনা এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে আরো বলেছেন, এ বিষয়ে তাদেরকে মোকাবেলা করার পথ তার জানা আছে।

আল্লাহর জমীনে অবস্থান করে, তারই আলো বাতাস গ্রহণ করে , তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার দুঃসাহস দেখানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। অতীতে এমন অনেক শাসককে আল্লাহ আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছেন। সরকারকে মনে রাখা কোরআনের এই আয়াত স্বরণ করে দিতে চায়,

“ বলোঃ হে আল্লাহ ! বিশ্ব –জাহানের মালিক! তুমি যাকে চাও রাষ্ট্রক্ষমতা দান করো এবং যার থেকে চাও রাষ্ট্রক্ষমতা ছিনিয়ে নাও৷ যাকে চাও মর্যাদা ও ইজ্জত দান করো এবং যাকে চাও লাঞ্জিত ও হেয় করো৷ কল্যাণ তোমরা হাতেই নিহিত ৷ নিসন্দেহে তুমি সবকিছুর ওপর শক্তিশালী৷” (ইমরান-26)

বিষয়: বিবিধ

১৫৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File