“আচ্ছা, ব্লগার মানে কি জানেন?”- হেফাজত কর্মীর উদ্দেশ্যে ইমরান সরকারের প্রশ্ন ?

লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:১২:৩৩ দুপুর





গত ৪ এপ্রিল প্রথম আলো’তে ‘হেফাজতের কর্মীদের কাছে বার্তা দিলেন ইমরান’ শিরোনামে একটা লেখা ছাপা হয়।

কুচক্রী মানুষিকতা নিয়ে গ্রামের মাদ্রাসায় পড়ুয়া সরল সহজ ছাত্রদের ইমরান সরকার হেফাজত কর্মীদের কাছে ব্লগার শব্দের অর্থ জানতে চান। মাদ্রাসায় পড়া অজপাড়াগায়ের এই অখ্যাত এবং অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলো ‘ব্লগার’ শব্দের অর্থ না জানাটাই স্বাভাবিক । হয়ত হেফাজতকর্মীরা ভালভাবে উত্তর অথবা বুঝাতে পারেনী।

হেফাজতকর্মীরা কেন , শাহবাগে গণজাগরণমঞ্চ শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজ, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস, মাস্টার পাশ করে বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছেন, কারো চাকুরী জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, এমন লোকদেরকেও আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম , কাদেরকে ব্লগার বলা হয় ? 95% উত্তর দাতা এর সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি। আমার প্রশ্নে শুনে তাদের মধ্যে কৌতুহলী সৃষ্টি করে । তারপর অনেকে পত্র-পত্রিকা থেকে , কেউ ইন্টারনেট থেকে ব্লগার কী বা কারা , তা জানার চেষ্টা করেছেন। এখনও অনেকের কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট রয়েছে।

বিষয়টা অনেকটা এরকম দাড়ায়, ডাক্তার যদি রাস্তার এক সহজ সরল সাধারন মানুষকে প্রশ্ন করে, এই যে, বাছা, vein (শিরা) কাকে বলে জান ? মানুষটি তার পরিবেশের যে অভিজ্ঞতা রয়েছে, তার আলোকে বলবে , আরে স্যার, এটা জানেন না। এটা হল তিন চাকার একটি গাড়ি।

অনুরপভাবে হেফাজতকর্মীরা যদি আরবী না জানা কোন ডাক্তারকে প্রশ্ন করে, মাদ্দে আরজী কি জিনিস জানেন ? ডাক্তার বলবে, এটা হল এক প্রকার মদ, যা খেলে মানুষের নেশা হয়। ঠিক ব্যাপারটা এমন ।

যাইহোক, হেফাজতকর্মীদের সঠিক ধারনা না থাকার বিষয়টি প্রথম আলো পত্রিকা যে, সাধারণ মানুষের কাছে তাদেরকে হাসির পাত্র করার এক নোংরা প্রয়াস চালিয়েছে তা সহজেই অনুমেয়।

আমি ঐসব মানুষদের বলতে চাই, যারা জন্মের পর কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই ওয়ারিশসুত্রে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক, যারা কোন আর্থিক অভাব-অনটনে পড়েননি, যাদেরকে কখনোও অভুক্ত থাকতে হয়নি। তারাই কথাই কথাই মাদ্রাসার ছাত্রদের উগ্রবাদ, জংগীবাদ আর ধর্মান্ধ বলে গালি দেন। তাদের বোঝা উচিত, এই মানুষগুলোকে জীবনে কতটা কষ্ট করে শিক্ষা অর্জন করতে হয়। এই মাদ্রাসাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা যারা, তারা কিভাবে এদেশের লক্ষ লক্ষ অসহায় শিশুকে শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। এই গরীব, অসহায় আর মা-বাবাহীন এতিম শিশুগুলোর হাতে বই তুলে দিয়েছে, করেছে দু’বেলা ডাল-ভাতের ব্যবস্থা, দিয়েছে মাথা গোজাঁর ঠাই। যারা বড় বড় কথা বলেন তারা এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান করে এতিম শিশুদেরকে মানুষ করে দেখান এবং তাদেরকে শেখান ব্লগ কি , ব্লগার কারা ? ইত্যাদি ইত্যাদি।।

আধুনিক শিক্ষা দিয়ে একটি ছেলেকে পরির্পুন করে গড়ে তুলতে কত লক্ষ টাকা খরচ হয় , তা আপনার সবাই জানেন। সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলেদের মধ্যে অনেকেই আল্লাহ ও রসূলকে চিনতে পারেনী। পারেনী কোনটি চিরস্থায়ী মুক্তির পথ। তাই তো ধর্ম তাদের কাছে আফিমের মত মনে হয়। তাইতো আল্লাহ আকবার শব্দ শুনলে তাদের কাছে তা বেস্যার (নাউযুবিল্লাহ) ডাকের মত লাগে ।

অথচ ,সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা আল্লাহর সাহয্যের উপর নির্ভর করে আল্লাহর কথাগুলোকে এমনভাবে বুকে ধারন করেছে যে, মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত আর ভুল হয়না। াপরপক্ষে

অপরপক্ষে, এমন শিক্ষিত নাদান মানুষ রয়েছে, যারা আল্লাহ কথা বুকে ধারন তো দুরে থাক, আল্লাহর কোনো কথা শুনলে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে।এরই নাকি আধুনিক সমাজের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবি মানুষ ।

এই কোরআন হাদিস পড়েই পৃথিবীতে এমন মানুষ তৈরি হয়েছে , যার আমলের কারনেই এখনোও পৃথিবী টিকে আছে। একথা সবাই বিশ্বাস করে যে, পৃথিবীতে যতদিন আল্লাহওয়ালা মানুষ থাকবে , ততদিন পৃথিবী ধ্বংস হবেনা। আল্লাহভীরু মানুষ সবদা আল্লাহর বানী নিয়ে গুনগানে ব্যস্ত থাকে। দুনিয়াবী জীবন নিয়ে যারা পেরেশানী, তারা কখনোও আল্লাহভীরু হতে পারেনা। তাহলে যুক্তির খাতিরে বলা যায় যে, আল্লাহর জয়গান গাওয়া মানুষগুলোর জন্য নাস্তিক, আধানাস্তিক, বেনামাজী, নাফরমানী, আল্লাহর না শোকর বান্দারা আজও পৃথিবীতে বেঁচে আছেন।

মাদ্রাসার ছাত্ররা যাই হোক না কেন, এদেশের কোটি কোটি মানুষ যে তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজটুকু পরতে পারে, জীবিত অবস্থায় আল্লাহকে বিম্বাস না করলেও দেখি মরনের পর এদেরকে দিয়ে জানাজা পড়ানোর জন্য তোষামোদি শুরু হয়।কোন ধর্মীয় অনুষাঠান পরিচালনা করতে গেলে তাদেরই খুঁজে বের করতে হয়।

বিষয়: রাজনীতি

১৫০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File