ফারাক্কা লংর্মাচ ও ঢাকা লংর্মাচ উদ্দেশ্য এক, বিষয় ভিন্ন ।
লিখেছেন লিখেছেন tritiomot ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:০০:১৭ সন্ধ্যা
নিপীড়িত, নির্যাতিত, অবহেলিত, অত্যাচারিত মানুষকে আশা-আঙ্খার বাণী শুনিয়ে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আজীবন লড়াই করেছেন সাম্রাজ্যবাদ, পুজিবাদ, উপনিবেশিকতা, সাম্প্রদায়িকতা, নব-সাম্রাজ্যবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা প্রতিষ্ঠার চক্রান্তের বিরুদ্ধে, সংগ্রাম করেছেন পাকিস্তানী আধা উপনেশিকতাবাদের কালো থাবা থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার । শাসকের ভ্রুকুটি, শত্র“র চোখ রাঙ্গানী, জেলজুলুমের মুখে অকম্পিত হৃদয়ের বিশাল মহিরুহের মতোই যিনি এদেশের মানুষকে অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার বাণী শুনিয়েছেন । স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্য রক্ষায় বারংবার তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর সচেতন ও সদাজাগ্রত কন্ঠ বিভিন্ন সময়ের ক্রান্তিলগ্নে আমাদের আকাংখিত পথের নিশানাই দেখিয়েছেন।
৫২‘র ভাষা আন্দোলন, ৫৪‘র যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও স্বেচ্ছাচার বিরোধী ২১দফা সংগ্রাম, ৬২‘ শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯‘র আইয়ূব বিরোধী গণআন্দোলন, ৭১‘এ মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৭২-৭৫ আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী সংগ্রাম,
ভারতের সম্প্রসারণবাদী হস্তক্ষেপ ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও তিনি সোচ্চার থেকেছেন এবং মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে, প্রায় ৯৬ বছর বয়সেও ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন (১৬ মে, ১৯৭৬)।
36 বছর পর আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেবের আহবানে ধর্মীয় ইশুতে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সাধারন ইসলামপ্রিয় মানুষ লংর্মাচ ঢাকা অভিমুখে রওয়ানা দিয়েছেন। প্রচারবিমুখ মানুষটি ভাসানীর মত জনপ্রিয় নয়। বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এমনকি জাতীয় কোন বিষয়ে তাকে রাজপথে নামতে দেখা যায়নি। জীবন সায়াহেৃ এসে আল্লাহ ও তার রসূলকে নিয়ে যারা কটুক্তি করেছে, তাদের বিরোদ্ধে প্রতিবাদ জানানোটা ফরজ মনে করে লংর্মাচের ডাক দিয়েছেন। দেওবন্দের মওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী সাহেবের ছাত্র হিসাবে তিনি ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট জানেন। তাই ধর্মের মর্যাদা রক্ষার্থে তিনি আজ রাজপথে নেমেছেন। তিনি ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে ইসলামপ্রিয় মানুষকে একত্রিত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। 13 দফা সুপারিশ নিয়ে সরকারের কাছে তা বাস্তবায়নের দাবী করেছেন।
শিরোনামে উল্লেখিত ভাসানী ভারতের সম্প্রসারণবাদী হস্তক্ষেপ ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়ে মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে, প্রায় ৯৬ বছর বয়সেও ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন (১৬ মে, ১৯৭৬)।
অপরপক্ষে, সরকার সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পুর্ন আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়ে তদস্থলে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। রাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে কিছু লেখক, ব্লগার ও বুদ্ধিজীবিদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে স্বাধীনভাবে লেখালেখি ও মন্তব্য করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। ফলে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে গত চার বছরে একটি গোষ্ঠী বিষোদগার করে সাধারন ধর্মপ্রিয় মানুষের ঈমান–আকিদায় আঘাত করেছেন। বর্তমানে পাঠ্যপুস্তকসহ রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের অবমাননাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় মুসলমানদের ঈমান–আকিদায় রক্ষার্থে ‘হেফাজতে ইসলাম’ লংর্মাচের মাধ্যমে একটা চেতনা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। আমার বিশ্বাস, মওলানা ভাসানী ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে যে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন , আল্লামা শাহ আহমদ শফি ইসলামের বিরোদ্ধে ষড়যন্ত্র রোধ করার জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবেন।
বিষয়: রাজনীতি
১৩২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন