র তে রবীন্দ্রনাথ ..!!

লিখেছেন লিখেছেন হিফজুর রহমান ২০ মার্চ, ২০১৩, ১০:২৫:২০ সকাল

আমাদের গুণধর প্রধানমন্ত্রী রীতিমতো শিবির আতংকে ভুগেন। বলেছেন সব জায়গায় আজ শিবির ঢুকে গেছে। খেত খামার হতে সচিবালয় পর্যন্ত সব জায়গায় শুধু জামাত আর শিবির। শিবির আর শিবির। আসলে ঘটনা কিন্তু সত্যি ! আমি আজকে কবিতার বই ঘাঁটতে গিয়া রীতিমতো আঁতকে উঠলাম। খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজ থেকে একশ বছর আগে শান্তিনিকেতনে বসে বসে জামাত-শিবির এর জন্য কবিতা লিখে গেছেন ! বিশ্বাস না হলে দেখেন কেমনে কেমনে তিনি লিখেছেন---

''উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই, ওরে ভয় নাই, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান,ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই

ব্যাটার সাহস দেখেন। লম্বা দাঁড়ী দেখে আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম!!! র তে রবীন্দ্রনাথ ... তুই রাজা...কার?

ফাজলামো নয়। পুরো কবিতাটাই পড়েন। অসাধারণ।

''রুদ্র, তোমার দারুণ দীপ্তি

এসেছে দুয়ার ভেদিয়া;

বক্ষে বেজেছে বিদ্যুৎবাণ

স্বপ্নের জাল ছেদিয়া।

ভাবিতেছিলাম উঠি কি না উঠি,

অন্ধ তামস গেছে কিনা ছুটি,

রুদ্ধ নয়ন মেলি কি না মেলি

তন্দ্রা-জড়িমা মাজিয়া।

এমন সময়ে, ঈশান, তোমার

বিষাণ উঠেছে বাজিয়া।

বাজে রে গরজি বাজে রে

দগ্ধ মেঘের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে

দীপ্ত গগন-মাঝে রে।

চমকি জাগিয়া পূর্বভুবন

রক্তবদন লাজে রে।

ভৈরব, তুমি কী বেশে এসেছ,

ললাটে ফুঁসিছে নাগিনী,

রুদ্র-বীণায় এই কি বাজিল

সুপ্রভাতের রাগিণী?

মুগ্ধ কোকিল কই ডাকে ডালে,

কই ফোটে ফুল বনের আড়ালে?

বহুকাল পরে হঠাৎ যেন রে

অমানিশা গেল ফাটিয়া;

তোমার খড়্‌গ আঁধার-মহিষে

দুখানা করিল কাটিয়া।

ব্যথায় ভুবন ভরিছে,

ঝর ঝর করি রক্ত-আলোক

গগনে-গগনে ঝরিছে,

কেহ-বা জাগিয়া উঠিছে কাঁপিয়া

কেহ-বা স্বপনে ডরিছে।

তোমার শ্মশানকিঙ্করদল,

দীর্ঘ নিশায় ভুখারি।

শুষ্ক অধর লেহিয়া লেহিয়া

উঠিছে ফুকারি ফুকারি।

অতিথি তারা যে আমাদের ঘরে

করিছে নৃত্য প্রাঙ্গণ-'পরে,

খোলো খোলো দ্বার ওগো গৃহস্থ,

থেকো না থেকো না লুকায়ে--

যার যাহা আছে আনো বহি আনো,

সব দিতে হবে চুকায়ে।

ঘুমায়ো না আর কেহ রে।

হৃদয়পিণ্ড ছিন্ন করিয়া

ভাণ্ড ভরিয়া দেহো রে।

ওরে দীনপ্রাণ, কী মোহের লাগি

রেখেছিস মিছে স্নেহ রে।

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,

"ভয় নাই, ওরে ভয় নাই--

নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান

ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।'

হে রুদ্র, তব সংগীত আমি

কেমনে গাহিব কহি দাও স্বামী--

মরণনৃত্যে ছন্দ মিলায়ে

হৃদয়ডমরু বাজাব,

ভীষণ দুঃখে ডালি ভরে লয়ে

তোমার অর্ঘ্য সাজাব।

এসেছে প্রভাত এসেছে।

তিমিরান্তক শিবশঙ্কর

কী অট্টহাস হেসেছে!

যে জাগিল তার চিত্ত আজিকে

ভীম আনন্দে ভেসেছে।

জীবন সঁপিয়া, জীবনেশ্বর,

পেতে হবে তব পরিচয়;

তোমার ডঙ্কা হবে যে বাজাতে

সকল শঙ্কা করি জয়।

ভালোই হয়েছে ঝঞ্ঝার বায়ে

প্রলয়ের জটা পড়েছে ছড়ায়ে,

ভালোই হয়েছে প্রভাত এসেছে

মেঘের সিংহবাহনে--

মিলনযজ্ঞে অগ্নি জ্বালাবে

বজ্রশিখার দাহনে।

তিমির রাত্রি পোহায়ে

মহাসম্পদ তোমারে লভিব

সব সম্পদ খোয়ায়ে--

মৃত্যুর লব অমৃত করিয়া

তোমার চরণে ছোঁয়ায়ে।

'সুপ্রভাত'

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শান্তিনিকেতন, ৮ বৈশাখ,

বিষয়: বিবিধ

১৩৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File