আমরা কাউকে ভালোবাসি কেবল আল্লাহর জন্য। ঘৃণাও করি আল্লাহর জন্য।
লিখেছেন লিখেছেন হিফজুর রহমান ১১ মার্চ, ২০১৩, ১১:৩৮:০৯ সকাল
মাওলানা ইউসুফ সাঈদী ছিলেন পিরোজপুরের একজন সুপরিচিত আলেম। তারই সুযোগ্য সন্তান আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী। অথচ বিতর্কিত আওয়ামী ট্রাইব্যুনাল আল্লামা সাঈদীকে ফাঁসীর রায় দিয়েছে দেলোয়ার শিকদার নামের একজনের ৭১ এ বিতর্কিত ভুমিকার জন্য যাকে পিরোজপুরের মুক্তিযোদ্ধারা ৭১ সালেই হত্যা করেছেন। শুধু কমনসেন্স থাকলেই যে কেউ বুঝবে যে বাংলাদেশে কারো নামের শেষে শিকদার খন্দকার প্রভৃতি বসে যদি সেটা তাঁর পারিবারিক উপাধি হয়। কিন্তু বিতর্কিত এই ট্রাইব্যুনাল কোন যুক্তির ধার ধারেনা। কোন আইনের তোয়াক্কা করেনা।
বহু বিতর্কিত এই ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ গায়ের জোরে আল্লাহর কোরআনের একজন নিবেদিত আহ্বানকারীকে ফাঁসির রায় দেয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তাঁর নিষ্কলুষ চরিত্রে কালিমা লেপনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।
আল্লামা সাঈদীর ক্ষেত্রে মহাজোট সরকার শুরু থেকেই বাঁকা পথ ধরেছে। প্রথমে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা মামলায় আজীবন-ধর্ম-প্রচারক এই মাওলানাকে গ্রেফতার করেছে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মনগড়া বিশটি অভিযোগ উত্তাপণ করেছে। কিছু চোর-বাটপার টাইপের লোক কে সেফহোমে দিনের পর দিন রেখে মিথ্যা সাক্ষী শিখিয়ে পড়িয়ে তারপরও আদালতে নিয়ে আসতে পারে নাই। নামে আন্তরজাতিক কিন্তু সম্পূর্ণ দেশীয় এই ক্যাঙ্গারু কোর্ট সাক্ষীদের অনুপস্তিতিতে ম্যাজিস্ট্রেটের বানানো জবানবন্দীকে সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অনেক নাটকের পরে স্কাইপি কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে গিয়ে নাঁটের গুরু বিচারপ্রতি নাসিম পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এভাবে এই বিচার তাঁর সম্পূর্ণ বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন তাবেদার সরকারের রঙ্গমঞ্চে পরিণত হয়। যার চূড়ান্ত পরিণতি হয়েছে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে তাঁর ফাসির রায়ের মধ্য দিয়ে। তাঁর রায়ের পর সারা দেশের মানুষ যে ভাবে রিয়েক্ট করেছে তা ইতিহাসে বিরল। নারী-শিশু-যুবক–বৃদ্ধ সবাই প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁর রায়ের প্রতিবাদে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। একশরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। রায়ের প্রতিবাদে এখনও প্রতিদিন দেশের কোন না কোন অঞ্চলে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং পুলিশ সেই সব বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে প্রতিদিন মানুষ মারছে।
বাংলাদেশের দালাল মিডিয়া গুলো স্বীকার করুক আর নাই করুক আল্লামা সাঈদী বাংলাদেশের সেই জীবন্ত কিংবদন্তি যার জনপ্রিয়তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলো। কয়েক দশক ধরে চলা তাঁর তাফসির মাহফিল গুলোতে মানুষের ঢল নামত। দলীয়-নির্দলীয় সবাই সেই কোরআনের মাহফিলে শরীক হতে চেষ্টা করতেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ মাত্রই আল্লামা সাঈদীকে ভালোবাসেন। এমনকি খোদ আওয়ামী লিগেও সাঈদীর ভক্তের অভাব নেই।
আমরা আল্লামা সাঈদীর তাফসির শুনে শুনে ইসলামের চির সুন্দর আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছিলাম। তাঁর হৃদয়কাঁড়া ওয়াজ এখনও আমাদের জীবনে চলার পথের পাথেয় হয়ে আছে। শয়নে স্বপনে জাগরণে আমরা মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর কাছে তাঁর মুক্তির জন্য দোয়া করি। আওয়ামী জাহেল আর জালেমদের হেদায়াতের দোয়া করি। হেদায়াত নসীব না হলে তাদের চির-ধ্বংসের এবং সম্পূর্ণ-বিনাশের দোয়া করি।
আল্লামা সাঈদীর জন্য আমাদের প্রাণ কান্দে। মন উতাল পাতাল হয়। রাগে ক্ষোভে এই নশ্বর পৃথিবীর সব কিছু ভেঙ্গে চুরে একাকার করে দিতে ইচ্ছে হয়।
আসুন, আরেকটা কাজ করি। আজ থেকে আমাদের ফেসবুক এবং টুইটার এর প্রফাইল পিকে আওয়ামী জাহেলিয়াতের নির্মম নির্যাতনের শিকার আল্লাহর এই অলির কারাবন্দী মোনাজাতের ছবিটি কে ধারণ করি। হয়ত কিছুই হবেনা। অনেকের কিছু যাবে আসবেনা। কিন্তু সমুস্ত দুনিয়াবাসীকে আল্লামা সাঈদীর প্রতি আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশটা তো অন্তত দেখান যাবে।
আর আমরা কাউকে ভালোবাসি কেবল আল্লাহর জন্য। ঘৃণাও করি আল্লাহর জন্য।
আল্লাহ আমাদের সহায় হউন। আমীন।।
বিষয়: বিবিধ
১৯৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন