পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তঁরে - একজন এডিসি মেহেদি অথবা একটি দাঁতাল শূয়র সমগ্র
লিখেছেন লিখেছেন হিফজুর রহমান ২৩ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:০০:৫৩ সকাল
পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাঁর কাজ সেই প্রজাতন্ত্রের নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া। রক্ষা করা। কিন্তু বাংলাদেশে আর দশটা জিনিসের মতই এই ক্ষেত্রে ও উল্টোযাত্রা। পুলিশ সুযোগ পেলেই জনসাধারণের উপরে মহাসমারোহে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর যদি সেই নাগরিকেরা হন বিরোধী দল বা মতের অনুসারী তাহলে তো কথাই নেই। অত্যাচারের স্টিম রোলার চলে তাঁদের উপরে। জীবন বিপন্ন হয়ে যায়। হাত পা ভাঙ্গে। পঙ্গু হতে হয় সারা জীবনের জন্য। আহারে পুলিশ। বাংলাদেশের পুলিশ।
আওয়ামী লীগ সরকার তাঁদের ক্ষমতার শুরুতে পরিকল্পিতভাবে সারা দেশ থেকে বেছে বেছে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু অস্ত্রবাজ কুলাঙ্গার সন্ত্রাসিকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দেয়। তারপরে পুলিশের চেইন অব কমান্ডকে জলাঞ্জলি দিয়ে অতিদ্রুত পদোন্নতির মাধ্যমে সেই সব কুলাঙ্গারগুলারে পুলিশের হর্তাকর্তা বানিয়ে দেয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদি হাসান সেই সব কুলাঙ্গারদের একজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী পুলিশ এডিসি মেহেদি হাসান তাঁর ক্যারিয়ারের একদম শুরু থেকেই জামাত বিএনপির উপর খুবই আক্রমনাত্তক ছিল। বিরোধী দলের মিছিল সমাবেশ দেখলেই সে গুলি করার নির্দেশ দিত। সে তাঁর বাহিনী নিয়ে কমান্ড স্টাইলে হামলা করত জামাত বিএনপির উপর। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু কুকীর্তি নীচে দেয়া হল -
১) ২০১৩ সালের ৭ই মার্চের দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে একটি সমাবেশ চলছিল। মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদি হাসান যথারীতি হাজির। বিনা কারণে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ভণ্ডুল করে দিতে সে পুলিশকে ফায়ার করার নির্দেশ দেয়। তাঁর অনুগত পুলিশবাহিনী হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সমাবেশে আগত বিরোধীদলের কর্মীদের উপর। অনেকেই আহত হয়। কিন্তু দুইজন পুলিশ সদস্য তাঁর কথামত 'ফায়ার' নয়া করায় সে তাঁদের সাসপেন্ড করে।
২) এই ঘটনার চারদিন পরে ১১ই মার্চ সোমবার। এডিসি মেহেদি হাসান তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেয়। এইদিন সে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে ডাকাতের মত হামলা করে তছনছ করে দেয়। হাতুড়ি শাবল দিয়ে দরজা ভেঙ্গে সে বিএনপি নেতাদের মারধর করে। দেড়শর বেশী কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পুরো অফিস লণ্ডভণ্ড করে দেয়। মূল্যবান কাগজপত্র এমনকি টাকা পয়সা পর্যন্ত লোট করে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক ঘটনার জন্ম দেয়।
(এই ঘটনায় পেপার পত্রিকায় অনেক লেখালেখি নিন্দা সমালোচনা এমনকি বিএনপির পক্ষ থেকে মেহেদি হাসান সহ আরও কিছু পুলিশ অফিসারের নামে মামলা হলেও সরকার এডিসি মেহেদি কে পুরস্কৃত করে। এই কুলাঙ্গার সরকারী টাকায় পুরো পরিবার সমেত সিঙ্গাপুরে হলিডে কাটিয়ে আসে। এবং আরেক পুলিশ অফিসার ডিসি হারুন যে কিনা বিরোধী দলীয় হুইপ জয়নাল আবেদিন ফারুকের উপর হামলা করেছিল তাঁকে সরকার সেই হামলার পুরস্কার স্বরূপ প্রেসিডেন্ট এওয়ার্ড দেয়। সেলুকাস। কি বিচিত্র এই দেশ। শাস্তির বদলে পুরস্কার। )
৩) ২০শে সেপ্টেম্বর ২০১৩। বাংলাদেশ ফটো সাংবাদিক এসোসিয়েশনের একটা প্রোগ্রাম চলছিল। এডিসি মেহেদি সেইখানে তাঁর বাহিনী নিয়ে চড়াও হয়। সাংবাদিকদের পিটিয়ে একদম তক্তা করে দেয়।
৪) ঢাকার বহুল আলোচিত ৬ই মে কালো রাতের আগের দিনে ৫ই মে ঢাকায় হেফাজতের উপর পুলিশের আক্রমণেও সরাসরি নেতৃত্ব দেয় এই কুলাঙ্গার এডিসি মেহেদি।
৫) জামাত-শিবিরের নেতা কর্মীদের দেখলেই সে পাগলা কুত্তার মত হামলা করে। থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। অত্যাচারের স্টিম রোলার চালায়। তাঁর হাতে জামাত-শিবিরের অগণিত নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছেন। গত কিছুদিন আগে সে ঢাকায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, বর্তমান জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর সবুজবাগ থানা আমিরকে গ্রেফতার করে মতিঝিল থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। তাঁর হাত পা ভেঙ্গে দেয়। শুধু তাইনা। সেই কুলাঙ্গার এডিসি মেহেদি সেই জামাত নেতার মুখে লাত্তি দিয়ে দাঁতের কব্জি ভেঙ্গে দিয়েছে।
৬) গতকাল ২১শে অক্টোবর খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা করে কুলাঙ্গার এডিসি মেহেদি। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীদের উপর সে হামলা করে আহত করে। সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আব্দুল মজিদকে চড় মারে। গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সরকার গত পাঁচ বছরে এইভাবে অসংখ্য এডিসি মেহেদি নামক দাঁতাল শূয়র তৈরি করেছে। সেই দাঁতাল শূয়রেরা সারা দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করেছে। এই সব দাঁতাল শূয়রেরা জানেনা যে তাঁরা আসলে পিপীলিকা ছাড়া আর কিছু নয়। আর তাঁদের এই আস্ফালন-উল্মফন শুধু পিপীলিকার পাখা গজানো মাত্র। আর বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই জানেন যে, পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তঁরে।
বাংলার মানুষেরা জাগো। এইসব জানোয়ারদের হাত থেকে উদ্ধার কর আমাদের প্রিয় স্বদেশ।
প্রতিরোধের বহ্নিশিখায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাক বাংলার এই নব্য ফেরাউনের মসনদ।
হে আল্লাহ, আমাদের শক্তি দাও প্রতিরোধের। শক্তি দাও সাহসী হওয়ার।
এই জালিম- অত্যাচারী নমরুদ বাহিনীকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে যেন নির্মূল করতে পারি সেই তৌফিক দাও ।
(লেখা ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন তবে কপি করবেন না।)
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন