`Stop Genocide’ প্রজ্ঞাপন ছাড়াই বাকশাল কায়েম ও মিডিয়ার তুগলকি কারবার
লিখেছেন লিখেছেন ইনসিয়া ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০১:৪৫:৫৪ রাত
কথায় আছে “কয়লা ধুইলে যায়না ময়লা” এই কথাটি স্থান, কাল পাত্রভেদে ধ্রুব সত্য।যে কোন ময়লা বা নোংরা জিনিস পরিস্কার করলে অবশ্যই ময়লা যাওয়ার কথা।তদ্রুপ কয়লার গায়ে ময়লা লেগে থাকলে তা ধুইলে পরিস্কার হয়ে যায় । তার অথ এই নই যে কয়লা সাদা হয়ে যাবে।আসলে কয়লার গায়ের রং হল কালো । এই কালোকে যতই পানি দিয়ে. দুধ দিয়ে, সাবান দিয়ে পরিস্কার করি না কেন , তা কালোই থাকবে।
1947 সালে দেশ বিভাগের পর পুব বাংলার মানুষ পাকিস্তানী শাসক কর্তৃক বিভিন্নভাবে শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত হওয়ার কারনে মুক্তির জন্য 1970 সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে নিরুংকুশ সংখ্যাগরিষ্ট ভোটে বিজয় লাভ করান।এরপর পাকিস্তানী শাসক ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাংলার নিরীহ মানুষের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়।
25 শে মার্চের রাত্রে জাতির আশার প্রতীক শেখ মুজিব নিজের আত্মরক্ষার জন্য পাকিস্তানী শাসকের নিকট আত্মসমপণ করে পাকিস্তানে চলে যান। যাওয়ার আগে তার প্রিয় সহকর্মীদের নিরাপদে থাকার জন্য ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পরামশ দিয়ে যান।আজকে আওয়ামীলীগের যেসব নেতা দেশের জন্য বড় বড় কথা বলে আস্ফালন করেন, তারা সেদিন পিয় নেতার পরামশ মোতাবেক ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং বহাল তবিয়তে হানাদার কর্তৃক বাংলার দামাল ছেলেদের হত্যাযজ্ঞ দশন করছিলেন।
এই যুদ্ধে ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, বুদ্ধিজীবিসহ দেশের আপামর জনসাধারন পাকিস্তানী হানাদার কর্তৃক হত্যা, নিযাতন সহ্য করে লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্রের বিনিময়ে দেশের জন্য একটি স্বাধীন পতাকা এনে দিল। এরপর বেঁচে থাকা মানুষগুলোর স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল, এখন হয়ত স্বস্তি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো। এক বুক আশা নিয়ে দেশের কণধাদের দিকে তাকিয়ে থাকল স্বজনহারা মানুষগুলো।
স্বাধীনতার পর প্রবাসী নেতারা এসে ক্ষমতার মসনদে চেপে বসলেন। আর এই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য যে জনতা স্বাধীনতা এনে দিল, সেই জনতার উপর খড়গহস্ত ধারণ করলেন।শেখ মুজিবের মাথায় কী ভূঁত চেপে ছিল জানিনা, 99% মুজিব পাগল মানুষের মধ্যে পাগলের সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য তাদের উপর অত্যাচারের স্টীমরোলার চালিয়ে দিল।দাম্ভিকতা করে নিজেদের তল্পীবাহী 4 টি পত্রিকা ছাড়া সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হলো । মুজিব পাগল মানুষগুলোকে তিনি আর বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাই নিজের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য প্রজ্ঞাপন করে রক্ষীবাহিনী গঠন করে দেশ প্রেমিক জনতার ইজ্জতহরণ, হত্যা, ও সম্পদ লুন্ঠন করে নিল। এমতাবস্থায়, স্বজনহারা, সম্পদহারা, ইজ্জতহারা মানুষগুলো সবশক্তিমান আল্লাহর কাছে বিচার চেয়ে তার সাহায্য কামনা করল।নব্য শোষকের হাত থেকে বাচাঁর জন্য মজলুম মানুষের চোখের পানি আল্লাহ সহ্য করতে পারেনী।
এই ধরনের অবস্থা আইয়ামী জাহিলীয়াতের যুগে হয়েছিল।তখন আল্লাহ এই নির্যাতিত অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাড়ানোর জন্য র্নিদেশ দিয়ে বলেছেন,
“ তোমাদের কী হল যে, তোমরা খোদার পথে লড়াই করছ না এবং অসহায় নরনারী ও শিশুগনের জন্য, যারা বলে , হে আমাদের পরোয়াদেগার ! এই জনপদ যাহার শাসক জালিম, উহা হতে আমাদের অন্যত্র লইয়া যাও। তোমার নিকট থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক নিযুক্ত কর এবং তোমার নিকট থেকে কোন সাহায্যকারী পাঠাও।(সূরা-নিসা-75)।
আল্লাহ সব সময় মজলুমের ডাকে সাড়া দিয়ে থাকেন। তাইতো মাত্র 3 বছরের ব্যবধানে বাংলার জমীনে আরো একটি করুণ মৃত্যু সংঘঠিত হলো।সারা বাংলার একচ্ছত্রের অধিকারী শেখ মুজিবুর রহমানকে রক্ষা করার জন্য তার প্রিয় সহকর্মীরা কেউ আত্মহুতি দিতে আসল না।কোন প্রটেকশন ছাড়াই স্বপরিবারে নিহত হলেন। এমন মৃত্যুই হলো যে, মৃত্যুর পর তার লাশটি সুন্দর মত দাফন করা সম্ভব হয়নি।অথচ এই বিখ্যাত মানুষটির ডাকে সাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছিল।
আল্লাহ বলেছেন-“ (হে রসূল (স) তুমি বলে দাও) তিনিই আল্লাহ যিনি সমস্ত রাজ্যের অধিপতি, তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে রাজ্য দান করেন আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নেন, আবার যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি সম্মানিত করেন, আর যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি অপমানিত করেন, আমার হাতেই আছে যাবতীয় কল্যাণ।নিশ্চয়ই তিনি সকল বিষয়ে সবশক্তিমান।”
অন্যত্র আছে-“ নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন দাম্ভিকতা পছন্দ করেন না।”
যাইহোক সেদিন এমন হয়েছিল যে, বাংলার মানুষ হাফ ছেড়ে বাচঁল।কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল।সেদিন বঙ্গবন্ধুর সহকর্মীরা আত্মগোপন করেছিল।এসবই ইতিহাস।
র্জামানীর নাৎসী বাদী সমর নায়ক এডলফ হিটলার যখন ইহুদী নিধনের প্রক্রিয়ায় তাদের কে হত্যা করছিল, তখন ইচ্ছা করেই কিছু ইহুদীকে বাচিয়ে রেখেছিল । কিন্তু কেন বাচিয়ে রেখেছিলেন ? তার উত্তর আমরা তার লিখিত বইতে পেয়েছি। তিনি বলেছেন, ইহুদী জাতি কত নৃশংস ও খারাপ , তা ভবিষ্যত প্রজন্মকে জানা দরকার।এই বেচেঁ থাকা ইহুদীরাই একদিন তাদের কায দিয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবে ইহুদীরা কেমন ছিল।হিটলারের ভবিষ্যত বানী আজ বিশ্ববাসী সত্যিই অবলোকন করছে।
অনুরুভাবে বঙ্গবন্ধু কেমন শাসক ছিলেন তা ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে ভালভাবে বুঝতে পারে , সে জন্য মহান আল্লাহ বঙ্গবন্ধুর দুই কণ্যাকে দুরে রেখে বাঁচিয়েছিলেন।আজকে মানুষ সেটা ভালভাবেই উপলব্ধি করছেন।কিন্তু কণ্যাদ্বয় বড়ই অকৃতজ্ঞ।বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর যেরুপ প্রশংসা করা দরকার তা না করে খোদাদ্রোহীদের বাঁচনোর পক্ষে সাফাই গেয়ে খোদাপ্রেমিক মানুষগুলোকে রাষ্ট্রের প্রশাসন দ্বারা হত্যা নিযাতণ করছেন।
লেখার শুরুতে বলেছিলাম , “কয়লা ধুইলে যায়না ময়লা”। শেখ মুজিবের রক্তের প্রবাহমান ধারা শেখ হাসিনা পেয়েছেন্ । তিনি কেমন করে বাবার আদশের বাইরে যাবেন। যাওয়ার কথাও না, আমরাও চা্ইনা তিনি তার আদশের বাইরে যান।কিন্তু মানুষ তো ভুল করে ।বঙ্গবন্ধুও ভুল করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদশ মানতে গিয়ে তার ভুল করা কাজগুলো আদশ হিসাবে মানা তো নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ না । তাহলে তো ইতিহাস থেকে তিনি কী শিক্ষা নিলেন ? বাবা প্রজ্ঞাপন জারী করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন, ফল কী ভাল হয়েছিল ? না হয়নি । বাবা নিজেদের তল্পীবাহী 4 টি পত্রিকা ছাড়া সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ।ফল কী ভাল হয়েছিল ? না হয়নি । রক্ষীবাহিনী গঠন করে তাদের দ্বারা দেশপ্রেমিক জনতার ইজ্জতহরণ, হত্যা, ও সম্পদ লুন্ঠন করার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন, ফল কী ভাল হয়েছিল ? না হয়নি ।
তাহলে আপনি কেন একই কাজ শুরু করেছেন ? ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া কে জোর করে আপনার দল ও রাষ্ট্রীয় প্রচারের কাজে ব্যবহার করছেন।বাংলাদেশের ইতিহাসে গত 42 বছরে কত বড় বড় হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে, কোনদিন এক জন, কোনদিন পাঁচ জন কোনদিন দুই জনকে হত্যা করা হয়েছে এক কিন্তু একদিনে 70 জন মানুষকে সরকারী প্রশাসন দ্বারা হত্যা কান্ড 71 সাল ছাড়া আর কখনও হয়নি এবং এই হত্যাকান্ড টি ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়াগুলো জামায়াত-শিবির এর ঘাড়ের উপর চাপিয়ে দিয়ে সারাদিনব্যাপী শাহবাগের নৃত্য দেখানো হচ্ছে।আমরা জানি,ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াতে এক মিনিটের বিজ্ঞাপনে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হয়। সেই সকল বিজ্ঞাপনও বন্ধ করে সারাদিনব্যাপী শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ লাইভ কাষ্ট করছে। ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া কমীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচাদি সম্পাদন করেন কিভাবে ? স্বাভাবিক ভাবেই এ প্রশ্ন চলে এসেছে ।তাই সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় মিডিয়াগুলো এক নাগাড়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
ধম নিয়ে ব্যবসা করা ছেড়ে দেন।ক্ষমতায় আসার আগে হজ্জ করে মাথায় ফেটি বেধে সাধারন মানুষের মধ্যে ধমের ইমেজ সৃষ্টি করে ভোট চাইতে গিয়েছিলেন।মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছিল।কিন্তু ক্ষমতায় এসে মাথার ফেটি খুলে ফেলে কপালে সিঁদুর পড়েছেন।সাধারন মানুষ এটা দেখেছে।গণজাগরণ মঞ্চের ব্লাগার রাজীব হায়দার আল্লাহ ও তার রসূল (স) কে নিয়ে কটুক্তি করেছে আপনি তা জেনেও তার বাড়িতে তার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন ।আল্লাহ ও তার রসূল (স) কে নিয়ে কটুক্তি করার কারনে তার বিচার করার দাবী নিয়ে যারা প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে, আপনি পুলিশ দিয়ে তাদের কে হত্যা করেছেন।যে রাজীব আল্লাহ ও তার রসূল (স) কে বিশ্বাসই করেনা মৃত্যুর পর হুজুরকে দিয়ে তার জানাজা পড়িয়ে ইসলামের অবমাননা করেছেন।
আল কোরানের তাফসিরকারক সাঈদীকে বিনা অপরাধে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে। ৬৮ হাজার গ্রামের যেসব জায়গায় সাঈদী আল্লাহর কোরআনের দাওয়াত পৌছে দিয়েছে, যে মাটির মানুষগুলো তার কাছে থেকে নবী- রসূল সম্পর্কে জানতে পেরেছে এবং রসূল (স) এর তরীকা অনুযায়ী আমল করতে শিখেছে , সেই সাঈদীকে মুক্তির জন্য রাস্তায় দাবী জানাতে এসেছিল, তাদের মধ্যে 80 জনকে আপনি পুলিশ দ্বারা একদিনে হত্যা করেছেন। এটাই কী আপনার ধম। এখন দেখা যাচ্ছে, গণজাগরণ মঞ্চেও কোরান তেলাওয়াত হয়।চার তকবীরের জানাজা তিন তকবীরে পড়ানো হয়। মানুষকে বুঝানোর জন্য যে ধম পালন, সেটাই হল ধম নিয়ে ব্যবসা ।মানুষকে আর বোকা বানানো যাবেনা।সাবধান হয়ে যান।আল্লাহর ফায়সালাকে ভয় করেন।তা না হলে আল্লাহর কাছে ধমপ্রাণ মানুষের ফরিয়াদে আপনি ধ্বংস হয়ে যাবেন।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন