হামাসের নারী যোদ্ধার ইসরাইলী আর্মীর লেফটেনেন্ট কর্ণেলকে হত্যার কাহিনী, কতটুকু সত্য?
লিখেছেন লিখেছেন মির্জা ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৮:৪৪:২৮ সকাল
লেফটেনেন্ট কর্ণেল দোলেভ কেদার
হামাসের সব শর্ত মেনে নিয়ে গাজা এবং ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে। এ যুদ্ধে হামাসের চমক লাগানো সব রণকৌশল, বিশেষ করে টানেল যুদ্ধ, ইসরাইলকে যেভাবে পরাভূত করেছে তা সব মুসলিমকেই গর্বিত করেছে।
ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আর কোন যুদ্ধেই ইসরাইল এত বেশী সংখ্যক সৈন্য হারায়নি। যদিও ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাত্র ৬৪ জন ইসরাইলী সৈন্য নিহত হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশী হওয়ার কথা। আল কাসসাম ব্রিগেডের মতে, নিহত ইসরাইলী সৈন্যের সংখ্যা দেড়শর উপরে। জনসাধারণের সমর্থন ধরে রাখার জন্য নিহত এবং আহত সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে বলার রীতি কোন নতুন বিষয় নয়। যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন আফগানিস্তান-ইরাক যুদ্ধের ক্ষেত্রে এটি করে আসছে। ইসরাইলও এই ধারা বজায় রেখেছে।
যাই হোক, এ লেখার কারণ গাজার যুদ্ধে নিহত-আহতের পরিসংখ্যান আলোচনা করা নয়। কারণটি হচ্ছে, বেশ কয়েকদিন ধরে কোন এক জনৈক বাংলাদেশী ফেইসবুকারের কল্যাণে হামাসের এক মুজাহিদা বোন কর্তৃক এক দুঃসাহসিক কমান্ডো অভিযানে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট দোলেভ কেদারসহ আরো কয়েকজন ইসরাইলী সেনার নিহত হওয়ার কাহিনী অনলাইনে উড়ে বেড়াচ্ছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ খবরটির কোন উৎস নেই। আর অবাক হওয়ার ব্যাপার হচ্ছে, বিডিটুডে নিউজ কর্তৃপক্ষ কোন যাচাই বাছাই ছাড়াই খবরটি নিজেদের নিউজসাইটে শেয়ার করেছে। সে সূত্র ধরে, ব্লগে কয়েকজন ব্লগার ভাইও নিজেদের ব্লগে তা প্রচার করছেন।
এটা সত্য যে, দোলেভ কেদারের নিহত হয়েছে এবং তার নিহত হওয়ার খবর ইসরাইলী মিডিয়াগুলো বেশ গুরুত্বের সাথে ছেপেছিল। কারণ, তিনি ছিলেন নিহত ইসরাইলী সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু র্যাংকের অফিসার। আর এটি কয়েকদিন আগের ঘটনাও নয়, প্রায় একমাস আগের ঘটনা। কিন্তু তিনি কি কোন মুজাহিদার একক কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন? আসুন দেখি এ ব্যাপারে প্রো-ফিলিস্তিনী নিউজসাইট মিডলইস্ট মনিটর কি বলেছেঃ
"...The Brigades, the military wing of the Palestinian Islamic Resistance Movement Hamas, said that a special unit had used a tunnel to infiltrate the Israeli territory near the Naraam settlement wearing Israeli army uniforms and lured a group of Israeli soldiers, including Kedar, clashing with them and killing them all...." (১)
বুঝাই যাচ্ছে, স্বয়ং হামাসের ভাষ্যমতেই, তাদের মুজাহিদীনগণ টানেলের মাধ্যমে ইসরাইলে অনুপ্রবেশ করে কেদারসহ এক গ্রুপ ইসরাইলী সৈন্যদের ফাঁদে ফেলে গোলাগুলীর মাধ্যমে তাদের হত্যা করে।
সবশেষে যা বলতে চাই, এই যুদ্ধের কাহিনী পরবর্তীতে খুঁড়লে অনেক বীরত্বগাঁথাই বের হয়ে আসবে। কয়েকটি ইতোমধ্যে চলেও এসেছে যেমন, যুদ্ধের একেবারে শুরুর দিকে হামাসের মেরিন কমান্ডোদের ইসরাইলী নৌঘাটিতে হামলার কাহিনী। আমাদের যেসব মুজাহিদ ভাইয়েরা টানেলের মধ্যে দিয়ে ইসরাইলে হামলা চালিয়েছে তারা আর ফিরে না আসার প্রস্তুতি নিয়েই এসব হামলাগুলো চালাতেন। তাই হামাসের বীরত্বের প্রচারের জন্য কোন বানোয়াট কাহিনী প্রচারের প্রয়োজন নেই, বরং এসব বানোয়াট ভিত্তিহীন জিনিসের প্রচারের মাধ্যমে আমরা নিজেদের অজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছি আর আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরও অপমান করছি।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.middleeastmonitor.com/news/middle-east/12995-israeli-media-describes-killing-of-officer-as-a-decisive-blow
বিষয়: বিবিধ
১৫৮২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন