আমরণ অনশন ও মাহমুদুর রহমান
লিখেছেন লিখেছেন কুরআনের সৈনিক ২০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:২৭:১৬ বিকাল
আমরণ অনশন শব্দটির সাথে আমার পরিচয় 2012 সালে। সেই সময় প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্র ও টিভিতে মানবাধিকার ও সমাজকর্মী আন্না হাজারের অনশন দেখেছি যেটা সারা বিশ্বের তাবত মানবাধিকার সংগঠন সহ ভারত সরকারের নটক নড়াতে সক্ষম হয়েছিল।
আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত যে সকল অনশন হয়েছে তার প্রায় সবগুলোই প্রতীক অনশন। অতি সম্প্রতি ১৯৭১ সালের মহান শহীদের নাম ধারণ করে কিছু তরুন অনশন শুরু করেছিলেন, তবে তারা তরল খাবার গ্রহণ করেছেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই ছেঁড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি টাইপের সমঝোতায় এসে, এক অথর্ব মন্ত্রীর ততোধিক ফাঁকা আশ্বাসে অনশন ভেঙ্গে নিজেদের দৌড় প্রমান করেছেন। এতে যে শহীদ রুমীর মান সম্মানের ফালুদা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
এবার অনশন শুরু করেছেন প্রগতিশীলদের চক্ষুশূল আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এটা ববি স্যান্ডসদের মতই আমরণ অনশন। কারণ তিনি এই অনশনে পানি পর্যন্ত পান করছেন না। যে দাবীতে তাঁর এই অনশন সেগুলো হচ্ছে-
১/ উনার মা, মাহমুদা বেগমের নামে দেয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার (মায়ের প্রতি দায়িত্ব ও ভালোবাসা);
২/ আমার দেশ ছাপাখানা হতে গ্রেফতারকৃত ১৯জন দিনমজুর ও কর্মচারীর মুক্তি (সহকর্মীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা);
৩/ ছাপাখানা খুলে দিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করতে দেয়া (প্রতিষ্ঠানের প্রতি মমতা)।
শেষ খবর হচ্ছে, গত পাঁচদিনের অনশনে গুরুতর অসূস্থ্য হয়ে তিনি এখন পিজি হাসপাতালের সিসিইউতে আছেন, মা এবং স্ত্রীর অনুরোধের পরও তিনি তাঁর দাবী পুরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে অটল আছেন।
যাট বছর বয়সী এই বৃদ্ধ মানুষটির দৃঢ়তা দেখে আমি রীতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছি। সরকার চাইলেই তাঁর যৌক্তিক দাবীগুলো পূরন করতে পারে। আবার তা না করে "ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য বেজম্মা" হিসেবেও পরিচিতি নিতে পারে। ১৯৭৫ এ ক্ষমতা হারানোর পর একটি পরিবারের প্রতি মানুষের ঘৃনাকে সহানুভূতিতে রূপান্তরের জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। এবার মনে হচ্ছে সময়টা আরো দীর্ঘ হবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন