শিশুর হাতে স্মার্ট ফোন এবং মা - বাবার দুশ্চিন্তা।
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১৮ মে, ২০১৭, ০৪:৪৯:৪১ বিকাল
স্মার্ট ফোনের সাথে শিশুর সম্পর্ক দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্মার্ট ফোনে শিশুদের আসক্তির বাস্তবিক প্রমাণ অহরহ । শিশুদের এই আসক্তির ফলে মা -বাবার ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। অনেক মা -বাবা বিষয়টা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন । শিশু সন্তানকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মোবাইল ফোন থেকে শিশুকে দূরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে আবার হুজুরের কাছ থেকে তাবিজ এনে শিশুর গলায় ঝুলাচ্ছেন। আবার অনেক মা-বাবা ভাবছেন সন্তানের জন্য ডাক্তারের কাছে নয়তো হুজুরের কাছে যাবেন।
বন্ধুদের সাথে প্রায়ই ফোনে কথা হয়। কিন্তু ইদানীং যোগাযোগ কিছুটা কম হচ্ছে। সময় এবং সীমাবদ্ধতার যাঁতাকলে সবাই আটকা পড়েছি। সে যাইহোক, গতকাল এক বন্ধুর সাথে মোবাইল ফোনে আলাপ চলছিল। আলাপের এক পর্যায়ে তার ৩ বছরের শিশু সন্তানের অতিমাত্রায় স্মার্ট ফোনের প্রতি আসক্তির কথা বলছিল তখন তার কথা বলার স্টাইল শুনে মনে হচ্ছিল বিষয়টি নিয়ে সে খুবই চিন্তিত।
আমার এই বন্ধুর মতো হাজারো মা-বাবা চিন্তিত। প্রথম আলোচনার দাবি রাখে স্মার্ট ফোনে আসক্তির কারণ সমূহ নিয়ে। কারণ খুঁজতে গেলে অনেক পাওয়া যাবে তবে প্রধান কারণ হচ্ছে সামাজিক জীবন ব্যবস্থা। বর্তমান সমাজ হচ্ছে কম্পিউটার, স্মার্ট ফোনের যুগ। এই সময়ে ভিক্ষুক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান, শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার হাতেই স্মার্ট ফোন। তারপর মা বাবার খামখেয়ালীপনা। লোক দেখানোর বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়াটা ঠিক না। সমাজের অনেকেই আছে শিশুর হাতে মোবাইল দেওয়াকে স্টাইল হিসেবে ধরে নিয়েছে। তবে এই সংখ্যা কম। শিশু সন্তানের বাবা অফিস চলে যান আর মা শিশুকে সাথে নিয়ে ঘরের কাজ করতে হয়। এই কাজ করতে গিয়ে শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দেন যাতে সে কান্নাকাটি না করে। মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে কান্নাকাটি করবে এটাই স্বাভাবিক । এখান থেকেই সূত্রপাত স্মার্ট ফোনের সাথে শিশুর সম্পর্ক।
স্মার্ট ফোনের সাথে পরিচয় বা গভীর সম্পর্ক বৃদ্ধির পরেই শিশুটি আসক্ত হয়। তখন সারাদিন গেইম খেলা আর টিপাটিপি করতে চায়। কেউ কল দিলে মা -বাবার কথা বলার সুযোগ নেই শিশুটি ফোন কেড়ে নেয়। গান শুনলে একা একাই নাচে কখনো নিজেই ইউটিউবে চলে যায়। ইউটিউব মিস ইউজের ফলে শিশুকাল থেকেই অশ্লীলতায় নিমজ্জিত হয় যদিও শিশু এসব কিছুই বুঝেনা।
এসব থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? কি করলে শিশুদের স্মার্ট ফোনের আসক্ততা দূর করা যাবে? তথাকথিত তাবিজ ঝুলিয়ে কিংবা কোন ঔষধ সেবন করে? না একদম না! তবে উত্তর খুঁজতেই হবে। নয়তো শিশুকে নিয়ে মা-বাবা যে সপ্ন দেখছেন সেই স্বপ্ন আদুরী রয়ে যাবে। অল্প বয়সেই চোখের সমস্যা দেখে দিতে পারে। মানসিকতায় চাপ আসতে পারে। পড়া লেখায় অনাগ্রহ দেখা দিতে পারে।
ঘরের কাজ করতে হলে শিশুর হাতে স্মার্ট ফোন না দিয়ে প্লাস্টিক গেইমের কিছু দেওয়া যায়। বাজারে শিশুদের খেলনার অভাব নেই। ঘরের মধ্যে বন্দি না রেখে মাঝেমধ্যে শিশুকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া উচিৎ । শিশুর সাথে হাসি মুখে কথা বলে ব্যস্ত রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। শিশু কান্নাকাটি করলে স্মার্ট ফোন হাতে দিয়ে শান্ত করার পরিবর্তে শিশুর সাথে নিজেই খেলার চেষ্টা করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
৩৬৮৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর বিষয় তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।
স্মার্ট বাবা-মা হিসেবে দাবি করতে শিশুদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দেন, বুঝলেন বিষয় টা ।।
আপনার কয়টি সন্তান?
মন্তব্য করতে লগইন করুন