রাষ্ট্রপতির কাছে জামায়াতের আহ্বান নিয়ে কিছু কথা।
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৬:২২:৪৪ সন্ধ্যা
> নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল সমূহের সাথে রাষ্ট্রপতি জনাব, আব্দুল হামিদ সংলাপ করছেন। উল্লেখ্য গত ১৮ তারিখ বিএনপির সাথে সংলাপ শেষ হয়েছে এবং আগামীকাল ২২ তারিখ পর্যন্ত আরো কিছু দলের সাথে সংলাপ চলবে।বাংলাদেশের অন্যতম ইসলামি রাজনৈতিক দল জামায়াত সেই সংলাপের সুযোগ পায়নি বা রাষ্ট্রপতি দলটিকে সংলাপের দাওয়াত দেন নাই।
জামায়তকে রাষ্ট্রপতি সংলাপের জন্য না ডাকার যুক্তি হচ্ছে জামায়াতকে আদালত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু জামায়াত এখনো একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ভাবে রয়ে গেছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ক মামলাটি বিচারাধীন । বিচারাধীন বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
> গতকাল জামায়াতের আমির মকবুল আহমদ মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি আহ্বান পত্র বা চিঠি লিখেছেন। তিনি চিঠিতে রাষ্ট্রপতির সংলাপ পদ্ধতির প্রশংসা করে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি নির্ধারণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আপনি সংলাপের যে মহান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাকে স্বাগত জানায় এবং আন্তরিকভাবে সফলতা কামনা করে। আমিরে জামায়াত চিঠিতে তার দল সংলাপে অংশ নেওয়ার যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতার পর প্রায় প্রতিটি সংসদে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ তথা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী বিজয় লাভ করেছে। অধিকন্তু, এ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। জামায়াত একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ক মামলাটি বিচারাধীন আছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে সংলাপে অংশগ্রহণ করার অধিকার জামায়াতের রয়েছে।
♦ জামায়াতের চিঠি নিয়ে নানান কথা হচ্ছে। জামায়াতের চিঠির মূল্যায়ন রাষ্ট্রপতি করবেন কি না এমনও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে আবার বলছেন জামায়াত সংলাপের অধিকার হারিয়েছে নিষিদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে। কেউ বলছেন জামায়াত তাহলে শেষ পর্যন্ত ভিক্ষা চাইলো। আবার কেউ বলছেন জামায়াত চিঠি দিয়ে কৌশল অবলম্বন করেছে যা প্রশংসা পাওয়ার উপযুক্ত।
♥ রাজনীতিতে চিঠির কদর কমে গেছে। তাই বলে যে মিছিল মিটিং সফল হচ্ছে তাও কিন্তু নয়। মিছিল মিটিং করা যাচ্ছে সেটাও নয়। মিছিল করতে গেলেই গুলি খেতে হয়। চিঠির কদর না থাকার পরও জামায়াত মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক ময়দানকে শান্তির বার্তা দিল। তারা প্রমাণ করেছে গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র নির্বাচন সঠিক ভাবে হওয়ার জন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে সংলাপের মাধ্যমে একটি সঠিক মাধ্যম তৈরি করা জরুরি। তাদের চিঠি সঠিক ছিল এটা ভিক্ষা নয় বরং রাজনৈতিক অধিকার এবং গণতন্ত্রের চর্চা। জানিনা মহামান্য রাষ্ট্রপতি চিঠির জবাবে কি বলেন বা করেন তবে এটা বলা যায় রাষ্ট্রপতিকে জামায়াত সম্মান দেখিয়েছে।
♦ আমরা জানি জামায়াতের সাবেক আমির মরহুম ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযমের প্রস্তাবিত নিরপেক্ষ সরকার এবং কমিশনের অধিনে নির্বাচন চেয়ে আওয়ামীলীগ এবং জামায়াত এক সাথে আন্দোলন করে ফল পেয়েছিল। বর্তমান সময়েও গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে জামায়াতকে সংলাপে সুযোগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলে মনে হচ্ছে। শুধু জামায়াত নয় দেশের সকল দলের অধিকার রয়েছে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সংলাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়া।
> কোন দলকেই তুচ্ছ করে দেখার সুযোগ নেই। রাজনীতিতে উত্তান বলতে একটি বিষয় আছে। এই রাজনৈতিক উত্তান কখন হয় কোন দলের হয় কেউ বলতে পারেনা।আজকের অবহেলিত দল কাল হয়তো শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভাব হবে। সুতরাং অন্তত গণতন্ত্র এবং আগামীর কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
বিষয়: বিবিধ
২৩৫৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হাছিনার অধিনে ইলেকশনে না যা্ওয়াই ভালো।
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন