শিশু পাচার বন্ধ করার উপায় কি নেই ?

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:২৩:২৯ রাত



যখন শিশু ছিলাম তখন থেকেই শিশু পাচার চক্রের নাম শুনে আসছি। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কল্লা কাটরা ,কুচুধরা নানান নামে জানতাম শিশু পাচারকারীদের। কালো গ্লাসের গাড়ি মানেই মনে করতাম শিশু পাচারকারী। আরো জানতাম ব্যাগ নিয়ে ওরা চলা ফেরা করে সুযোগ পেলেই ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। শিশু পাচার তখন যেমন ছিল এখনও আছে শুধু পদ্ধতি এবং নাম পরিবর্তন হয়েছে। নানান পদ্ধতিতে বছরের পর বছর শিশু পাচারকারীরা বাংলাদেশের মানব সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আদরের সন্তান হারাচ্ছেন বাবা -মা । বিশেষ করে শহরের অলিগলি থেকে বাচ্চাদের ধরে নিয়ে পাচার করে দিচ্ছে। খাবারের সাথে অচেতন কিছু মেডিসিন মিশিয়ে শিশুদের খাইয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বা খেলনার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের মগজ ধোলাই করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

‘অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামের অফিস যা রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীর একটি বাসা। সেখান থেকেই শনিবার পুলিশ ১০ শিশুকে উদ্ধার করেছে। এতে পাচারকারী সন্দেহে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রামপুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আসাদুজ্জামান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, উদ্ধার হওয়া ১০ শিশুর মধ্যে একজন দুপুর ১২টার দিকে ওই বাসা থেকে বের হয়ে চিৎকার করে বলে ‘আমাদের এখানে আটকে রেখেছে, আপনারা বাঁচান’। পরে এলাকাবাসী থানায় সংবাদ দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চারিয়ে চারজনকে আটক এবং ১০ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এদের বয়স ৬ থেকে ৯ বছরের মধ্যে।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তারা একটি এনজিও’র কাজে ওই শিশুদের একত্রিত করেছিলেন। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং উদ্ধার করা শিশুদের বক্তব্য শুনে থানা পুলিশ নিশ্চিত হয় তাদের পাচার করার উদ্দেশে ওই বাসায় আটকরে রেখেছিল। ১০ শিশুকে উদ্ধার করে থানায় আনার পর তাদের আত্মীয়-স্বজনদের খবর পাঠানো হয়েছে।রামপুরা থানা পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ৪ জন আন্তর্জাতিক শিশু পাচারকারী চক্রের সদস্য। এনজিও নাম করে এরা মূলত শিশুদের পাচার করার কাজে জড়িত।

দেশের মধ্যে নামে বেনামে , সরকারী লাইসেন্স নিয়ে বা লাইসেন্স বিহীন ভাবে অনেক এনজিও রয়েছে। যারা মূলত এনজিওর আড়ালে মানবপাচার করে চলছে। শুধু মানব পাচার নয় মানব জাতির শরীরের অনেক অঙ্গ বিক্রি করে দিচ্ছে বিদেশে। এখানে একটা জিনিস অবাক করার মত ,যারা এসকল এনজিওর সাথে জড়িত তারা সামান্য পরিমান মাসিক বেতনে পাচার কাজ করে। কিন্তু দেশের কিছু বড় দালাল এবং বিদেশী দালাল চক্র লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ইনকাম করে। পাচার কারীরা টার্গেট মোতাবেক নির্দিষ্ট মাস ও দিন নিয়ে মাঠে নামে । পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার অভাবে পাচারকারীদের এসব অধিকাংশ পাচার টার্গেট সফল হয়।

পাচার কারীদের হাত থেকে বাচতে হলে প্রথমেই পারিবারিক ভাবে নিজে এবং শিশুকে সচেতন করতে হবে। সামাজিক ভাবে গণ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে সে জন্য প্রশাসনে এই বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। অনেক জায়গায় দেখা যায় পাচারকারীদের হাতেনাতে ধরার পরও প্রশাসনের হাতে দেওয়া হয় না , সেটা ঠিক নয় পাচারকারীদের ধরতে পারলেই সাথে সাথে প্রশাসনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৫ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

341350
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:০৭
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার অভাবে পাচারকারীদের এসব অধিকাংশ পাচার টার্গেট সফল হয় । অনেক কারণের মধ্য এটা অন্যতম । বাচ্চাদের কার্টুন ছবিতে ছেলে ধরাদের সমন্ধে ধারানা দেওয়া যেতে পারে,পাচার কারীদের সন্ধান পাওয়া মাএ দৃশ্যমান একশনে যাওয়া, গ্রফতারকৃতদের দূরত্ব আইনের মাধ্যমে বিচার কাজ সম্পন্ন করা, এনজিওর নামে লাইছেন্স বিহীন পাচার কারীদের সনাক্ত করাও জুরুরি । অনেক ধন্যবাদ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৩
282864
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ Good Luck
341364
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৪৮
শেখের পোলা লিখেছেন : প্রশাসনের হাতে দিলেই যে তাদের শাস্তি হবে এ ভরসা মিছে৷ বরং পুলিশের কিছু ইনকাম হবে আর পাচারকারিদের অভিজ্ঞতা বাড়বে। ফলে নতুন পদ্ধতিতে ব্যবসা চলবে৷
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৩
282865
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
341369
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৫২
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : শিশুধরার উপদ্রব কি বেড়েছে আবার।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৪
282870
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : জি ভাইয়া নতুন করে আবার শুরু হয়েছে
341402
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৫
আহমদ মুসা লিখেছেন : শিশু পাচারকারী চক্রের হোতাদের মূলে হাত দেয়ার যেন কেউ নেই!!!
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৬
282871
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : যারা আছে তারা ওদের কাছ থেকে ভাগ নেয়
341411
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : বেড়িবাধ না থাকলে যেমন নদীর বান ধরে রাখা যায়না তেমনি আইন যখন জ্বি হুজুর জ্বি হুজুর করে তখন সাধারন মানুষের নিরাপত্তা এমনই হয়...দুর্নিতীতের ঝরঝর এই দেশ...কোথাও শৃংখলার নাম গন্ধনাই যে যেমন পারছে লুটতরাজ করছে,পুলিশ হাইওয়ে গুলিতে বেড়িকেড দিয়ে নিয়মীত প্রতি বাহন থেকে পাবলিকের সামনেই ঘুষ আদায় করছে চোখে দেখা দৃশ্য...তখন মন চাইছিল এই দেশ ছেড়েই চলে যেতে এত্তো জুলুম সয়ে কি বেচে থাকা যায়...? At Wits' End
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৪
282867
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : বর্তমান সময়ে দেহ্সের করুন কাল চলের
341412
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:০৩
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : এই নিষ্পাপ শিশুগুলিকে যে বাবা মায়ের তাদের কষ্টটা উপলব্দি করার অনুরুধ রইলো...একবার ভাবুনত আপনার আদরের বাবুটাকে কেউ গায়েব করলে কেমন কষ্ট অনুভব করবেন...? জীবনটাই অর্থহীন হয়েযাবে...?কমবেশি আমরা সব্বাই এর ভোক্তভোগী। অনেক ধন্যবাদ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৩
282866
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
341416
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:২৬
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসন- জননিরাপত্তার দুটি খুঁটি, এ দুটোতে ঘূণ ধরলে আর কোনভাবেই জনগণ নিরাপদ থাকতে পারেনা!

এমন কি ঘূণের মাত্রা বেশী হলে এবং খুঁটি বদলানোর সামর্থ না থাকলে সে গৃহ পরিত্যাগ করাই কর্তব্য
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৪
282868
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : বর্তমান সময়ে দেহ্সের করুন কাল চলের
341427
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৩০
আবু জান্নাত লিখেছেন : গুম, খুন, শেয়ার লুট, দখলবাজি, চোরাকারবারি, টেন্ডারবাজি, মানবপ্রচারকারী, ইয়াবাচালানকারী সবই ওনাদের ডিজিটাল প্রকল্পের আওতাধীন।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৪
282869
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : বর্তমান সময়ে দেহ্সের করুন কাল চলের

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File