জোটবদ্ধ রাজনীতি , নেতৃত্ব এবং বর্তমান পরিস্থিতি

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ০৬ আগস্ট, ২০১৫, ০২:৫৭:২৮ রাত



জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ রাজনীতি বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ । ১৯৭৩ এর কথা ছেড়ে দিলে ১৯৭৯ থেকে ৯১ সাল পর্যন্ত যে চারটি সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছিল তা ছিল রাস্থপতি সরকার পদ্ধতি। তার পর ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ শেষ নির্বাচন ছিল সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে। ১৯৭৩ সালের মার্চের নির্বাচনের পর সম্ভবত মে মাসে প্রথম কয়েকটি ছাত্র সংগঠন মাইল প্রথম ঐক্য ফ্রন্ট গঠন হয়। এই ঐক্য ফ্রন্ট ১৯৭৩ সালে রাজনৈতিক ত্রিদলীয় প্রথম ঐক্যজোট গঠন হয়। তত্কালীন সরকারের নির্দেশে এই ঐক্যজোট "গণঐক্যজোট " হিসেবে হাজির হয়। জোটের মধ্যে ছিল আওয়ামীলীগ ,ন্যাপ এবং সিপিবি। এই সেই ঐক্যজোট যা পরবর্তিতে বাকশাল নাম রূপ নিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ইতিহাস বলে এই গণঐক্যজোট পরবর্তী নির্বচোনে অর্থাৎ ৭৯ সলের নির্বাচনে কোনো ভুমিকা রাখেনি বা রাখা হয় নাই। ইতহাস থেকে জানাগেছে উল্টা আওয়ামীলীগ দুই পার্ট হয়েগেছিল। মালেক উকিল এবং মিজানুর রহমান দুই পার্টের প্রধান ছিলেন। সেই নির্বাচনে মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামী বা ইসলমিক ডেমোক্রেটিক লীগ একটি রাজনৈতিক ঐক্যজোট গঠন করেছিল এবং তারা ২০ টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল।

উপরের সব হিসেব ছিল ঐক্য গঠনের ভুমিকা মাত্র।কারণ সেই সময়কার রাজনৈতিক ঐক্যজোট ছিল নাম মাত্র বা অকার্যকর মাত্র দিন কয়েকের জন্য। ৯১ এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল দেশে রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার। যদি ও নির্বাচনের পূর্বে ঐক্য প্রকাশ হয় নাই বা করে নাই কিন্তু নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছিল। এটাই ছিল মূলত প্রথম ফলপ্রসু রাজনৈতিক ঐক্যজোট । ৯৬ এর নির্বাচনে ও জোটের অবস্তান ছিল ভালো তবে ফলাফল ভালো ছিল না। কারণ আওয়ামীলীগ জোটবদ্ধ না হয়েও মিত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল জাতীয় পার্টিকে জোটবদ্ধ হয় নাই। সুতরাং আওয়ামীলীগ একাই সরকার গঠন করে সেই সময়। অন্যদিকে বিএনপি - জামায়াত জোটের নির্বাচনী ফলাফল ছিল নিম্নে। সেটার পেছনে অনেক কারণ ও ছিল। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনের সময় আবার জোটের ভূমিকার ভিত্তিতে বিএনপি ,জাময়াত ,ইসলামী ঐক্যজোট ,জাতীয় পার্টি (নাজিউর )সরকার গঠন করে। আওয়ামীলীগ ছিল একা কিন্তু জাতীয় পার্টি ( এরশাদ ) একটি নির্বাচনী জোট করেছিল কিন্তু সেটা নাম মাত্র।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মহাজোট গঠন করে সরকার গঠন করে অন্যদিকে চার দলীয় জোট পরাজিত হয়। নির্বাচন পরে এবং পূর্বে সরকার দলীয় এবং বিরোধী দলীয় দুটি জোট হিসেবে পরিচিত হয়। যদিও মহাজোট শুধুই একটি বিশাল নাম কারণ জোটে আওয়ামীলীগ বিহীন অন্য পার্টির কেউ নির্বাচিত হওয়ার ক্ষমতা রাখেন না যা পরীক্ষিত।

জোটের রাজনীতিতে নেতৃত্বের ভুমিকা অনেক গুরুত্বের। প্রথম কথা হচ্ছে জোটের শরিক প্রত্যেক দলের ভোটের মাঠ দেখে নাকি নাম দেখে নেতৃত্বের হিসেব করা যায়। ইটা অনেক বড় কিছু নয় কারণ রাজনৈতিক জোট মূলত ভোটের জোট আওয়ামীলীগ বা মহাজোট সেটা সরাসরি না বললেও বিনপি -জাময়াত সেটা সরাসরি বলতে শুনেছি অনেক একাধিকবার। তাহলে অবশ্যই ভোটের হিসবে নেতৃত্বের আসন বিলিয়ে দিতে হবে। এই হিসেবে একটি জোটের নেতৃত্বে রয়েছে আওয়ামীলীগ আরেকটিতে বিএনপি। আওয়ামীলীগের মহাজোটে যে কয়কেটি দল রয়েছে সেখানে এমনও আছে গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার হওয়ার ভোট পাবেন বলে মনে হয় না। আওয়ামীলীগ তাদের রাজনৈতিক কৌশলের কারণেই জোট এটা পরিষ্কার। কৌশল ছাড়া রাজনীতি অকল্পনীয় সেই প্রেক্ষিতে এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। চার দলীয় জোট এখন ২০ দলীয় জোট। তাদের মধ্যে ও এমন পার্টি আছে যা শুধু একজন ব্যক্তি ও প্লেকার্ড নির্বর । এটাও তাদের সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক কৌশল।

মহাজোট বনাম ২০ দলীয় জোটের মধ্যে বর্তমান ভোটের রাজনীতি সীমাবদ্ধ। প্রশ্নবিদ্ধ গেল নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটকে কৌশলে বাহিরে রেখে জনগনের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মহাজোট নির্বাচন করে পুনরায় সরকার গঠন করে। বিপরীতে ২০ দলীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বা নিতে দেওয়া হয় নাই। ২ বছর অতিক্রম হয়ে গেল অথচ ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এমন কোনো কিছু করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে হয় না যা দেখে দেশের জনগণ আশা রাখবে নিজেদের ভোটের অধিকার আবার ফিরে পাবে। এখনো সময় আছে নতুন করে চিন্তা করে রাজনৈতিক কৌশল কাজে লাগিয়ে জনগনের অধিকার আদায়ের জন্য ২০ দলীয় জোটকে কিছু একটা করতে হবে। আর তার মাধ্যমে প্রমান করতে হবে জোটবদ্ধ হওয়া শুধু ভোটের জন্য নয় অধিকার আদায়ের আনদোলনের জন্যও। নেতৃত্বের বেলায় বিএনপিকে অবশ্যয় শরিক দলের মতামতকে মূল্যায়ন দিতে হবে। আমরা এটাও জানি আন্দোলন করতে গেলেই খুন ,গুম ,জেল ,জুলুমের শিকার হতে হচ্ছে তবু ও আমরা বিশ্বাস করি সঠিক নেতৃত্ব ও কর্মের মাধ্যমে অধিকার ফিরে পাবে দেশের গণতন্ত্রপ্রেমি জনগণ।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

334009
০৬ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৬:১৫
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : রাজনীতি এখন আর বুঝিনা তেমন।
০৬ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
276257
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : রাজনীতি এখন মৃত Worried
334050
০৬ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৫০
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : বর্তমান জোট আওয়মীলিগের মহাজুটই ভালো অবস্থানে আছে....আর বিমপি জামায়াত জোটের মধ্যে জামায়াতের সাথে যদি একটু তালে শরিকরা লাগাইতো এতো দিনে নতুন খেলা শুরু হইতো...আওয়ামিলীগে ইনু মেননরা একাই একশ,শেখ হাসিনা তাদের কথা বলার স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন যাতে ইনুরা অংশ নিতে পারেন,আর খালেদা জিয়ার ভয়ে কোন শরিক নেতাই সামনে দূরের কথা মনে মনেও মুখ খুলেননা...অংশ গ্রহন দূরের কথা...তাই এই অগণতান্ত্রিক জোটের ভবিষ্যৎ অন্ধকারই বলা যায়...কর্মি দিয়ে আন্দোলন হয় চামচা দিয়ে নয় চামচারা সব সময়ই সুবিধা ভোগি...খুজ খবর নিয়ে দেখেন খালেদা জিয়াকে গিড়েই রেখেছেন হাসিনার গোয়েন্দারা তাই খালেদা জিয়া মনে মনে কিছু বললেও হাসিনার বেড রুম থেকে সুনা যায়.... Thinking Day Dreaming I Don't Want To See ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ পিলাচ পিলাচ পিলাচ
০৬ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
276258
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ইনু মেননদের গ্রামের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা নেই তবু ও জোটে মল্লায়ন পাচ্ছে যতেষ্ট।
ধন্যবাদ আপনাকে মূল বিষয়টা মন্তব্যে তুলে আনার জন্য। Good Luck
334055
০৬ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৫৭
হতভাগা লিখেছেন : জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট এখন দুর্দান্ত ফর্মে আছে ।

এদেরকে হারাতে পারে এমন কোন দলের বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই ।

খালেদা জিয়ার আত্মসমর্পনের মাধ্যমেই ২০ দলীয় জোট মিলিয়ে যাবে ।
০৬ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
276261
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : শেখ হাসিনার খুন গুমের কৌশলে হয়ত হেরে যেতে হবে অন্যদের।
০৭ আগস্ট ২০১৫ সকাল ০৯:০৯
276370
হতভাগা লিখেছেন : If you can't beat them , join them .

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File