খুন গুম আর ধর্ষণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ০৩ জুন, ২০১৫, ০১:৩২:০৪ রাত
আজ থেকে ২ বছর পূর্বে দেশের মধ্যে একটি খুন হলে পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হয়ে যেত আর এখন এক দিনে ৫ টি হলেও প্রধান শিরোনাম হয় না। কারণ হচ্ছে প্রতিদিন যদি একটি পত্রিকা শুধু খুনের খবর শিরোনাম করে তাহলে অনেকে তা পড়বে না আর এভাবে পাঠক সংখা কমে যাবে পাঠক সংখা কমে গেলে সার্কুলেশন কমে যাবে। তখন পত্রিকাটি বন্ধ করে ফেলতে হবে।নয়তো সরকারের চাপে প্রধান শিরোনাম করতে পারেনা পত্রিকার সম্পাদক। দেশে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যা রক্তাক্ত ও প্রতিহিংসার পরিবেশ বলা যায়। প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো প্রান্তে গুম খুন হচ্ছেই আর তা অধিকাংশ রাজনৈতিক। সাথে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে সরকারের ইন্দোনে প্রশাসনের মাধ্যমে।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যাতে দেখা গেছে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে ৯৫টি বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ৭৩জন। গত পাঁচ মাসে সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে মারা গেছেন ২০ জন বাংলাদেশের নাগরিক। আহত ২৯ জন, আর অপহরণ করা হয়েছে ১৬ জনকে।অধিকার’এর তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে ২৩৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় মে মাস এর হার আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে ৩৩, ফেব্রুয়ারিতে ৪৪, মার্চে ৪০, ও এপ্রিল মাসে ৪১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। কিন্তু মে মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৫ টি।
ধর্ষণের মতো যৌতুকের কারণে সহিংসতার ঘটনাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে ১৩, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ১৫টি করে এবং এপ্রিল মাসে ১৩টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তবে মে মাসে এ ধরনের সহিংসতা হয়েছে ১৭ টি। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৬২জন।সংস্থাটি আরও জানায়, বছরের পাঁচ মাসে অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। মানবাধিকার সংস্থা অধিকার দেশের অনেক জায়গার খবর পায় নাই নয়তো তাদের হিসেবের খাতা অনেক দীর্ঘ হয়ে যেত।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এর মধ্যে ক্রসফায়ার অন্যতম। আসলে এই ক্রসফায়ার কি ? যে মানুষটিকে ক্রসফায়ারে মারা হলো তার সাথে কি কোনো অস্ত্র ছিল ? গত ৫ মাসে যতটা রাজনৈতিক ক্রসফায়ার হয়েছে প্রত্যেকটির একটি একটি করে তদন্ত করে দেখুন একটিতে খুন হওয়া ব্যক্তির সাথে অস্ত্র পাবেন না। তাহলে বন্দুক যুদ্ধ বা ক্রসফায়ার বলে নিরপরাধ মানুষদের খুন করা হচ্ছে কেন ?এটাকে কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার খুন বলা যাবে না ? রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে খুন গুম স্বাধীন দেশে কাম্য নয়। ক্রসফায়ার নাটক এভাবে ধারাবাহিক হয়ে গেলে দেশের আগামী দিনের অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাড়াবে।
দেশের এই যখন করুন হাল ঠিক তখন সরকার মহলে সুর দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ধর্ষণ ,খুন আর গুমে যখন দেশের মাঠি ও মানুষ আহাজারি করতেছে তখন সরকার মহলের এমন সুর আসলেই লজ্জা জনক। দেশের মানুষের জন্য দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সহিংসতা ও সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি বন্ধ করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকার কিংবা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে জাতীয় একটি নির্বাচন জরুরি।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৭ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন আমার আপনার এসব দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নায়।
২০১৪ এর শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন ছাত্র-ছাত্রীকে একটা আবাসিক হোটেলে পর্ণ ভিডিও বানানোর সময় পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও তাদেরকে ৫০ টাকা জরিমানা করেই ছেড়ে দেওয়া হল, তাদের ছাত্রত্ব ও বাতিল হল না! ঐ একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন পর্দানশীন ছাত্রী তাদের কাছে পর্দার উপর লিখা ২/৩টা বই রাখার অপরাধে ও গভীর রাতে হলে তাহাজ্জুদের নামায পড়ার অপরাধে ২ ছাত্রীকে ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীরা ইচ্ছেমত উত্তম-মধ্যম দিয়ে হল থেকে বহিষ্কার করে দিল। একদিকে লতিফ সিদ্দিকীর মত মুরতাদরা জামিন পেয়ে যায়, অন্যদিকে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদ ও হাদিসের আলোকে মানব জীবন বইয়ের সন্মানীত লেখক এ.কে.এম ইউসুফদের লাশ জেল থেকেই বের হয়!!! এই ঘটনাগুলো থেকে বাংলাদেশ সরকার ও সেকুলার মুসলিমদের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন