জনগনের কথা শুনতে হবে

লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৭:১৮:০৩ সন্ধ্যা



দেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা একটি স্বাধীন দেশের জন্য বেমানান। দেশের করুন পরিস্থিতি দেখে সাধারণ জনগণ দিশেহারা। একদিকে পেট্রোলবোম অন্যদিকে ক্রসফায়ার আর চারিদিকে লাশ আর লাশ।বর্তমান পরিস্থিতিকে কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের লোক স্বাভাবিক বলতে পারেনা। চলমান পরিস্থিতি রাজনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী। দীর্ঘ একমাসের অধিক সময় থেকে চলে আসা এই সংকট দেশের জনগনকে হতবাক করেছে।মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে বিএনপি -জাময়াত জোট। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু সেই আন্দোলন মাসের পর মাস যখন হয় তখন সেটা সহিংসে রূপ নেই ।

একদিকে দীর্ঘ মেয়াদী আন্দোলন অন্যদিকে সরকারের অগণতান্ত্রিক দমন নীতি।চলমান রাজনৈতিক সংকটের ফলে যেমন দেশের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তেমনি দিন দিন অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিচ্ছে। বৈদেশিক সাহায্যের নীতিমালায় প্রভাব পরেছে। ছাত্র -ছাত্রীদের পড়ালিখার ক্ষতি হচ্ছে গার্জেন্টদের মানসিক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে ।দিন মজুরের মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে ,চাকুরিজীবি ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায় দিন পার করতেছেন। একই ইস্যুতে ১৯৯৬ সালে যখন বর্তমান সরকারীদল আওয়ামীলীগ ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল তখন ও অনেক পরীক্ষা পিছাতে হয়েছিল।গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

বিএনপির চলমান আন্দোলন ঠেকাতে সরকারের প্রশাসন ক্রসফায়ার নামের হত্যা করে যাচ্ছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয়। জাতীয় এক পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এক মাসের অধিক চলমান রাজনৈতিক সংকটে হরতাল অবরোধে মৃত্যু বরণ করেছেন ৯৫ জন। আইনশৃখলা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩০ জন শুধু রাজনৈতিক নেতা কর্মী।এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গত এক মাসে নেতাকর্মীদের গুম-খুনের একটি তালিকা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিদেশি দূতাবাসে পাঠিয়েছে বিএনপি ।আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে তাদের সরজমিনে তদন্ত করার জন্য অনুরোধও জানিয়েছে দলটি। বিএনপির তালিকায় দাবি করা হয়েছে গত ৫ জানুয়ারির পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র্যা ব ও পুলিশসহ সাদা পোশাকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে ৭৮ জন প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে বিরোধী দলের নেতাকর্মীর সংখ্যা ৪৩ জন ।

আইনশৃখলা বাহিনীর গুলিতে সন্ত্রাসী নিহত হলেও প্রশ্ন দেখা দিত কিন্তু যখন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী নিহত হচ্ছে তখনতো আর বলার বাকি থাকে না একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য কলঙ্ক। কে বা করা পেট্রোল বোমা মারতেছে সেটার ও সুষ্ট তদন্ত না করে এমপি মন্ত্রীরা বিএনপি জামায়াতের নেতা কর্মীদের গুলি করার হুকুম দিচ্ছেন। এমনকি প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ও গুলি করার কথা প্রকাশ্যে বলতেছেন। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান গত সপ্তাহে গাজীপুর পুলিশ লাইনে জেলা পুলিশ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন "আপনাকে হত্যা করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা বসে বসে আঙুল চুষব? এখানে যা যা করা দরকার সব কিছু করবেন। গুলি করা শুধু নয়, ওর বংশধরশুদ্ধ নষ্ট করে দেবেন। " গত এক মাসে পুলিশের আইজি শহীদুল ইসলাম, র্যা ব ডিজি বেনজির আহমদ এবং বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ ও গুলি করার কথা বলেছেন ।র্যা ব ডিজি বেনজির আহমদ একটু এগিয়ে গিয়ে বলেছেন শিবির দেখলেই গুলি।

বাংলাদেশের এমন সংকটাপন্ন সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘ সহ বন্ধু রাষ্টগুলো। তারা দেশের রাজনৈতিক মতপার্থক্য মিটিয়ে নিতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসে সমাধানের পথ খোজার কথা বলেছে পাশাপশি সরকার যেন মিছিল সমাবেশের অনুমতি দেয় সেই আহ্বান ও জানিয়েছে।

দেশের এমন পরিস্থিতে দেশের সাধারণ জনগণ ভয়ে কাতরাচ্ছে রাস্তায় বের হলেই হয়তো পুলিশের গুলি ,পেট্রোলবোম নয়তো গাড়ির ভাঙ্গা গ্লাস শরীরে পরে প্রাণ বুঝে চলে যাবে।দেশ বিদেশের মানুষ যখন উদ্বিগ্ন তখন সরকার রাজনৈতিক সংকট মানতে নারাজ সরকারের পক্ষ থেকে নৈরাজ্য বলা হচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে।দেশের জনগণ সংঘাত -সংঘর্ষের পথ এড়িয়ে রাজনতিক ভাবে সরকারকে শান্তির পথ খোজার দাবি জানাচ্ছেন। কারণ জনগণ মনে করে বর্তমান পরিস্তিতি দেখে জনগনের উদ্বেগ আর উত্কন্ঠার জন্য সরকার দায়ী। সরকারের একগুয়েমি কর্মকান্ডে দেশে সংকট সৃষ্টি হয়েছে । প্রশ্নবিদ্ধ ও অধিকাংশ ভোটারের অংশগ্রহন ছাড়াই ক্ষমতা গ্রহণ ছিল সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ। গত ৫ জানুয়ারী বিএনপি ও তার জোটের দলগুলোকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে সংকটকে দিগুন করা হয়েছে। তাছাড়া দেশের রাজনৈতিক নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার ও গুলির মাধ্যমে সংকট তীব্র করেছে সরকার।জনগনের দেশ বাংলাদেশ সেই জনগণ আজ বলছে একগুয়েমি ছেড়ে সরকারকেই আলোচনার পদক্ষেপ নিতে । একগুয়েমি ও সহিংসতা পরিহার করে দেশের মধ্যে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে । সুষ্ট ও জনগনের অংশগ্রহন মূলক একটি নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আলোচনার মাধ্যমে মুক্তির রাস্থা খোজে জনগনকে মুক্তি দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও জনগনের দাবি।পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রীরা মনগড়া মন্তব্য করা থেকে দুরে থেক সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে পেট্রোল বোমার মাধ্যমে যারা মানুষ মারতেছে তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরুধ রইলো।ক্রসফায়ারের নাম হত্যা বন্দ করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল অপরাধীদের বিচার করতে হবে।বর্তমান পরিস্থিতি যত দিন চলবে দেশের উন্নয়নে বাধা তত বাড়বে।সুতরাং দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ,স্বাধীন দেশের নাগরিকদের স্বাধীন ভাবে বেচে থাকার সুযোগ করে দিতে সরকার ত্যাগ শিকার করবে বলে আশাবাদী।

বিষয়: বিবিধ

১১৮৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

304177
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫১
আফরা লিখেছেন : এত উল্টা পাল্টা কথা বলেন কেন দেশের পরিস্থিতি খুব ভাল আছে । জনগন আবার কিন স্যার যে তাদের কথা শুনতে হবে ----।

ধন্যবাদ ভাইয়া ।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৩
246091
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : হে দেশ এখন জগন্ন ভালো আছে ,,অনেক ধন্যবাদ
304186
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:০০
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আগে বলা হত কিছু শর্ত সহকারে আমরা আলোচনা করতে চাই, কিন্তু এখন বলা হয় কোন আলচনাই হবে না!!!!!

আর সাধারণ মানুষের কথা বলছেন? সবচেয়ে বদ ওই মানুষ গুলোই। তারা চায় তারা নিরাপদ থাকুক, আর সবাই মরে ছাড়খার হয়ে যাক। কিন্তু কেন? রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই আন্দোলন করছে, স্বৈরাচারীদের হাত থেকে দেশ কে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কেন প্রতিবাদীদের কাতারে শামিল না হয়ে নিজেদের স্বার্থ নিইয়ে ব্যস্ত আছে?

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৩
246092
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন ভাই সবাই নিরব আর নিরবতা এখন কাল হয়ে দাড়িয়েছে ,,অনেক ধন্যবাদ
304187
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:০৫
হতভাগা লিখেছেন : জনগনের জান ও মালের নিরাপত্তা বিধান করা সরকারের কর্তব্য । যারা নাশকতা করছে তাদেরকে সাইজ করার জন্য জন গনের ব্ল্যান্ক চেক পেয়ে গেছে সরকার ।


১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৪
246093
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভাই আপনি একটু সাবধানে থাকবেন
304198
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৩৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : জনগন যদি সব দোষ রাজনিতিবিদ দের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজে চুপ করে বসে থাকে তহলে এই পরিনিতিই হয়।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৪
246094
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : জনগনের নিরবতা আজ কাল হয়ে দাড়িয়েছে
304226
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:০৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় সুহৃদ ভাইয়া। এখনো আশাকরি নেতা নেত্রীদের বোধোদয় হবে। দেশ এবং মানুষের স্বার্থে একগুঁয়েমি পরিহার করবে। বারাকাল্লাহু ফিক ভাইয়া। ভালো থাকুন খুব ভালো সবসময়। দোয়া রইলো।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৫
246095
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : জনগণ গুলির হাত থেকে মুক্তি চায় ,,অনেক ধন্যবাদ
304239
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৪৯
শেখের পোলা লিখেছেন : পিপিলিকার পর হয় মরিবার তরে৷ সরকারেরও পর গজাচ্ছে৷ উড়ার উপযুক্ত হলেই উড়ে আগুনে ঝাঁপ দেবে৷
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৬
246096
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি ভাইজান ,,অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File