মধ্যপ্রাচ্যে কেমন আছি আমরা ( পর্ব -১৭ ) মহিলা প্রবাসী
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ১২ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৫৪:২৪ সন্ধ্যা
মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশে রয়েছেন বাংলাদেশী মহিলা প্রবাসী । যাদের মধ্যে বড় একটা অংশ রয়েছেন শ্রমিক হিসেবে বিশেষ করে ঘরের কাজে কর্মরত। তাছাড়া কিছু সংখ্যক রয়েছেন উচ্চমানের চাকুরীতে এবং অনেকে আবার ব্যবসা বানিজ্যে জড়িত আছেন ।
মহিলা প্রবাসীদের কিছু সংখ্যক সফলতার সাথে প্রবাসে জীবন যাপন করতেছেন।পরিবারের সদস্য নিয়ে সুন্দর সংসার সাজিয়েছেন প্রবাসেই ।নিজ পেশার পাশাপাশি সামাজিক কাজে ও এগিয়ে রয়েছেন প্রবাসী কমিউনিটির সাথে জড়িত রয়েছেন।
অন্য দিকে মহিলা প্রবাসীর বড় অংশের বিশেষ করে মহিলা শ্রমিকদের মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাদের জন্য বেঁচে থাকাটা অনেকটা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আর এই কষ্টের পেছনে অন্যতম দায়ী বাংলাদেশী পুরুষ প্রবাসী।
মহিলা প্রবাসীদের দুটি কারণে সমস্যা হয় , বুঝে শুনে না আসা এবং কিছু খারাপ বাংলাদেশী পুরুষের খপ্পরে পরে।
শ্রমিক মহিলাদের অধিকাংশরাই পরিবার্বিহীন থাকেন প্রবাসে । মহিলাদের বেলায় প্রবাসে একা জীবন যাপন করা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাড়ায়। আমাদের দেশের মানুষ একদিকে হুজুগী অন্যদিকে লোভী। কিছু একটা শুনলেই না জেনে না বুঝে এটার পেছনে ছুটে। বিদেশে আসার জন্য এই হুজুগী মনোভাব ও লোভ বিরাট একটা কাজ করে।
বাংলাদেশী অনেক দালাল আছে যারা মিথ্যে কথার মাধ্যমে দেশের মহিলাদের প্রবাসে নিয়ে এসে বিপদে ফেলে দেয় , যৌন কর্মী বানিয়ে ফেলে জোরপূর্বক। দালালরা মিথ্যে কথার ফুলঝুরির মাধ্যমে নিয়ে এসে ভদ্র শালীন মহিলাকে অশ্লীল জগতে গলা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।নয়তো হতবাগী নিজেই অন্ধকার জীবনে যেতে হয় জীবন বাঁচাতে। বিদেশে এসেই যখন থাকার বৈধতা পাওয়ার প্রয়োজন ব্যবস্থা করার কেউ পায় না , থাকা - খাওয়ার জায়গা পায় না একজন কিশোরী বা অল্প বয়সী মহিলা তখন তার কি করার থাকবে ? যখন একজন মহিলা যার চারপাশ অন্ধকার সে কোন দিকে যাবে ? যেদিকে যাবে তার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে। কিশোরী মেয়ে কি ভাবে অচেনা জায়গায় একা থাকবে ? বিদেশের আইন তার কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পারে ?
প্রবাসে এসে যখন অচেনা মানুষের পরিবারে কাজ করার জন্য একজন ভাষাজ্ঞানহীন মহিলাকে দেওয়া হয় তখন সে মহিলা কি কাজ করবে ? একদিকে ভাষা জানা নেই ,কাজের পার্থক্য অন্যদিকে অপরিচিত নারী পুরুষ। অনেক মহিলাকে ব্যাচলর ছেলেদের ঘরে কাজ করার জন্য অবৈধ ভাবে এনে দিচ্ছে বাংলাদেশীরা।যার ফলে এই মহিলাটির ওপর শুরু হয় যৌন হয়রানি। মহিলাটি আইনের আশ্রয় ও নিতে পারেবে না বা সে সযোগ পাবে না। সযোগ পেলে ও হয়তো বিদেশে থাকার বৈধতা নেই বলে আইনের আশ্রয় নেবে না নিতে গেলেই প্রথমে নিজে ধরা খাবে।চিন্তা করেন কি অবস্থা দাড়াবে এই মহিলাটির ?
দিত্বীয় যে কারনে প্রবাসী মহিলাদের বিশেষ করে মহিলা শ্রমিকদের সমস্যা দেখা দেয় সেটা হলো লম্পট বাংলাদেশীদের কারণে। প্রবাসের রোডে অনেক বাংলাদেশী মহিলা দেখা যায় কিন্তু কথা বলা যায় না ,প্রয়োজন হয় না বা বলার পরিবেশ নেই। আবার যদি কথা বলতে চান তাহলে পরিচিত কেউ দেখলে অন্য চোখে দেখবে যার একমাত্র কারণ কিছু অসব্য মহিলা ও যৌনকর্মীদের দালাল পুরুষ প্রবাসী।
২০১২ সালে একদিন ক্রিকেট খেলার জন্য আমিরাতের শারজাহ শহরের আল কাসবা পার্কের পাশে বিশাল খালি জায়গায় গিয়েছিলাম। মধ্যপ্রাচ্যের তাপ মাত্রা অনেক বেশি তাই সময়টা ছিল ফজরের নামাজের পর। খেলার একপর্যায়ে মাঠের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছি তখন দুজন বাংলাদেশী মহিলা আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। উনাদের দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম উনারা ঘরের কাজে কর্মরত। ......... ( চলবে )
বিষয়: বিবিধ
১৫৬৩ বার পঠিত, ৪০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সেটা জানতাম কিন্তু এতটা অবহেলিত হয় সেটা জানতাম না ।চালিয়ে যান ।
কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো্ মেয়েদের এই নাজুক অবস্থা কেন? এখানের মেয়েরাতো ইসলামের হেজাব মেনেই চলে, নাকি?
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : কিন্তু প্রবাসী মহিলা যারা নতুন উত্তর আমেরিকা অথবা ইউরোপে এসেছেন তাদের অনেক'কেই আমার চেনার সুযোগ হয়েছে কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার কাজের সুবাদে। কিন্তু এসব দেশে সিঙ্গেল অথবা অবিবাহিত মেয়েদের কোন সমস্যা নেই। যে যেই কাজই করছে, ছোট বড় সবাই সম্মানের সাথে করছে। যৌন হয়রানীর তো প্রশ্নই উঠে না।
কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো্ মেয়েদের এই নাজুক অবস্থা কেন? এখানের মেয়েরাতো ইসলামের হেজাব মেনেই চলে, নাকি?
(গ্রামের পথে পথে) নামের ব্লগারকে ব্লক করার অনুরোধ জানাচ্ছি, ওনার মন্তব্যের টার্গেট মাত্রই মুসলিম ইসলাম।
প্রতি ২/৩ মিনিটে ১ জন করে মেয়ে আক্রান্ত হয় এসব দেশে।
গ্রামের পথে পথে - বেশ মজার তথ্য, তাই না?
দালাল চক্রের অনসন্ধান করা সরকারের দায়িত্ব, দালাল চক্র কাপুরুষতা বাংলার নারীদের কলংকিত করছে।
আগুনে পুড়ে মরবে জেনেও পতঙ্গের আগুনে ঝাপ দেওয়ার স্বাদ মিটেনা।
অনেক তথ্য যা জানতাম না তা জানা হলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন