মধ্যপ্রাচ্যে কেমন আছি আমরা ( পর্ব -১৫) প্রবাসীদের ঈদ
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ৩০ জুলাই, ২০১৪, ০৫:০৭:০৪ বিকাল
ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। দুনিয়ার মুসলমানের জন্য দুই ঈদ অনেক আনন্দের। দুটি ঈদের মধ্যে ঈদ উল ফিতর বেশি আনন্দের কারণ একটি মাস মহান রাব্বুল আলামিনের হুকুম মুতাবেক সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদ উল ফিতর ।মুসলিম বিশ্ব আনন্দের সাথে পালন করে এই ঈদ কে ।তবে যারা নিজ দেশ থেকে বহু দুরে মানে প্রবাসে তাদের বেলায় ঈদ যেন অন্যরকম। বিশেষ করে যারা জীবনের চলার পথ সুন্দর ও সচ্ছল করতে প্রবাসে পারি জমান তাদের বেলায় ঈদের আনন্দ ও পরিবেশ ভিন্ন আমেজের ।তারপরও ঈদ বলে কথা শত কষ্টের মধ্যে ও ঈদের খুশি টাচ করে প্রবাসীদের মধ্যে খুশিটা হয়ত একটু কম বা বেশি।
বাংলাদেশ থেকে অনেক দূর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত যেখানে প্রায় ১০০ ভাগের জনসংখ্যার ৮ ভাগই বাংলাদেশী । আমরা যারা এখানে আছি আমাদেরও ঈদ পালন করা হয় তবে তা এক ভিন্ন মাত্রা আনন্দের ,মানে -কিছু কষ্ট ,কিছু আনন্দ ,কিছু গ্লানি , কিছু তৃপ্তি , কিছু অতৃপ্তি নিয়ে আমাদেরকে ঈদ উদযাপন করতে হয় ।তার সবচেয়ে বড় কারণ পাশে নেই মা বাবা আত্বীয় স্বজন নেই বাড়ির পাশের ঈদগাহ অবস্য বাড়ির পাশের ঈদগাহ থেকে আরো বড় ও মধুর কন্ঠের নামাজের সুর রয়েছে তারপরও যেন অতৃপ্তি ।নেই মায়ের হাত দিয়ে মুখে টেলিয়ে দেওয়া সেমাই কিংবা অন্য কিছু ।নেই বাড়ির আনন্দের মাতহারা শিশুদের চিকন কন্ঠের চিত্কার । নেই বিবাহতদের স্ত্রীর নরম হাতের গরম সন্দেশ ।আমিরাতে অনেক উন্নত মানের মিষ্টি খেলেও ওই তৃপ্তি পান না বলে বিবাহিত প্রবাসীরা বলেন । অনুপস্তিত থাকে সেলামি দেওয়া নেওয়ার বিষয়। নেই নতুন জামা ক্রয়ের উত্সাহ তারপরও ক্রয় করতে হয় দেশ থেকে মা বাবা বা দাদা দাদির কিংবা স্ত্রীর অনুরুধে ।কিন্তু এই ঈদ পোশাকে যে মজা কতটুকু লাগে তা টের পাওয়া যায় ঈদের দিন গায়ে দেওয়ার সময় ।
ঈদের দু চার ঘন্টা আগ মুহুর্তে চাকরি থেকে এসে গোসল শেষে দু একজন বন্ধুদের সাথে বা একা ঈদের নামাজে যাওয়া আর দেশে বাবার সাথে ,দাদার সাথে কিংবা সন্তানের হাতে ধরে যাওয়া এক নয় এক হতে পারে না ।নামাজ শেষে কোলাকুলি রীতি সকল দেশে রয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে মধ্যপ্রাচ্যে ঈদের নামাজ শেষে এই কোলাকুলি বা আরবদের চুমু খাওয়া অনেক তৃপ্তির ও ভাতৃত্বের এক সনদ ও বটে ।নামাজ শেষে দেশে ফোন যখন করা হয় তখন প্রবাসীরা চোখের পানি সামলাতে পারেনা আবার অনেক সময় কষ্ট করে চোখের পানি সামলে নেওয়া হয় কিন্তু মনের ভেতর যে কষ্টের বন্যা চলে তা থামাবে কে ?
বিকেল বেলা কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে নানান শহর থেকে আসা পরিচিত আত্বীয় স্বজনের সাথে দেখা করা হলো প্রবাসীর সবচেয়ে বড় ঈদের আনন্দ । ঈদ বলে কথা তাই শত কষ্টের মধ্যে দুই ঈদে প্রবাসীরা নিজ জায়গায় থেকে অনেক আনন্দ করে তবে আনন্দের মাত্রা দেশ থেকে অনেকাংশ কম। ঈদে উপলক্ষে কাজের ছুটি থাকে অনেকের আবার অনেকের ঈদের দিন বিকেলেই কাজে যেতে হয় তারমধ্যেই প্রবাসীদের ঈদের আমেজ পরিমাপ করা যায় । সংস্কৃতি ও পরিবেশের পার্থক্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে প্রবাসীরা নিজেকে সামাল দিতে পারেন না আবার অনেকে নিজেকে সহজেই মানিয়ে নেন। প্রবাস জীবনে এই মানিয়ে নেওয়ার মধ্যেই রয়েছে প্রবাসে বসবাসের নিজের অবস্থান।
বিষয়: বিবিধ
২০৩৩ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুব সুন্দর বলেছেন-
ঈদ তো নিজের কাছেই
নিজে যদি অন্যের জন্য আনন্দের কারণ হতে পারি সেটাই বড় ঈদ
এখানে ঈদের নামাজ পড়ে এসে রুমের সবাই ঘুম দিয়ে জোহরের নামাযের সময় কেউ উঠে আবার কেউ ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয় ।
খুব বোরংি লাগে।
প্রবাসিরা আসলে মোমবাতির মত।নিজে পুড়ে আলোদেন সবাইকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন