মধ্যপ্রাচ্যে কেমন আছি আমরা ( পর্ব -৭ ) প্রবাসে আসার পর সব পারেন
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ৩০ এপ্রিল, ২০১৪, ০৭:২৪:৫৪ সন্ধ্যা
দেশে থাকাকালীন ফালতু সময় নষ্ট করেছেন অনেক প্রবাসী । যাত্রা আর নৃত্য দেখে সময় কাটিয়েছেন, বাউল গানে নিজের মনকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন ,মাজারে মাজারে নর্তকী নিয়ে বেহুস থেকেছেন । এখন অনেকেই প্রবাসে এসে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। এখন সব জানতা বলে নিজেকে জাহির করেন কথার মাধ্যমে।
আমার সাথে কথা বলেছেন এরকম অনেকেই আছেন যারা উপরের কার্যকলাপে অনেক অগ্রসর ছিলেন। এরকম একজন বাংলাদেশী যিনি আমাকে তার জীবনের ইতিহাস বলছিলেন, তখন তিনি মাত্র তিন দিনের পরিচিত। তবে তার কথা বলার ভাব দেখে মনে হয়েছে আমি উনার আপন কেউ । বাস্তবেই তাই, প্রবাসে আমরা সবাই একে অন্যের অনেক আপন।
তিনি যা বলতে চাচ্ছিলেন আমি তার জন্য তৈরী ছিলাম না, কারণ আমি কখনো মনে করিনি তিনি এরকম বলবেন। কিন্তু তিনি বলেই দিলেন। তার প্রবাস জীবনের মাত্র তিন মাস হয়েছিল, কিন্তু অনেক চঞ্চল, দেখলে কেউ বুঝতোই না যে তিনি নতুন প্রবাসী। তিনি যা বলেছিলেন, তার মূল কথা হলো তিনি দেশে যখন ছিলেন তখন সময় কে সময় মনে করেন নি, কাজ কে অবহেলা করেছেন।
তার ভাষ্য মোতাবেক তিনি দেশে মাজারে মাজারে থাকতেন দিন রাত।নামাজ আদায় শুক্রবারী নামাজির ন্যায় ।অর্থাৎ শুধু জুমার নামাজ আদায় করতেন। যেখানে যাত্রা গানের আয়োজন করা হত সেখানে টাকার বিনিময়ে নিজে অথিতি হিসেবে যেতেন, নর্তকীর পাশে বসতেন । বাবা প্রবাসে থাকতেন, বড় ভাই ও একজন প্রবাসী ছিলেন। উনারা টাকা পাঠাতেন আর তিনি ফুর্তি করে জীবন পার করতেন। বাবা ভাইয়ের টাকায় বিয়ে ও করেছেন, বিয়ের পর প্রবাসে আসতে হয়েছে। কিন্তু প্রবাসে এসে কাজ ভালো, বেতন ও মোটামোটি ভালো, তবে মনের বেতর শান্তি নেই ।কারণ তার দেশের বাড়িতে টাকা পয়সার কারণে অনেক প্রভাব ছিল। তিনি বলেন যদি বাবা ভাইয়ের টাকা দিয়ে আমি ব্যাবসা বানিজ্য করতাম ,কৃষি কাজে টাকা ব্যয় করতাম, নতুবা নিজে একটি চাকরি করতাম, তাহলে আজ এখানে আসতে হতনা আপনজন ছেড়ে। তিনি কথা বলেই চলছেন ,নতুন যারা প্রবাসে আসে তারা একটু বেশি কথা বলে এটা স্বাভাবিক।
আমি তার কথা শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে বললাম, দেখেন ভাই যা হবার হয়ে গেছে এখন আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে কাজ করে যান ঈমানের সাথে, দেখবেন পর্যাপ্ত পরিমান টাকা না আসলেও শান্তি পাবেন যথেষ্ট ।
প্রবাসে নতুন আসলে বেশি কথা বলে অনেকে। তারা অনেক কিছু বলে চাকরি করা শিখে ফেলে , ব্যাবসায়ী হয়ে যায় , দেশে থাকলে এটা করতাম ওটা করতাম যা মুখ দিয়ে আসে তা বলে কিন্তু বাস্তবে সব ফাঁকা। তবে দেশে বেকার সময় নষ্ট না করে সময়ের মুল্য দেওয়া জরুরি। পরিবারকে সাহায্য করার লক্ষে নিজেকে কাজে লাগাতেই হবে। কাজে থাকলে অনেক অপরাধ মূলক কার্যকলাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যাবে, সমাজের জন্য বুঝা না হয়ে সম্পদ হওয়া যাবে ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৪ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
আমি নিজে কি করে বদলিলাম তা থাকছে আগামী পর্বে
দ্বিতীয়ত প্রবাসীদের টাকায় কিছু একটা করার চেয়ে খরচ করাতেই বেশী মজা।
তৃতীয়ত প্রবাসীদের টাকা নিজ হাতে কাজে লাগানোর সুযোগ থাকেনা বলে এমন হয়।
সর্বোপরী বিদেশে পয়সা সবাই কামাতে পারেনা। যারা সাইন করেছে এদের ৮০ পাসেন্ট চোর বাটপার। সময় হলে বলব।
প্রবাসীদের প্রায় সবারই দেশে ৫ তালা জমিদারী, ৬ তালা পুকুর, ৭ তালা গোয়াল ঘর আছে বা ছিল।
ভাগ্যক্রমে আজ প্রবাসী।(মাফ চাইছি সবার কাছেই কারন,বিদেশে গত ত্রিশ বছর প্রায় ৯৫% লোকের কাছেই আমি এমন কথাই শুনেছি।)
আমার কিন্তু এসব কিছুই নাই, থাকলে আর বিদেশ করা লাগতো না!
তবে প্রবাসীদের অনেকের চরিত্রের অনেক পরিবর্তন হয়, অনেকের অনেক কাজের ট্রেনিং ও হয়ে যায়৷ যার কিছু দেশে এসে কিছু একটা কাজ করতে লজ্জ্বা করেনা৷ আমার পরিচিত, ঘৃরে বেড়ানো এক পোলা মালয়এশিয়ায় দু বছর থেকে এসে নিজে ফলের চাষ, মাছের চাষ করছে৷ আর একজন দেশে বাজারের ব্যাগ হাতে নিত না সৌদী ফেরত হয়ে নিজে গ্রীলের দোকান দিয়েছে, নিজেই কাজ করে৷
যাক আপনার বাস্তবতার মানুসকতা সম্পন্ন পোষ্টের জন্য াশেষ ধন্যবাদ
খাটি কথা বলেছেন ভাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন