আমিরাতে ভিসা বন্ধের কারণ
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:২০:০৭ রাত
বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়ের অন্যতম উত্স সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশীদের জন্য কর্মসংস্থান বা এমপ্লয়মেন্ট ভিসা প্রায় ২ বছর থেকে বন্ধ রেখেছে। এখন আবার নতুন করে ট্যুরিস্ট বা ভ্রমণ ভিসা ও সব ধরনের বাণিজ্যিক ভিসা প্রদান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। ভিসা বন্ধ রাখার অন্যতম তিনটি কারণ হতে পারে প্রথমত বিদেশি আগ্রাসনের কারণে ও ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর ভেন্যু নির্বাচনের বাংলাদেশ দুবাইকে ভোট না দেয়া এবং অবৈধভাবে অবস্থানকারী কিছু বাংলাদেশীদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়া।
আমিরাতে বাংলাদেশী শ্রমিক বিদেশি আগ্রাসনের শিকার অত্যন্ত কঠিনভাবে। আর সেই বিদেশি চক্র হচ্ছে ভারত। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের পচা, খারাপ ঘৃণ্য ও অপরাধী হিসেবে পরিচিতি করার জন্য আমিরাতে বিদেশি চক্র লেগে আছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি মিডিয়ার প্রায় ৮০ ভাগ কর্মকর্তা ভারতীয় নাগরিক। ভারত বিশ্বের একটি প্রভাবশালী দেশ। দেশটির জনশক্তি পৃথিবীর প্রায় সব দেশে রয়েছে এবং শ্রমিক থেকে শুরু করে বিশাল গুষ্ঠী রয়েছে উচ্চ কর্মস্থলে। সঙ্গে আছে তাদের শক্ত কূটনীতি।
সেই সুবাদে তারা তাদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অন্যতম ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কিন্তু তাদের ভাব-মূর্তি অতি উজ্জ্বল করতে গিয়ে অন্য দেশের ভাব-মূর্তি খারাপ করা অন্যায় বা ঠিক নয়। কিন্তু ভারতের কূটনৈতিক ও বিভিন্ন সংস্থার লোক তা করে যাচ্ছে কৌশলে। ভিসা বন্ধ থাকা অবস্থায়ও বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী শ্রমিক প্রচুর। আমিরাতের শ্রমিকদের প্রেরিত রেমিট্যান্স বাংলাদেশ সরকারকে ঠিকে থাকতে সহায়তা করতেছে । কিন্তু প্রায় দুই বছর থেকে ভিসা বন্ধ থাকায় রেমিট্যান্স অনেক কমে গেছে। এদিকে শুধু শ্রমিক বেশি হওয়ার সুবাদে আমিরাতে ভারতের নাগরিক দ্বারা পরিচালিত ইংরেজি মিডিয়া বাংলাদেশীদের ভাব-মূর্তি নষ্টের হীন কাজ করতেছে। বাংলাদেশী নাগরিক যদি রাস্তার মধ্যে থুথু ফেলে তা বড় করে ইংরেজি পত্রিকার মধ্যে প্রকাশ হয় আবার ভারতীয়রা মদ খেয়ে রাস্তায় চলাফেরা করলে সেটা কিছুই না। পুলিশের হাতে যদি বাংলাদেশী একজন পতিতাবৃত্তির দালালির অপরাধে গ্রেফতার হয় তাহলে পত্রিকার শিরোনাম হয় এক বাংলাদেশী পতিতাবৃত্তির দালাল গ্রেফতার। আর যদি ভারতীয় নাগরিক এই একই অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় তাহলে পত্রিকার শিরোনাম হয় এক এশিয়ান পতিতাবৃত্তির দালালির অপরাধে গ্রেফতার। পাশাপাশি ভারতীয়দের শক্ত কূটনীতির তত্পরতায় তাদের দেশের শ্রমিক ও উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের ভাব-মূর্তি উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। ভারতীয় কূটনৈতিকদের তত্পরতার প্রভাব আমাদের বাংলাদেশীদের ভিসা বন্ধের একটা কারণ। আমিরাতের জাতীয় অনুষ্ঠান ও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানে ভারতীয়দের সরব উপস্থিতি সম্পর্ক তাদের অন্যতম কূটনৈতিক বিজয়।
অন্যদিকে আমাদের কূটনৈতিক তত্পরতা শুধু কাগজে-কলমে, বাস্তবে ঘোড়ার ডিম। অবশ্য এটাও ঠিক বর্তমানে আমিরাতে বাংলাদেশী অবৈধ শ্রমিকের সংখা বেশি। আমিরাতে এখন আইন অনেক শক্ত থাকার ফলে অবৈধ শ্রমিকদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে কিছুসংখ্যক অবৈধ বাংলাদেশী অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে, তারা পতিতাবৃত্তির দালালি, পর্নো সিডি বিক্রি, জুয়া খেলাসহ নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িত এবং প্রায়ই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে । তাদের গ্রেফতারের ফলে আমিরাতে সব বাংলাদেশী নাগরিকের ইমেজ সঙ্কটের প্রায় মুখোমুখি।
বিশ্বের সর্ববৃহত্ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনীর আয়োজক হওয়ার প্রতিযোগিতায় ছিল বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহর । বাংলাদেশ নিয়ে আশাবাদী ছিল দুবাই। তারা মনে করেছিল বাংলাদেশ তাদের ভোট দেবেই। কিন্তু না বাংলাদেশের সরকার রাশিয়াকে ভোট দেয়। সেই সূত্রে বাংলাদেশকে আমিরাত সরকার অন্য চোখে দেখার কারণ হতে পারে, আর তা হওয়ারও কথা। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে ভারতের কূটনৈতিকরা ।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ঠিকে থাকতে বিদেশি আগ্রাসনের শিকার হওয়া অবাস্তব কিছু না । কিন্তু এর মোকাবেলা করতে হলে প্রয়োজন শক্তিশালী কূটনীতি, সত্, চরিত্রবান ও দক্ষ শ্রমিক তৈরি এবং দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন করে বিদেশে উচ্চপদস্থ চাকরি ।
বিষয়: বিবিধ
২৬১৯ বার পঠিত, ৮৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মারিয়া
পরীবানু
মরুর মুসাফির
পরীবানু ,সততার আলো
অশ্বথমা
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
পরমা ,নীলমণীলতা
বিলকিস লায়লা
দস্তার
রুপবান
মুক্তিযুদ্ধ ৭১
দ্রাবীড় বাঙাল
লেয়লা ইসলাম
বিলকিস
বাংলা ৭১
ভিক্টোরিয়া
হেলেনা
পল্লব প্রভাতে
খালেদ
রুশো তামজিদ
বারাংগনা
মধুবালা
সখি
ফয়সাল১
মাঝি-মাল্লা, ,
লায়লার
লায়লা০০৭
রাতুল দাস
চকো চকো
সায়েদ-রিয়াদ
বিভ্রান্ত নাবিক
ফাজিল
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক
মুক্তিযুদ্ধ ৭২
দ্রাবীড় বাঙাল
পিচ্চি পোলা
কাওসাইন হক
চাষা
jahed_ullah
নীরু
সাদা মন
সাদা মন
চোথাবাজ
আমি বিপ্লবী
সততার আলো সকাল সন্ধ্যা
এই নেরিকুত্তার এত নিক
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
মানব জমিনের এই রিপোটটি আমার খুব ভাল লেগেছে.শত ভাগ সত্য কথা তুলে ধরতে পেরেছে। কিন্ত আমাদের প্রবাসী সাংগাতিকরা এতে নাখোশ হয়েছে..........
http://www.bdreport24.com/archives/46404
http://www.banglapost24.com/archives/263161
http://www.munshiganjtimes.com/মাসিক-বিক্রমপুরের-লেখক-স/
গলা ফাটিয়ে যাই বলি না কেন হাসিনার অস্ত্রের মুখে সেই গলা দিয়ে রক্ত বেড়িয়ে আসছে। অস্ত্রের মোকাবেলা গলা দিয়ে হয় না !!
সাড়া বিশ্বের মুসলিমদের কি রোগ হয়েছে যে ওপর মুসলিমদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়ায় না। সৌদি, দুবাই তারা সবাই ভাল করে জানে যে হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব কারী নয়। কেন তারা বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের মজলুম জনতার সুরে সুর মিলিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান নিচ্ছে না ??
যা ঘটবার তা ঘটবেই, মানুষ সৃষ্ট একটি দুর্ভিক্ষ যে ভূখণ্ডে ঘটতে যাচ্ছে তার সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে !!
আপনাকে ধন্যবাদ।
তবে ....
একটাই কথা আছে বাংলাতে
মুখ আর বুক বলে এক সাথে
সে হল .... বন্ধু .... বন্ধু আমার , বন্ধু আমার
ধন্যবাদ আপনাকে।
হাত কিন্তু ভাইজ্ঞা দিমু। আমার থেকে ভালো লেখার চেষ্টা আর করবেনবা, মাইন্ড ইট-
চূক চূক
আমিরাতে ভিসা প্রায় বন্ধ, সুরাহার উদ্যোগ নেই
কর্মসংস্থান, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভিসার পর এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ট্রানজিট ভিসাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে দেশটিতে ট্রানজিট ভিসা পাচ্ছেন না বাংলাদেশের নাগরিকেরা। শুধু বিশেষ পরিস্থিতিতে শর্ত সাপেক্ষে সীমিত আকারে ভিসা দেওয়া হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো এর জন্য সে দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়াকে অন্যতম কারণ বলে দাবি করছে। আর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র এবং জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে যুক্তরা মনে করছে, ওয়ার্ল্ড এক্সপো-২০২০-এর ভেন্যু হিসেবে দুবাইকে সমর্থন দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এই সমস্যার একটি বড় কারণ। ওয়ার্ল্ড এক্সপোর আয়োজক হিসেবে শুরুতে রাশিয়াকে সমর্থন দিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও দ্বিতীয় দফায় ভোটাভুটির সময় বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দুবাইকে ভোট দেয়। এতে কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর বিষয়টি সরকার রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে জোরালো কূটনৈতিক উদ্যোগ দরকার ছিল, তাও যথাসময়ে নেওয়া হয়নি।
এর কারণ, গত জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সংঘাতময় রাজনীতিই সরকারের সব মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ছিল। ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানি ফের জোরদারের বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে উপেক্ষিত থেকেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতে ২০১২ সালের আগস্টে বাংলাদেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান ভিসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। গত বছরের নভেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের ভিসা। বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধু ঢাকার দূতাবাসের মাধ্যমে শর্ত সাপেক্ষে এখন ভিসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে কর্মসংস্থান ভিসা বন্ধ থাকলেও দেশটিতে বাংলাদেশের নারীদের কর্মসংস্থান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা বন্ধ হয়ে গেলেও তা খোলার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো উদ্যোগ নেই।
ঢাকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, জনশক্তির গুরুত্বপূর্ণ বাজার আমিরাতে সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার নাগরিকদের অপরাধপ্রবণতা কমাতে সচেষ্ট রয়েছে। এ ব্যাপারে আবুধাবি কর্তৃপক্ষের আস্থা অর্জন করতে পারলে ভিসা উন্মুক্ত হওয়ার বিষয়টি সহজতর হবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আমিরাতে বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে অপরাধমূলক তৎপরতার ওপরের সারিতেই রয়েছেন বাংলাদেশিরা। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি নৃশংস খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিকেরা। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে পতিতালয় ব্যবসা চালানো, গৃহপরিচারিকাদের জোর করে যৌন পেশায় বাধ্য করা, মানব পাচার, চুরি-ডাকাতি, নিষিদ্ধ পণ্যের চোরাচালান, মারামারি ও জুয়াসহ নানা ধরনের অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সে দেশে ফাঁসির অপেক্ষায় আছেন ১৯ জন বাংলাদেশি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন ১০৪ জন। আট শতাধিক বাংলাদেশি বিভিন্ন অপরাধে নানা মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতার প্রস্তাব করেছে আমিরাত। দেশটি সাজা পাওয়া আসামি হস্তান্তর এবং নিরাপত্তা ও অপরাধমূলক তৎপরতার তথ্য বিনিময়ে চুক্তি করারও প্রস্তাব দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির দ্বিতীয় প্রধান বাজার ছিল আমিরাত। প্রতিবছর দেশটিতে যাচ্ছিলেন দুই লাখ বাংলাদেশি। তবে ভিসা বন্ধ হওয়ার পর এ বাজার হারাতে বসেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালেও দুই লাখ ১৫ হাজার বাংলাদেশি সে দেশে গেছেন। আর ২০১৩ সালে গেছেন মাত্র ১৪ হাজার ২৪১ জন।
https://www.facebook.com/profile.php?id=100001767325225
এবার জয় বাংলা বলে আগে বারো।
আওয়ামী জানোয়ার গুলো বাংলাদেশকে জাহান্নামের চৌ রাস্তায় নিয়ে গেছে
মন্তব্য করতে লগইন করুন