প্রথম বিয়ে বাড়ি একা যাওয়ার গল্প
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৫৪:৫৯ রাত
মা ,বাবা ছাড়া আমি কোনো আত্বীয়ের বাড়ি যেতাম না। আমি তখন ৭ম শ্রেণীতে পড়ি ,তখন আমার ভালো বন্ধুদের মধ্যে এক বন্ধুর খালার বিয়ের দাওয়াত পেলাম। সেই বন্ধুটির নাম জাহাঙ্গীর আমরা একই শ্রেণীতে পড়তাম তার একটি বড় বোন ও আমাদের সাথে ছিল নাম দিলরুবা। বন্ধু এখন আফ্রিকা থাকে এবং দিলরুবা আপুর বিয়ে হয়েছে গত ৫ মাস আগে ।দিলরুবা জাহাঙ্গীরের এক বছরের বড় তাই উনাকে আমি আপু বলে ডাকতাম। আমার বন্ধু ও তার বড় বোন মামা বাড়ি থেকে লেখা পড়া করেছে। ওরা ভাই বোন অনেক মেধাবী ছিল। ক্লাস ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছিল জাহাঙ্গীর।তাদের লেখা পড়ায় ভালো হওয়ার কারণ ছিল ওদের খালা মনির পরিশ্রম।
তাদের সেই খালা মনির বিয়েতে আমি প্রথম মা বাবা ছাড়া কারো বিয়েতে যাই। এক সপ্তাহ আগে থেকে প্রতিদিন জাহাঙ্গীর ও দিলরুবা আমাকে বিয়েতে যাওয়ার জন্য অনুরুধ করতে থাকে।আমি আমার মাকে বিয়েতে যাওয়ার আগ্রহ জানালাম ,মা কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। কারণ আমার বাবা প্রবাসে তাই চাচা আমার গার্জেন্ট হিসেবে আছেন। আমি মা ও আমার মরহুম দাদা দাদিকে অনেক অনুরুধ করি অনুমতি দেওয়ার জন্য। অবশেষে মা অনুমতি দিলেন দাদির কথায়। চাচা সেই সময় সিলেটের বাহিরে ছিলেন সম্ববত ঢাকায় ছিলেন।
বিয়ের আগের দিন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রেজান নামের বন্ধু বিকেল চারটার সময় আমার বাড়ি হাজির মা রেজানকে দেখে খুশি হলেন কারণ মা এবার বুঝতে পারলেন আমি একা নয়। রেজান ও আমি বের হয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। জাহাঙ্গীরের মামা বাড়ি কুশিয়ারা নদীর ওপারে।আমরা একটি নৌকা করে পৌছে গেলাম জাহাঙ্গীরের মামা বাড়ি ,জাহাঙ্গীর ও দিলরুবা আমাদের দেখে অনেক খুশি হলো। আমাদের একটি ঘরে নিয়ে গেল জাহাঙ্গীর সেই ঘরে গিয়ে অবাক হলাম আর লজ্জায় মুখ লুকানোর পায়তারা করতে লাগলাম। কারণ ছিল সেই ঘরে গিয়ে দেখি আমাদের একই শ্রেনীর কয়েকটা মেয়ে বন্ধু বসে গল্প করতেছে। জাহাঙ্গীরের মা ও নানী এসে আমাদের সাথে কথা বললেন তখন ভালো লাগলো এর আগ পর্যন্ত আমি আনমনা ছিলাম। সন্ধার পর সেই গ্রামের আরো তিন বন্ধু এসে আমাদের সাথে যুগ দিল এখন আমরা ছেলে বন্ধু ৭ জন ও মেয়ে বন্ধু ৪ জন হলাম ।রাত ১০ টার দিকে খাবার খেলাম খাবার খেয়ে আমাদেরকে একটি ঘরে বসে গল্প করার জন্য নিয়ে গেলেন যার বিয়ে হবে সেই খালা মনি। একে একে সবাই বসলেন কেউ খাটে কেউ চেয়ারে ,আমার মনে পরে ডান দিকে থেকে খাটে বসেছিল ,সামিয়া ,লিপি ,রেজান ,জুনেদ চেয়ারে বসেছিলাম আমি জাহাঙ্গীর , দিলরুবা , হালিমা , হুমায়ুন রশিদ রাজু ,আমি শাহীন ,হোসাইন ও জাহেদ আমাদের সবার টিক সামনে একটি টেবিল ছিল সেই টেবিলের পাশের চেয়ারে বসলেন খালা মনি।গল্প করে ২ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেল। জাহাঙ্গীরের এক মামা প্রতিবন্ধী উনাকে আমাদের সামনে নিয়ে আসা হলো প্রথমে আমি ভয় পেয়েছিলাম তবে পরে অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম উনার। উনি যে ঘরে থাকতেন আমরা কিন্তু সেই ঘরে বসা ছিলাম। খাটের উপর উনার একটা সার্ট পরা ছিল আমি সেই সার্ট হাত দিয়ে নারাচারা করতেছি উনি দেখেছেন তখন কিছুই বলেন নি। কিছুক্ষণ পর আমি ঘর থেকে বের হয়ে বারন্দায় হাটতেছি একা একা উনি আমাকে দেখে শক্ত একটি মাটির ঢিল দিয়ে আমাকে লক্ষ্য করে মারলেন। ঢিল টি আমার মাথায় এসে পরেছে তবে ব্যথা পাইনি। উনি নিজেই আমাকে এসে বললেন ব্যথা পেয়েছ আমি জবাব দিলাম না। আমি কিন্তু একা তাই ভয় পাচ্ছি একটু পর ও জাহাঙ্গীর আসলো আমার কাছে এসে ঘরে নিয়ে গেল।
রাতে আমি ও রেজান জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ঘুমালাম না আমরা চলে গেলাম রাজুর বাড়িতে। রাজুর বাড়িতে যখন গেলাম তখন রাত ১২ টা হয়ে গেছে তাই আন্টি ঘুমাচ্ছেন তাই উনার সাথে রাতে দেখা হয় নাই। সকালে আন্টি এসে রেজান ও আমার সাথে কথা বললেন আমাদের নাস্তা দিলেন।আমরা আন্টির হাতের নাস্তা খেয়ে রাজুর বাড়ি থেকে চলে এলাম জাহাঙ্গীরের বাড়িতে। সেখান থেকে বিয়ের সেন্টারে গেলাম মায়ের দেওয়া টাকা দিয়ে আমি একটি বই উপহার কিনলাম খালা মনিকে দেওয়ার জন্য বইয়ের নাম মনে নেই তবে উপন্যাস ছিল। খাবার খেয়ে সেন্টারে ফোটো আমাদের সকল বন্ধুদের ছবি উঠালেন জাহাঙ্গীরের এক মামা। খালা মনি বিদায় হলেন আমরা ও চলে এলাম নিজ নিজ বাড়ি।
বিষয়: বিয়ের গল্প
২৭৬৩৬ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তয়, আমার বাড়ি সুরমা নদীর তীরে।
আমারও অনেক অনেক অভিজ্ঞতা আছে বিয়ে নিয়ে।
আর সবচেয়ে ভালো হলো করা!
আরেকটা কথা হলো আপনার -
ভুতে ধরেনাই আপনাকে?
মন্তব্যের জন্ন্য ধন্যবাদ
আপনার অগ্রিম দাওয়াত থাকলো
https://www.facebook.com/profile.php?id=100001767325225
মন্তব্য করতে লগইন করুন